বিজয়ের হ্যাটট্রিক সেঞ্চুরি, আবাহনীর হার

প্রকাশ | ২৩ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
আগের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে রেকর্ডের হাতছানি দিয়েছিলেন। ফতুলস্নায় আবাহনীর বিপক্ষে শুক্রবারের ম্যাচটা এনামুল হক বিজয়ের জন্য হয়ে এলো সেটি ছোঁয়ার উপলক্ষ। মাশরাফিদের বিপক্ষে শতক হাঁকিয়ে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে টানা তিন সেঞ্চুরির অনন্য রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান! লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে এটি এনামুলের ১২তম সেঞ্চুরি। আগের দুই ম্যাচে যথাক্রমে লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ আর শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন। রূপগঞ্জের বিপক্ষে ১০০ রানে অপরাজিত ছিলেন, শেখ জামালের বিপক্ষে করেছিলেন ১০২। এদিনও ১০২ রানে ফিরেছেন বিজয়। সেই সংগ্রহ দিয়েই আবাহনীকে হারাল প্রাইম ব্যাংক। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে টানা চার ম্যাচ জিতে আকাশে উড়তে থাকা আকাশি-নীলদের মাটিতে নামিয়ে প্রথম হারের স্বাদ দিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। দুই ইনিংস মিলিয়ে রান উঠেছে ৫৮৮। প্রথমে ব্যাট করে ৩০২ রান তুলেছিল প্রাইমরা। সেটা তাড়া করতে গিয়ে ১৬ রান দূরে থামে আবাহনীর ইনিংস। এদিকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শেষ বলের ছক্কায় শেখ জামাল বাজিমাত করেছে। রোমাঞ্চকর ম্যাচে মোহামেডানের বিপক্ষে শেষঅবধি জিতেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। দুই উইকেটে জেতা ম্যাচে শেখ জামালের নায়ক মোহাম্মদ এনামুল হক। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে টানা তিন সেঞ্চুরির আগের কীর্তিটি মোহাম্মদ আশরাফুলের। এনামুলের আগে ডিপিএলের গত মৌসুমে লিগ পর্বে মোহামেডান স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে ১২৭ রান করেছিলেন কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের আশরাফুল। পরে রেলিগেশন লিগে অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে অপরাজিত ১০৩ ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ১৩৭ রান করে টানা তিন সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। এবার সেই কীর্তিতে নাম লেখালেন এনামুল হক বিজয়। শুক্রবার নাজমুল ইসলাম অপুর বলে এলবিডবিস্নউ হওয়ার আগে ১২৮ বলে ১০২ রান করে ফেরেন এনামুল। ৫ চারের পাশাপাশি দুটি ছক্কার মারও ছিল তার ইনিংসে। অন্যদিকে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন প্রাইমের ভারতীয় ব্যাটসম্যান অভিমনু্য ঈশ্বরণ। আগের ম্যাচে ১৩৩ রান করার পর সানজামুল ইসলামের বলে এলবির ফাঁদে পড়ার আগে এ ম্যাচে ৮৫ রানে থেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের এ ব্যাটসম্যান। ডিপিএলের পঞ্চম রাউন্ডের এ ম্যাচে আগে ব্যাট করে আবাহনীর বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৩০২ রান করেছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। দুই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস গড়ায় আবাহনীকে কঠিন লক্ষ্যই ছুড়ে দিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। এনামুল আর অভিমনু্যর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর শেষদিকে ৭ চারে ২৭ বলে ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন আরিফুল হক। আবাহনীর বোলাররা এদিন স্বাভাবিকভাবেই ছিলেন খরুচে। সবচেয়ে বেশি ঝড় গেছে রুবেল হোসেনের ওপর দিয়ে ৭ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েছেন জাতীয় দলের এই পেসার। ৫৬ রান দিয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ১০ ওভারে ২ মেডেন দিলেও উইকেটশূন্যই ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। সানজামুল ১০ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। এছাড়াও একটি করে উইকেট নিয়েছেন সৌম্য সরকার, নাজমুল ইসলাম ও মোসাদ্দেক হোসেন। শেরেবাংলায় আগের ম্যাচে ২৯৫ রানের পাহাড়সমান স্কোর নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কাছে ৪ উইকেটে হেরেছিল মোহামেডান। শুক্রবার পঞ্চম রাউন্ডে শেষ বলে গিয়ে হার সাদা-কালোদের। শেখ জামালের বিপক্ষে বিকেএসপিতে ২৪০ রানের পুঁজি নিয়েই জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল মোহামেডান। ২৪১ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শেষ বলে শেখ জামালের দরকার ছিল ৫ রানের। পেসার আলাউদ্দিন বাবুর বলে এনামুল হক ছক্কা হাঁকিয়ে দারুণ এক জয় উপহার দেন নুরুল হাসান সোহানের দলকে। শেখ জামাল জিতে যায় ২ উইকেটে। ১৭ বলে ২টি চার আর ১টি ছক্কায় ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন এনামুল। অনেকেই শেখ জামালের এই জয়ের অন্যতম এই রূপকার জাতীয় দলের সাবেক বাঁহাতি স্পিনার এনামুল জুনিয়র বলে ভাবতে পারেন। সেই এনামুল জুনিয়র হচ্ছেন সিলেটের। আর এই এনামুল খুলনার। মূলত ডানহাতি অফস্পিনিং অলরাউন্ডার তিনি। ওঠানামার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা টান টান উত্তেজনার এই ম্যাচে শেষ ওভারে শেখ জামালের দরকার ছিল ১২ রানের। হাতে ছিল ৩ উইকেট। আলাউদ্দিন বাবুর প্রথম পাঁচ বলে ওঠে ৭ রান। এর মধ্যে তৃতীয় বলে জাতীয় দলের বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল রানআউটও হয়ে যান। কিন্তু শেষ বলে স্ট্রাইক পাওয়া এনামুল ছক্কা হাঁকিয়ে ধানমন্ডির দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।