রুদ্ধশ্বাস জয়ে সুপার লিগে মোহামেডান

প্রকাশ | ১২ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রীড়া প্রতিবেদক পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ম্যাচের ভাগ্য। একটা সময় মনে হলো, খুব সহজেই জিতে যাবে মোহামেডান। তারপর আবার ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিল বিকেএসপি। শেষ ওভার পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছিল না, কোন দল আসলে জিতবে। অবশেষে নাটকীয়তার পর শেষ হাসি হাসল ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডানই। লক্ষ্য ছিল নাগালের মধ্যেই। সেই লক্ষ্যে লিটন দাস আর ইরফান শুক্কুরের শুরুটাও ছিল দারুণ। কিন্তু মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় পথ হারিয়ে দুর্বল বিকেএসপির বিপক্ষেই ডুবতে বসেছিল মোহামেডান। টান টান উত্তেজনার পর অভিষেক মিত্রের ব্যাটে তীরে তরি ভিড়েছে তাদের। ফতুলস্নায় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের একাদশ রাউন্ডের ম্যাচে ১ বল বাকি থাকতে বিকেএসপিকে ১ উইকেটে হারিয়েছে মোহামেডান। শেষ দল হিসেবে নিশ্চিত করেছে সুপার লিগ। আগে ব্যাট পেয়ে ৭ উইকেটে ২৪৯ রান করেছিল বিকেএসপি। লিটন আর অভিষেকের দুই ফিফটিতে ওই রান টপকে যায় ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। আড়াইশ রানের লক্ষ্যে ইরফানকে নিয়ে অনায়াসে খেলতে থাকেন লিটন। তার আগ্রাসী অ্যাপ্রোচে বাড়ছিল রান। দলের ৭৭ রানে ইরফান আউট হওয়ার পর লিটনের সঙ্গে যোগ দেন অভিষেক। জুটিতে আরও ৩৯ রান তোলার পর বিচ্ছিন্ন হন তারা। ৫৭ বলে ৬ চারে ৫৩ করে ফেরেন লিটন। এরপর রকিবুল হাসানের সঙ্গে গড়ে ওঠে লিটনের আরেক জুটি। ৪৭ রানের জুটির পর ৩৫ করা রকিবুল আউট হয়ে গেলে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে মোহামেডানের মিডল অর্ডার। মোহাম্মদ আশরাফুল, নাদীফ চৌধুরী ছিলেন আসা যাওয়ার মিছিলে। এক প্রান্ত আগলে তখন মোহামেডানের আশা বাঁচান অভিষেক। ৬৫ রানের দারুণ ইনিংস খেলার পর অভিষেক আউট হলে আঁধার ঘনিয়েছিল মোহামেডানের ডেরায়। শেষ দিকের রোমাঞ্চে বাকি কাজ সেরেছেন কাজী অনিক। এর আগে আমিনুল ইসলামের ৬০ আর শামিম হোসেনের ৪৯ রানে মোহামেডানের সামনে জুতসই লক্ষ্য দিতে পেরেছিল বিকেএসপি। পাঁচ দলের সুপার লিগ নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। অপেক্ষা ছিল একটি দলের। ৬ষ্ঠ দল হিসেবে সে তালিকায় নাম লেখাতে প্রতীক্ষায় ছিল মোহামেডান ও গাজী গ্রম্নপ। কিঞ্চিত আশা ছিল শাইনপুকুরেরও। বেলা যত গড়ায় সম্ভাবনা তত বাড়ে মোহামেডান ও গাজীর চেয়ে এক পয়েন্ট কম থাকা দলটির। লিগপর্বের শেষদিনে মিরপুর, ফতুলস্না, বিকেএসপি তিন ভেনু্যতেই চোখ রাখতে হয়েছে সকলকে। বিকেএসপির মাঠে প্রাইম ব্যাংকের কাছে গাজীর ৩৪ রানে হেরে যাওয়ার খবর ততক্ষণে পৌঁছে যায় মিরপুরে খেলাঘরের বিপক্ষে লড়তে থাকা শাইনপুকুরের খেলোয়াড়দের কাছে। একই সময়ে ফতুলস্নায় বিকেএসপির কাছেও হারের মুখে তখন মোহামেডান। জয়ে নাগালে চলে যাওয়ায় আশার বেলুন বড় হয় শাইনপুকুরের। তবে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর মোহামেডান জিতে যাওয়ায় স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের। শাইনপুকুর প্রত্যাশিত জয়টি পায় বৃষ্টি আইনে। খেলাঘরের দেয়া ১৯১ রানের লক্ষ্যে নামা দলটি ৪১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান তোলার পর শুরু হয় বৃষ্টি। ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে তারা জেতে ১৫ রানের ব্যবধানে। ১১ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থান থেকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ করল তারা। সমান ১২ পয়েন্ট নিয়ে সেরা ছয়ের সুপার লিগে উঠেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ১০ পয়েন্ট নিয়ে আটে থাকল গাজী। ৬ পয়েন্টে নবম স্থানটি খেলাঘরের। দীর্ঘ লড়াই শেষে সুপার লিগের ছয় দল দাঁড়াল- ২০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ, ১৬ পয়েন্টে দুইয়ে আবাহনী লিমিটেড, সমান পয়েন্টে রানরেটে পিছিয়ে তিনে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব, চারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব, পাঁচে ও ছয়ে যথাক্রমে মোহামেডান ও শেখ জামাল।