মোসাদ্দেকের সেঞ্চুরির ম্যাচে নায়ক নাসির

প্রকাশ | ১১ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) বুধবার বিকেএসপিতে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে আবাহনীর হয়ে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে বিশ্বকাপ দলে থাকার দাবি জোরাল করলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত -বিসিবি
চার বলের মধ্যে তিন উইকেট নিয়ে আবাহনীকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন নাসির হোসেন। তবে লড়াকু এক সেঞ্চুরিতে শিরোপাধারী আবাহনীকে লড়াই করার মতো রান এনে দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। রান তাড়ায় ব্যাটিংয়েও ভালো করলেন নাসির হোসেন। এগিয়ে এলেন অন্যরাও। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বুধবার বিকেএসপিতে অনুষ্ঠিত খেলায় আবাহনীকে ৩ উইকেট হারিয়ে পঞ্চম দল হিসেবে সুপার সিক্সে জায়গা করে নিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ২১২ রানের লক্ষ্যে ৭ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় তারা। অপরদিকে দিনের আরেক ম্যাচে চোট কাটিয়ে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে নির্বিষ থাকলেন তাসকিন আহমেদ। তবে বাকীদের দারুণ বোলিংয়ে নাগালেই থাকল রূপগঞ্জের জয়ের লক্ষ্য। পয়েন্ট টেবিলের তলানির দল উত্তরাকে ১৮০ রানে আটকে রেখে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে লিগপর্ব শেষ করল তারা। আর এই জয় নিয়ে প্রথম পর্বের ১১ ম্যাচের ১০টিই জিতল রূপগঞ্জ। নিশ্চিত করল নিকটতম দলের চেয়ে অন্তত ৪ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে সুপার লিগে খেলবে নাঈম ইসলামের দল। আর ফতুলস্নায় একের পর এক হারে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা ব্রাদার্স ইউনিয়ন ১ উইকেটে হারিয়েছে প্রাইম দোলেশ্বরকে। বিকেএসপিতে আগে ব্যাট করে মোসাদ্দেকের সেঞ্চুরিতে ২১১ রান করেছিল আবাহনী। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পরও নাসির হোসেন, অমিত মজুমদার, তানবীর হায়দার দৃঢ়তায় ওই রান টপকেছে শেখ জামাল। এই জয়ে ১১ ম্যাচের ছয়টি জিতে ১২ পয়েন্ট শেখ জামালের। নিজেদের শেষ ম্যাচে মোহামেডান আর গাজী গ্রম্নপ ক্রিকেটার্স জিতলে তাদেরও হবে ১২ পয়েন্ট। কিন্তু হেড-টু-হেডে এগিয়ে থাকায় আর কোনো সমীকরণের দরকার হচ্ছে না শেখ জামালের। যদিও হাঁটুর অস্ত্রোপচারের পর মাঠে ফিরে নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না নাসির। অবশেষ বিকেএসপির মাঠে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বাঁচা-মরার ম্যাচে তাকে দেখা গেল চেনা চেহারায়। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে হাতে উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কারও। ছোট লক্ষ্য পেলেও আবাহনীর শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের সামনে শেখ জামালের ম্যাচ জেতা কঠিন হয়ে যায় ১২ রানে ২ উইকেট হারালে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ইমতিয়াজ হোসেন ও অনুতাপ মজুমদার ৬৯ রানের জুটি গড়ে জয়ের পথেই রাখেন দলকে। সানজামুল ইসলামের জোড়া আঘাতে আবারও ম্যাচে ফেরে আবাহনী। দলীয় ৮১ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরে যান ইমতিয়াজ (৩০) ও নুরুল হাসান সোহান। নাসিরকে সঙ্গে নিয়ে সেখান থেকে অনুতাপের পঞ্চম উইকেটে ৬০ রানের জুটি শেখ জামালকে দেখায় জয়ের স্বপ্ন। দলীয় দেড়শর কাছে গিয়ে ৫৬ রানের ইনিংস খেলে অনুতাপ বোল্ড হন সাইফউদ্দিনের বলে। নাসিরও ফেরেন দ্রম্নত। ৪৫ রান করা এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান বোল্ড হন সৌম্য সরকারের বলে। ৭ রানের ব্যবধানে থিতু দুই ব্যাটসম্যান আউট হলে আবারও চাপে পড়ে শেখ জামাল। লেগস্পিনিং অলরাউন্ডার তানবীর হায়দারের প্রতিরোধ সহজ করে দেয় জয়ের পথ। ৭ বল আগেই দলকে জিতিয়ে ৩৮ রানে থাকেন অপরাজিত তিনি। এদিকে ছোট লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিং জুটিতেই লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ তুলে ফেলে ৯৬ রান। নাঈম শেখ ৬৩ রান করে মোহাইমেনুলের বলে বোল্ড হলে ভাঙে জুটি। আরেক ওপেনার মেহেদী মারুফের সঙ্গে মুমিনুল হকের ৮৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৪০.৪ ওভারে জয়ের বন্দরে নোঙর করে তারা। মেহেদী ৬২ ও মুমিনুল ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাব পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করেও ৮ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রানের বেশি তুলতে পারেনি। রূপগঞ্জের বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদ ১০ ওভারে মাত্র ২৯ রান দিয়ে নেন তিন উইকেট। হন ম্যাচসেরা। ভারতীয় পেসার রিশি ধাওয়ান দুটি ও মোহাম্মদ শহিদ নেন একটি করে উইকেট। বিশ্বকাপ দলে থাকার চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে প্রথম খেলতে নামা তাসকিন ছাড়া সবাই করেছেন হিসেবি বোলিং। তবে খরুচে ছিলেন এ ডানহাতি পেসার। ৫ ওভারে দেন ৩৬ রান। পাননি কোনো উইকেট।