ইতালির ক্লাব আটালান্টাকে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপ জিতে নেওয়ায় ট্রফি নিয়ে উচ্ছ্বসিত কিলিয়ান এমবাপে-ভিনিসিয়াস-বেলিংহ্যামরা -ওয়েবসাইট
প্রথমার্ধের ধারহীন রিয়াল মাদ্রিদ বিরতির পর উপহার দিল নজরকাড়া পারফরম্যান্স। দলটির জার্সিতে অভিষেকের উপলক্ষ গোল করে রাঙালেন কিলিয়ান এমবাপে। আটালান্টাকে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপ জিতল কার্লো আনচেলত্তির দল। পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশর ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে ইতালির ক্লাবটির বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতেছে রিয়াল।
দুটি গোলই আসে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। ৫৯ মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের পাসে ফাঁকা জালে বল পাঠান ফেদেরিকো ভালভার্দে। নয় মিনিট পর রিয়ালের পক্ষে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন অভিষিক্ত এমবাপে। জুড বেলিংহ্যামের পাসে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। মৌসুমের শুরুতে আগেরবারের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপা লিগ জয়ীর মধ্যে হয়ে থাকে এক ম্যাচের এই শিরোপা লড়াই। এই নিয়ে ষষ্ঠবার ট্রফিটি জিতল রিয়াল, সবচেয়ে বেশিবার জয়ের রেকর্ড একার করে নিল তারা। ছাড়িয়ে গেল পাঁচবার করে জেতা বার্সেলোনা ও এসি মিলানকে।
চলতি বছরে রিয়াল মাদ্রিদের এটি চতুর্থ শিরোপা; গত জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ের পর তারা ঘরে তোলে লা লিগা ও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। আর কোচ হিসেবে রেকর্ড পাঁচবার (রিয়ালের হয়ে তিনবার, এসি মিলানের হয়ে দুবার) উয়েফা সুপার কাপ জিতলেন আনচেলত্তি। তিনি ছাড়িয়ে গেলেন চারবার জেতা পেপ গার্দিওয়ালাকে।
রিয়ালে খেলার যে তীব্র তাড়না, সেটির স্বাদ ও পুরস্কার যেন প্রথম ম্যাচেই পেয়ে গেলেন এমবাপে। শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে প্রায় ৯ বছরের ক্যারিয়ারে ফরাসি লিগ জিতেছেন তিনি সাতবার। পিএসজির হয়ে জিতেছেন আরও গোটা দশেক ট্রফি। কিন্তু কোনো ইউরোপিয়ান শিরোপার ছোঁয়া পাননি। সেই অপূর্ণতা ঘুচে গেল রিয়ালের জার্সিতে প্রথম ম্যাচেই! আর সেই উপলক্ষ নিজেও রাঙালেন তিনি গোল করে। সব মিলিয়ে স্বপ্নের ক্লাবে তার শুরুটা যেন এর চেয়ে ভালো হতে পারত না। নতুন পথচলার শুরুতে এমন সাফল্যে এমবাপে দারুণ উচ্ছ্বসিত।
রিয়ালের হয়ে এমবাপের খেলার স্বপ্ন যে একদম ছেলেবেলা থেকেই, সেটি জানে গোটা ফুটবল বিশ্ব। এই ক্লাবে তার আসা নিয়ে নাটকও কম হয়নি। কয়েক বছরের নানা গুঞ্জন ও ঘটনার পর অবশেষে ফ্রি ট্রান্সফারে এবার তিনি এসেছেন। প্রবল প্রত্যাশা ও কৌতূহলের কেন্দ্রে আছেন তিনি। শুরুতেই আভাস দিয়ে রাখলেন, এই ভার বইতে তিনি প্রস্তুত।
প্রিয় ক্লাবের জার্সিতে প্রথমবার মাঠে নামা, প্রথমবার জালে বল পাঠানো, এই দিনটির স্বপ্ন বুনে আসছিলেন এমবাপে, 'দারুণ এক রাত এটি। আমার জন্যও অসাধারণ এক মুহূর্ত। এই জার্সি গায়ে চাপিয়ে এই ক্লাবের প্রতীক বুকে নিয়ে এই সমর্থকদের জন্য মাঠে নামা- এই মুহূর্তটির জন্য অনেক অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমরা শিরোপা জিতেছি, মাদ্রিদে এমন জয়ই সবসময় কাম্য। আমি খুবই খুশি। গোল করেও খুব ভালো লাগছে- আমার মতো একজন স্ট্রাইকারের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার অবশ্যই এই দলের হয়ে খেলতে পারা।'
রিয়ালের দুটি গোলে এ দিন সহায়তা করেছেন ভিনিসিয়াস ও বেলিংহ্যাম। গত মৌসুমে রেয়ালের সাফল্যে এই দুজনের অবদান ছিল দারুণ। তাদের প্রশংসাও করলেন এমবাপে, 'তারা দুজন দুর্দান্ত ফুটবলার। তবে সব পজিশনেই দারুণ সব ফুটবলার আছে আমাদের। এই দলের সঙ্গে খেলতে পেরে আমি খুশি। আমরা অবশ্যই আরও উন্নতি করব। সবে তো শুরু। আজকে প্রথম পদক্ষেপটা দারুণ ইতিবাচক হলো।'