ক্রোয়েশিয়ায় থিতু হতে চান দালিচ

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
জালাতকো দালিচ
ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে সফল কোচের প্রসঙ্গ উঠলে এখন জালাতকো দালিচের কথাই বলবে সবাই। তার অধীনেই এবার ক্রোয়াটরা বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে, বৈশ্বিক আসরে যা তাদের সবোর্চ্চ অজর্ন। ক্রোয়েশিয়াজুড়ে সবার মুখে মুখে এখন দালিচের প্রশংসা। ‘মিশন রাশিয়া’ শেষে দেশে ফেরার পর শিষ্যদের সঙ্গে উষ্ণ সংবধর্না দেয়া হয়েছে তাকেও। অবশ্য আগামী দিনেও দালিচ দলের কোচ হিসেবে থাকবেন কিনা, এ বিষয়ে এখন পযর্ন্ত কোনো কথা শোনা যায়নি ক্রোয়েশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের কাছ থেকে। তবে ফেডারেশন চাইলে, মদ্রিচ-রাকিতিচদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে প্রস্তুত তিনি; বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন দালিচ। বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র ৯ মাস আগে দালিচকে কোচ বানায় ক্রোয়েশিয়া। সঙ্গে শতর্ জুড়ে দেয়া হয়, ক্রোয়েশিয়া মূলপবের্ উত্তীণর্ হলে তবেই চাকরি টিকবে তার! দালিচের জন্য ওটা ছিল কঠিন এক চ্যালেঞ্জ। কারণ খাদের কিনারে থাকা ক্রোয়েশিয়াকে বিশ্বকাপের টিকিট এনে দিতে মাত্র একটি ম্যাচ হাতে পেয়েছিলেন তিনি। তাতেই বাজিমাত। ইউক্রেনের বিপক্ষে ওই ম্যাচটি জিতে নিজেদের গ্রæপে দ্বিতীয় হয়ে প্লে-অফ খেলার সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। এরপর দুই লেগের লড়াইয়ে গ্রিসকে হারিয়ে জায়গা করে নেয় রাশিয়া বিশ্বকাপে। পরের গল্পটা তো সবার জানা। কোনোমতে মূলপবের্ খেলার সুযোগ পাওয়া ক্রোয়েশিয়া বিস্ময় উপহার দিয়ে রানারআপ হওয়ার গৌরব অজর্ন করেছে। কোচ দালিচের এমন কারিশমা অবশ্য নতুন কিছু নয়। ২০১৬ সালে আরব আমিরাতের ক্লাব ‘আল এইন’কে তুলেছিলেন এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। ওই সাফল্য দেখেই ৫১ বছর বয়সী দালিচকে ২০১৭ সালের অক্টোবরে আন্তে ক্যাসিচের জায়গায় বেছে নেয় ক্রোয়েশিয়া। এরপর একের পর এক চমক। ক্রোয়েশিয়ার সাফল্যের এই কারিগরের দিকে ইউরোপের অনেক নামিদামি ক্লাবের চোখ পড়েছে। তবে জাতীয় দলের সঙ্গে ২০২০ সালের জুলাই পযর্ন্ত চুক্তিবদ্ধ তিনি। দালিচ নিজেও ক্রোয়েশিয়াতে থিতু হওয়ার কথা ভাবছেন। জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে বড় কোনো দল বা ক্লাবের হয়ে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ এলেও নিজের দেশকেই সবকিছুর ওপর প্রাধান্য দেবেন তিনি, ‘আমি ব্রাজিল বা বাসেের্লানার কোচ হতে পারি; তবে ক্রোয়েশিয়া জাতীয় দলের দায়িত্ব পালন করা আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় কাজ।’ ক্রোয়েশিয়াকে ফাইনালে তুলেই নিজেকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছেন দালিচ। তবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে না পারার দুঃখটা এখনো ভুলতে পারেননি এই কোচ। লুঝনিকির ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ৪-২ গোলে হেরে দেশে ফেরার পর আক্ষেপভরা কণ্ঠেই বললেন, ‘আমাদের দুঃখটা এখনও রয়ে গেছে। কারণ আমরা ট্রফি জিততে পারিনি।’ ফাইনাল খেলাটাও যে বড় প্রাপ্তি, দালিচ সেটা বুঝিয়ে দিতে চাইলেন এভাবে, ‘বিশ্বকাপ শুরুর আগে যদি আমাকে কেউ শুধু ফাইনাল খেলার প্রস্তাব দিত, আমরা সবাই সেটা গ্রহণ করতাম।’ আসলে এই ক্রোয়েশিয়া দল ফাইনাল খেলবে, বেশিরভাগ ক্রোয়াটের কাছেও বিষয়টা অপ্রত্যাশিত ছিল। রাশিয়া বিশ্বকাপে দালিচ আর তার শিষ্যরা এককথায় প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছেন। এরপরও কি দালিচকে ছেড়ে দেবে ক্রোয়েশিয়া ফুটবল ফেডারেশন?