ফুটবলের উন্নতির জন্যই ভিশন ২০২২

ফুটবলের ডেভেলপম্যান্টের জন্য একটা ভিশন টাগের্ট করতে হবে। ওটার জন্য যত কাজ করা হবে সেটা ফুটবলের পক্ষে যেন যায়। বিশ্বকাপ খেলার মতো যোগ্যতা না হলেও এশিয়ান পযাের্য় প্রতিযোগিতা করার জন্য সাফল্য বা যোগ্যতা আসতে থাকেÑ এটাই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য। -সাইফুল বারী টিটু

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিশ্বকাপ ফুটবলের পদার্ নেমেছে। কিন্তু এখনো বাংলাদেশের বাড়ির ছাদে, মাঠঘাটে, যানবাহনে বিভিন্ন দেশের পতাকা উড়ছে। ফুটবল নিয়ে বাঙালির এই উন্মাদনায় একটা বড় অপ্রাপ্তি নিজেদের দেশের ফুটবলের নিম্নমুখী অবস্থান। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ১৯৪তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছে ২০২২ সালে বিশ্বকাপে খেলার! সেটা কতটা বাস্তবসম্মত? দেশের খ্যতনামা কোচ সাইফুল বারী টিটু বাংলাদেশের এই ‘ভিশন ২০২২’ নিয়ে একান্তে কথা বলেছেন যায়যায়দিনের সঙ্গে। জাতীয় দলকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে। ক্লাব পযাের্য়র ফুটবলারদেরও সবাই একরকম চেনাজানা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ‘ভিশন ২০২২’ কতটা বাস্তবসম্মত মনে হচ্ছে আপনার? টিটু : এটা আসলে আমরা বিশ্বকাপে খেলার জন্য বলাটা হয়ত না। ফুটবলের ডেভেলপম্যান্টের জন্য একটা ভিশন টাগের্ট করতে হবে। ওটার জন্য যত কাজ করা হবে সেটা ফুটবলের পক্ষে যেন যায়। বিশ্বকাপ খেলার মতো যোগ্যতা না হলেও এশিয়ান পযাের্য় প্রতিযোগিতা করার জন্য সাফল্য বা যোগ্যতা আসতে থাকেÑ এটাই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য।’ এটা তো আসলে বলা না যে, আমরা ২০২২ সালে খেলব। আমরাও জানি যে, এটা বাস্তবসম্মত না। আমরা ফুটবলিং নেশন ওই রকম না পৃথিবীর মধ্যে। যেখানে হল্যান্ডের মতো টিম বাদ হয়ে যায়, সুযোগ পায় না বিশ্বকাপে খেলার, সেখানে আমরা তো এটা দাবি করতে পারি না। কিন্তু কথা হচ্ছে, টাগের্টটা ঠিক করলে আমরা যতদূর এগুব, সেটাই আমাদের জন্য লাভ। লক্ষ্যে পেঁৗছতে হলে আমাদের এখন কি কি পদক্ষেপ নেয় উচিৎ বলে আপনি মনে করেন? টিটু: প্রধান হচ্ছে, আমাদের কাঠামো তৈরি করতে হবে। আন্তজাির্তক পযাের্য় ফুটবলে ভালো খেলতে হলে দেশীয় পযাের্য় যে কাঠামোগুলো থাকে, বিশেষ করে ক্লাব লেভেলে, সেটি আমাদের দেশে নেই, কখনো ছিল না। একটা ক্লাবের ওই জায়গায় স্বয়ংসম্পূণর্তা থাকতে হবে। প্রথমত, একটা ক্লাবে সব বয়সের ফুটবলার প্র্যাকটিস করবে, বয়সভিত্তিক দল থেকে সিনিয়র টিম পযর্ন্ত ওইখানেই ফুটবলার তৈরি হবে। দ্বিতীয়ত, অথৈর্নতিক কারণে যেহেতু ক্লাবগুলো স্বয়ংসম্পূণর্ না, ওই ক্ষেত্রে বিকেএসপির মতো সরকারি পযাের্য়র যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে, তাদের ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটা পাটর্নারশীপ করতে হবে। সেটা হতে হবে দীঘের্ময়াদি। ওই বিষয়গুলোর দিকেই নজর রাখতে হবে। নতুন প্রজন্মের আগ্রহটা দেশের ফুটবল থেকে আন্তজাির্তক পযাের্য়ই বেশি। এ ক্ষেত্রে আগামী প্রজন্ম কি করে ফুটবলের উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখবে? টিটু : আমরা যখন বড় হয়েছি, তখন ফুটবল ছিল বাংলাদেশের জনপ্রিয় খেলা। ফুটবলারদের সবাই বাহবা দিচ্ছে, মুখে মুখে নাম। সেটা থেকে আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি ভালো ফুটবলার হওয়া যায় কিনা। এখন ওটা ক্রিকেটে বেশি হচ্ছে। এ কারণে আগে যেমন আমরা নিজেদের স্বাথের্ নিজেরা ট্রেনিং করে নিজেদের তৈরি করতাম, এখন তো সেটা হচ্ছে না। তাই ওই স্ট্রাকচারটা একাডেমির মাধ্যমে করাতে হবে। কারণ, বাচ্চারা তো এখন সেভাবে আগ্রহবোধ করবে না যে, আমাকে ফুটবলার হতে হবে। কিন্তু যারা ফুটবলার হতে আগ্রহী, তাদের জন্য একাডেমিটা খুব গুরুত্বপূণর্।’ আমাদের দেশে স্থানীয় কোচদের মধ্যে আপনারা অনেক ভালো করছেন। তাহলে আপনাদের নিজেদের কি দায়বদ্ধতা নেই আগামী ফুটবল প্রজন্ম তৈরির বিষয়ে? টিটু : ফুটবলের প্রতি ছোটবেলা থেকে যে ভালোবাসা, সে কারণেই আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। বিষয়টি এমন না যে, আমরা কোচিংয়ে ভালো করছি সে জন্য। ফুটবলের মাধ্যমে আমরা পরিচিত সবার কাছে। কিন্তু আমি চাইলেই একা ক্ষেত্রটা তৈরি করতে পারব না। ধরুণ; আমি ফুটবলারদের ফ্রি অনুশীলনই করালাম, কিন্তু এর জন্য যে একটি মাঠ দরকার, সেটা আমাকে কে দেবে? কেউ যদি ওই বিষয়গুলোতে এগিয়ে আসে, লজিস্টিক সাপোটর্ যেটা দেয়ার আমরা দেব, যেভাবেই পারি। নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা করব। এতে কোনো সমস্যা নেই।