ট্রফি ঘরেই রাখতে চায় বাংলাদেশ

প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রীড়া প্রতিবেদক আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের পদচারণা নতুন নয়। তবে ঘরের মাটিতে এবারই প্রথম বড় পরিসরে কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাতার নামে 'বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ নারী আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ' ফুটবল টুর্নামেন্ট। প্রথমবারের মতো হতে যাওয়া টুর্নামেন্টটি স্মরণীয় করে রাখতেই দ্রম্নতগতির ফুটবল খেলে শিরোপা জিতে ট্রফিটি ঘরে রাখতে চায় টিম বাংলাদেশ। আগামীকাল ২২ এপ্রিল থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ৬ দেশের অনূর্ধ্ব ১৯ দল নিয়ে শুরু হচ্ছে বঙ্গমাতা টুর্নামেন্ট। গ্রম্নপ 'এ'তে মঙ্গোলিয়া, তাজিকিস্তান এবং লাওস। 'বি' গ্রম্নপে স্বাগতিক বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কিরগিজস্তান। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচই হবে সন্ধ্যা ৬টায়। উদ্বোধনী দিনে বাংলাদেশ খেলবে আরব আমিরাতের বিপক্ষে। লাল-সবুজদের পরবর্তী গ্রম্নপ ম্যাচ ২৬ এপ্রিল কিরগিজস্তানের বিপক্ষে। কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন জানালেন, 'মেয়েরা ধারাবাহিকভাবে অনুশীলনের মধ্যেই আছে। ২৭ ফেব্রম্নয়ারি থেকে ২০ মার্চের মধ্যে আমরা দুটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছি। সেই অভিজ্ঞতাগুলো এই টুর্নামেন্টে আমাদের অনেক কাজে আসবে। সেখানে আমাদের যে ভুল ত্রম্নটি ছিল সেগুলো নিয়ে কাজ করা হয়েছে। সাফের পর মাত্র ৭ দিনের শারীরিক ও মানসিক রিকভারি করেছে মেয়েরা। ২৮ মার্চ থেকে আবারো অনুশীলনেই ছিল তারা।' ছোটন আরও জানালেন,'আমরা প্রথমত গ্রম্নপের ম্যাচগুলোতে জিততে চাই। এরপর সেমিফাইনাল জিতে ফাইনালে খেলতে চাই। টুর্নামেন্টটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ঘরের ট্রফি ঘরেই রাখতে চাই আমরা। মেয়েরা ট্যাকটিক্যালি এবং ট্যাকনিক্যালি কতটা উন্নতি করেছে সেটি তো আপনারা মাঠেই দেখেছেন।' জাতিগত কারণেই বাংলাদেশের মেয়েদের থেকে শারীরিক গড়নে এগিয়ে টুর্নামেন্টের অন্যান্য দেশগুলোর মেয়েরা। সেটি লক্ষ্য রেখেই পরিকল্পনা সাজাবেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, 'আমরা প্রতিটি ম্যাচেই জয়ের জন্য মাঠে নামবো। প্রথম ম্যাচটি অবশ্যই জয় দিয়ে শুরু করতে চাই। মাঠে খেলার ধরন দেখে কৌশল নির্ধারণ করব। মেয়েরা জয়ের জন্য প্রস্তুত আছে।' দলীয় অধিনায়ক মিশরাত জাহান মৌসুমী বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রীর মায়ের নামে টুর্নামেন্ট। সেটি স্মরণীয় করে রাখতে নিজেদের ঘরে ট্রফি ধরে রাখতে আমরা সর্বোচ্চটা দেব। আমাদের ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। দলের সবাই সুস্থ আছে। আমরা যেন ভালো ফলাফল উপহার দিতে পারি সে জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।' সহকারী অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা বলেছেন, 'নেপাল ও মিয়ানমারে আমাদের যে ভুলত্রম্নটিগুলো ছিল সেগুলো শুধরে নিয়ে উন্নতি করেছি। টুর্নামেন্টে আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগুতে চাই।' সাফের অভিজ্ঞতালব্ধ দলটির মধ্যে শুধুমাত্র সাবিনা খাতুন বয়সের কারণে থাকছেন না এই দলের সঙ্গে। নতুন করে যুক্ত হয়েছেন নাজমা, সাজেদা আর সুলতানা। মঙ্গোলিয়া এবং লাওসের সঙ্গে পূর্বে খেলার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশের। তবে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে এবং কিরগিজস্তানের বিপক্ষে অনূর্ধ্ব ১৬ পর্যায়ে খেলেছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন পর্যায়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে তিনবার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। বঙ্গমাতা টুর্নামেন্টের প্রথম প্রতিপক্ষ আরব আমিরাতের সঙ্গে বাংলাদেশ মোট দুইবার মুখোমুখি হয়েছে। এএফসি অনূর্ধ্ব ১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। যেখানে ৬-০ গোলের জয় পায় লাল-সবুজের মেয়েরা। একই আসরে ২০১৬ সালে একই ভেনু্যতে ৪-০ গোলের জয় পায় ছোটন শিষ্যরা। তবে আন্তর্জাতিক আসরের আগে বিদেশি কোনো দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা হচ্ছে না মৌসুমী- মারিয়াদের। তাতে খুব একটা সমস্যা দেখছেন না বাংলাদেশ দলের কোচ, 'অনেক কিছু হলেই হয়তো ভালো হতো। যেটি হয়নি সেটি নিয়ে কথা বলে তো লাভ নেই। আমরা সাম্প্রতিক সময়ে ৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছি। সেগুলোকে প্রস্তুতি হিসেবে ধরে নিয়েছি।' মেয়েদের জন্য বড়সড় আয়োজন এবারই প্রথম। আর তাদের প্রতি আয়োজকদের সেই আস্থার প্রতিদান দিতে চান দলীয় অধিনায়ক। 'এ রকম আয়োজন করে টুর্নামেন্ট এর আগে হয়নি। আমাদের উপর আস্থা রেখেই তারা এ টুর্নামেন্ট করছেন। সেই আস্থার প্রতিদান দিতে চাই। ঘরের ট্রফি ঘরেই রেখে দিতে চাই।' টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ইতোমধ্যে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে তাজিকিস্তান, মঙ্গোলিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাকিটি দুই দল চলে আসবে আজকের মধ্যেই।