সাইফউদ্দিন ঝড়ে অপেক্ষা বাড়ল মাশরাফির

শেখ জামালের জয়ে নাসিরের সেঞ্চুরি

প্রকাশ | ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
আগে ব্যাট করে পুঁজিটা খুব বড় করতে পারেনি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড। তবে শুরুতে উইকেট নিতে পারলে অল্প পুঁজিও হয়ে ওঠে রানের পাহাড়। মিরপুর শেরেবাংলায় তাই করে দেখাল খালেদ মাহমুদ সুজনের শিষ্যরা। আর তার নেতৃত্ব দিয়েছেন তরুণ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার বোলিং তোপেই প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবকে ১৬৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে সুপার লিগে শুভসূচনা করেছে চ্যাম্পিয়নরা। সুপার লিগের অপর খেলায় নাসির হোসেনের সেঞ্চুরির সুবাদে প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে ৬ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ম্যাচে বিশেষ দৃষ্টি ছিল জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার দিকে। দেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ৪০০ উইকেটের মাইলফলক থেকে দূরে আছেন এ পেসার। কিন্তু এদিনও তাকে উইকেটবঞ্চিত থাকতে হয়। এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচ উইকেটহীন থাকলেন তিনি। ম্যাচের সব আলোই কেড়ে নেন সাইফউদ্দিন। শুরু থেকে গতি ও সুইংয়ের ঝলক দেখিয়ে ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং করে একাই তুলে নেন ৫টি উইকেট। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই সাইফউদ্দিনের তোপে পড়ে দোলেশ্বের। শুরুতেই তরুণ ইমরান উজ্জামানকে তুলে নেন বাড়তি বাউন্সে। এরপর সৈকত আলীও একই পথে হাঁটেন। একে একে তুলে নেন ফরহাদ হোসেন, মার্শাল আইয়ুব ও সাইফ হাসানকেও। ফলে ৩৪ রানেই শেষ টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটসম্যান। আর সাইফউদ্দিনের বোলিং ফিগার তখন ৬-১-৯-৫। এরপর সাইফউদ্দিন আর বল হাতে না ফিরলেও ভাগ্য বদল হয়নি দোলেশ্বরের। স্পিনাররাই সারেন বাকি কাজ। এক মাহমুদুল হাসান ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই দায়িত্ব নিতে পারেননি। ফলে ৮৬ রানেই গুটিয়ে যায় দোলেশ্বর। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৭ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন মাহমুদুল। এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বড় বিপর্যয়ে পড়ে আবাহনী। দলীয় ১২ রানেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলে তারা। এরপর চতুর্থ উইকেটে ভারতীয় রিক্রুট ওয়াসিম জাফরকে নিয়ে দলের হাল ধরেন তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত। গড়েন ১৪৬ রানের দারুণ এক জুটি। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় দলটি। তবে এক ওভার বাকি থাকতেই ২৫১ রান তুলে অলআউট হয়ে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭১ রান করেন জাফর। ৯৭ বলে ৬টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ৮৩ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৭০ রানের ইনিংস খেলেন শান্ত। এছাড়া মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাট থেকে আসে ৪১ রান। শেষদিকে ২৪ রান করেছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রাইম দোলেশ্বরের পক্ষে ৪৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পেয়েছেন আবু জায়েদ রাহী। ফরহাদ রেজা ও সাইফ হাসান নেন ২টি উইকেট। প্রাইম ব্যাংককে সামনে পেলেই যেন নিজের খারাপ সময়টা ভালো করেন নাসির হোসেন। ডিপিএলের চলতি আসরে সর্বোচ্চ ইনিংসটা (৭৬) যে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে করেছিলেন, সেই তাদের বিরুদ্ধেই নাসির করেছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। তার সেঞ্চুরিতে ভর করে সুপার লিগে ৬ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ১১২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন নাসির হোসেন। এটি লিস্ট এ ক্রিকেটে তার ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। ফতুলস্নায় টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শেখ জামালের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। বোলিং নিয়ে শুরুতেই সাফল্যের দেখা পায় শেখ জামাল। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে যোগ হয় ১২০ রান। এরই মধ্যে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন রুবেল মিয়াঁ। এ দুজনের জুটি ভাঙেন ইলিয়াস সানি। নামানকে ৪৬ রানে আউট করেন তিনি। তার বিদায়ের একটু পরেই আউট হন রুবেল মিয়াঁও। ৬৬ রান করে তানভীর হায়দারের বলে আউট হন তিনি। তারপর যেন একটানা উইকেট পড়তেই থাকে প্রাইম ব্যাংকের। ১৪ রান যোগ করতেই ৪টি উইকেট হারায় প্রাইম ব্যাংক। ১৪০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে দল যখন বিপদে তখন সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন আরিফুল হক। ফতুলস্নায় ঝড় তোলেন আরিফুল। তার ঝড়ো ৫১ বলে ৭৪ রানের ইনিংসে ২৩৬ রান করে প্রাইম ব্যাংক। তিনটি করে উইকেট লাভ করেন সানি ও তানভীর। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেন দুই ওপেনার ইলিয়াস ও ইমতিয়াজ। তবে দলীয় ৪৫ রানে ভাঙে তাদের জুটি। প্রথম পর্বে ব্যাট হাতে তেমন সফল হতে না পারা নাসির যেন প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে জ্বলে ওঠেন। নাসির-সানির জুটি দলকে জয়ের দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। হাফসেঞ্চুরি হাঁকান ইলিয়াস সানি (৬৭)।