বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নতুন স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ (মাঝে) -ওয়েবসাইট
আপাতত চুক্তি স্রেফ মাস দুয়েকের জন্য। এই সময়টায় মূলত টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ও বিশ্বকাপ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হবে মুশতাক আহমেদকে। তবে বাংলাদেশের স্পিন কোচের দায়িত্বে আরও বড় পরিসরে ছাপ রাখতে চান তিনি। স্থানীয় কোচদের সঙ্গে কাজ করে লেগ স্পিনার, রহস্য স্পিনার ও বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার বের করে আনায় ভূমিকা রাখতে চান পাকিস্তানের এই লেগ স্পিন গ্রেট।
বাংলাদেশের নতুন স্পিন কোচের দায়িত্ব নিতে সোমবার ঢাকায় আসেন মুশতাক আহমেদ। মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসে কোচিং স্টাফ ও বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পরিচিতিপর্ব দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় তার নতুন পথচলা। বিসিবির সঙ্গে তার চুক্তি আগামী টি২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত।
বাংলাদেশ দলে মুশতাকের অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে। তবে টাইগারদের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে রয়েছেন এই কোচ, 'বাংলাদেশের ক্রিকেটের অংশ হওয়াটা আমার জন্য অনেক সম্মানের। আমি অপেক্ষা করে আছি।'
দেশের স্পিন বিভাগে পার্থক্য আনতে পারার দৃঢ়তা দেখিয়ে মুশতাক বলেন, 'আমি এখানে স্পিন বিভাগে একটি পার্থক্য তৈরি করতে এসেছি। আমার জ্ঞান তরুণ এবং সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে ভাগ করতে পারি। আশা করি আমরা একটি পার্থক্য করতে পারব।... তরুণরা খুবই প্রতিভাবান ক্রিকেটার, তাই আমরা তাদের কাছে আমাদের অভিজ্ঞতা তুলে দিতে পারি। আমি বিশ্বাস করি তারা খুবই প্রতিভাবান। তারা যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।'
কাজটা সহজ নয়, তা ভালো করেই জানেন মুশতাক। তবে এই চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন তিনি, 'এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। কোচিং দক্ষতার দৃষ্টিকোণ থেকে, এটা বিশ্বের বাকি অংশ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আপনাকে মানিয়ে নিতে হবে এবং খুবই সক্রিয় হতে হবে। মূলত ক্রিকেট বুঝতে হবে। সত্যি বলতে কি এটা সবসময় দারুণ একটা অভিজ্ঞতা। একজন কোচ এবং খেলোয়াড় হিসেবে আপনাকে সংস্পর্শে থাকতে হবে। আপনাকে সঠিক হতে হবে।'
তৃণমূল পর্যায় থেকেও স্পিনার খুঁজে আনার ব্যাপারে কাজ করতে আগ্রহী মুশতাক, 'এশিয়ার নেটে সবসময় একজন লেগস্পিনার, মিস্ট্রি স্পিনার এবং চায়নাম্যান থাকে। আমি মনে করি সেখানেই আমার অভিজ্ঞতা আসবে। আশা করছি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারব। আমরা ক্লাব এবং প্রথম শ্রেণির কোচদের সঙ্গে কথা বলতে পারি। আমরা লেগস্পিনার এবং চায়নাম্যান বোলার খুঁজে পেতে পারি। আপনার এমন স্পিনার থাকা দরকার যারা সাদা বলের ক্রিকেটে মাঝের ওভারে আপনাকে উইকেট তুলে দিতে পারে।'
খেলোয়াড়ি জীবনে কয়েকবার এসেছেন মুশতাক আহমেদ বাংলাদেশে। ১৯৯৪ সালে পাকিস্তান দলের হয়ে বাংলাদেশে এসে দুটি একদিনের ম্যাচ খেলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে শিকার করেন তিন উইকেট, পরের ম্যাচে ছিলেন উইকেটশূন্য। ইনজামাম-উল-হক, সাঈদ আনোয়ার, সেলিম মালিক, বাসিত আলি, ওয়াকার ইউনুস, আমির সোহেল, রাশিদ লতিফদের দলের সঙ্গে সেই ম্যাচগুলো অবশ্য আন্তর্জাতিক ম্যাচ হিসেবে গণ্য হয়নি।
এবারের আগে তিনি বাংলাদেশে সবশেষ এসেছিলেন ১৯৯৮ সালে ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপে খেলতে। এত বছর পর এসে স্মৃতির সাগরে একটু ডুব দিলেন ৫২ টেস্ট ও ১৪৪ ওয়ানডে খেলা স্পিনার। তিনি বলেন, '১৯৯২ বিশ্বকাপ জয়ের পর ১৯৯৩-৯৪ সালে (বাংলাদেশ সফরের) দলে ছিলাম। বাংলাদেশ সফরে আসা সবসময়ই দারুণ। কারণ এখানকার স্থানীয়রা পাকিস্তানি ক্রিকেটার ও পাকিস্তানি মানুষের বড় ভক্ত। আমরাও এখানে আসতে ও ক্রিকেট খেলতে সবসময় উপভোগ করেছি। এখানকার আতিথেয়তা অসাধারণ। খাবার ও সবকিছুই দারুণ পছন্দ করেছিলাম আমরা।'