বড় রান তাড়ায় সমস্যা দেখছেন না রোডস

ইংল্যান্ডের মাটি অনেকবেশি কঠিন হবে বোলারদের জন্য। সেখানকার উইকেটগুলো ফ্ল্যাট এবং বোলারদের জন্য কঠিন। আমাদের বড় সংগ্রহ দাঁড় করাতে হবে, যেটি খুব সহজ ওখানে। সেখানকার আউটফিল্ড খুবই দ্রম্নতগতির। সাধারণত ব্যাটিং উইকেট হয়, সহজে ব্যাটে বল আসে, দারুণ সব শট খেলা যায়। তাতে বড় রানই দেখা যাবে।

প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বেশ জোরেশোরে টাইগারদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি চলছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ স্টিভ রোডস, ট্রেনার মারিও ভিলস্নাভারায়ন একটি বিষয় দেখালে সেটা খুব মনোযোগ-সহকারে দেখছেন মুশফিকুর রহিম - বিসিবি
ওয়ানডে সংস্করণে গত চার বছরে জয়ের পালস্না ভারী হলেও বড় রান তাড়ায় সফল হওয়া গেছে কম সময়ই। তিনশ বা তার বেশি রান তাড়া করে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র একটি ম্যাচ। আর তাই বড় লক্ষ্য তাড়ায় অনভ্যস্ত টাইগারদের জন্য ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে আসছে বড় রকমের চ্যালেঞ্জ। তবে সেখানে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে প্রতিপক্ষের দেয়া বড় লক্ষ্যের দিকে প্রায়শই ছুটতে হতে পারে টাইগারদের। তাতে অবশ্য ভয়ের কিছু দেখছেন না বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ স্টিভ রোডস। চ্যালেঞ্জটা দেখছেন শুধু বোলারদের জন্য। শৈশব-কৈশোর, খেলোয়াড়ি জীবন, কোচিং জীবনের প্রায় পুরোটাই ইংল্যান্ডে কেটেছে রোডসের। তার দেশে বিশ্বকাপ আসর। বিসিবি তাকে নিয়োগের ব্যাপারে বিবেচনায় এনেছিল সেটিও। সব অভিজ্ঞতা নিংড়ে দিয়ে রোডস এনে দিতে চান সাফল্য। কীভাবে তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবেন জানালেন রোডস, 'ইংল্যান্ডের মাটি অনেক বেশি কঠিন হবে বোলারদের জন্য। সেখানকার উইকেটগুলো ফ্ল্যাট এবং বোলারদের জন্য কঠিন। আমাদের বড় সংগ্রহ দাঁড় করাতে হবে, যেটি খুব সহজ ওখানে। সেখানকার আউটফিল্ড খুবই দ্রম্নতগতির। সাধারণত ব্যাটিং উইকেট হয়, সহজে ব্যাটে বল আসে, দারুণ সব শট খেলা যায়। তাতে বড় রানই দেখা যাবে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে। তাছাড়া কিছু সুবিধা তো পাওয়া যাবেই (ইংল্যান্ডের বাসিন্দা হওয়ায়)। বিভিন্ন ভেনু্যর কিউরেটর এবং স্থানীয় কোচদের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে, বাংলাদেশে আসার আগে আমার কোচিং জীবন সেখানেই কেটেছে। সে অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করলে তা কাজে দেবে।' বিশ্বকাপ মিশনে প্রতিটি দেশই নিজেদের সেরা দল গড়েছে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত, পাকিস্তান এমনকি আফগানিস্তানও। সম্মুখ সমরে দক্ষ সেনাপতিদের ধারালো ব্যাটে-বলে প্রতিপক্ষ মোকাবিলায় প্রস্তুত সবাই। বিশ্বযুদ্ধের মঞ্চে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের পেরে ওঠা আদতেই কঠিন বলে মনে করেন টাইগার প্রধান কোচ রোডস। তবে শিষ্যদের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন না এই ইংলিশম্যান। যত শক্তিশালী দলই হোক না কেন, তার শিষ্যরা যে কাউকেই হারিয়ে দিতে সক্ষম বলে মনে করেন তিনি, 'যদি সত্যি কথা বলি, বেশ কয়েকটি ভালো দল এবারের বিশ্বকাপে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ভালো খেলাটা কঠিন হবে। তবে আমি বেশ কয়েকটি দেশকেই জানি, যারা বাংলাদেশকে সমীহ করে। তারা জানে, যত ভালোই তারা খেলুক না কেন তাদের হারিয়ে দেয়ার সামর্থ্য বাংলাদেশের আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি সিরিজে আমরা হারিয়েছি। আমরা বড় দলকে হারাতে পারি। আমাদের সেরাটা খেলতে হবে। আমরা বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে (সেমিফাইনাল) খেলতে পারব কি না, আর যদি জানতে চান সামর্থ্য আছে কি না? আমি বলব, অবশ্যই আছে।' চোট থেকে ফিরেই এবার আইপিএলে গিয়ে নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা হয় সাকিব আল হাসানের। প্রথম ম্যাচ খেলেই ছিটকে যান একাদশ থেকে। একে একে আট ম্যাচ বাইরে বসে থাকার পর ফেরেন একাদশে। বিশ্বকাপের আগে এতে তার ম্যাচ অনুশীলনে কিছুটা ঘাটতি হলেও দুটি ভালো দিকও দেখছেন বাংলাদেশের কোচ রোডস। বিশ্বকাপের আগে দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ের অনুশীলনটা ঠিকমতো হচ্ছে কি না খোঁজখবর নিচ্ছিলেন রোডস। সার্বিক পরিস্থিতিতে জানিয়েছেন নিজের সন্তুষ্টি, 'সাকিবের ওখানে থাকার একটাই কারণ যদি দু-একটা ম্যাচ পায়। সেদিন একটা ম্যাচে নেমেছে। আশা করছি দু-তিনটা খেলা পাবে। খেলতে না পারলে ঠিকমতো অনুশীলন হচ্ছে কি না এই নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন ছিলাম, কিন্তু না সে সেখানে ভালোভাবেই অনুশীলন করতে পারছে। সেদিন টিভিতে দেখলাম সে খুবই স্বচ্ছন্দ ছিল। দেখে ফিট মনে হয়েছে। ফিল্ডিংয়ে গতিময় ছিল। আমি খুশি, আরও খুশি হবো যদি সে আরও ম্যাচ খেলতে পারে। ' ম্যাচ আরও বেশি খেললে ভালো হতো। কিন্তু ম্যাচ কম খেলাতেও রোডসের মতে আছে ভালো দিক। সাকিবের মতো বিশ্ব ক্রিকেটের এরকম শীর্ষ তারকার এতগুলো ম্যাচ বাইরে বসে থাকায় তৈরি হবে জেদ, মাঠে নামার, ভালো করার ক্ষিপ্রতা। রোডস মনে করছেন, যা বিশ্বকাপে উপকৃত করবে বাংলাদেশকে, 'এখানে দুটো ভালো দিক আছে (বাইরে বসে থাকা)। প্রথমত, ক্রিকেট খেলার জন্য তার খিদেটা আরও বাড়ল। অন্যদিক দিয়ে দেখলে সাকিব সানরাইজার্সের মতো দলে জায়গা পায়নি, এটা তাকে বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করতে, নিজের সামর্থ্য প্রমাণে উৎসাহিত করবে। আমার মনে হয় এই কারণে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।'