প্রস্তুতিতে পাকিস্তান শিকারের অপেক্ষায় টাইগাররা

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ইংল্যান্ডের কার্ডিফে অনুশীলন করতে এসে খুদে ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন মেহেদী হাসান মিরাজ -টুইটার
ক্রীড়া প্রতিবেদক বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের প্রস্তুতিটা যা হয়েছে তা এক কথায় চমৎকার! আয়ারল্যান্ডের মাটিতে তিনজাতি ওয়ানডে সিরিজের ট্রফি জয়। পরীক্ষার খাতায় নম্বর হিসেবে ধরলে, একেবারে 'এ পস্নাস!' প্রস্তুতির ঠিক একই পরীক্ষায় পাকিস্তানের যে ফলাফল চরম বাজে। ইংল্যান্ডের কাছে ওয়ানডে সিরিজে গোহারা হেরেছে তারা। ক্রিকেটীয় নিক্তিতে এই বিশ্লেষণের মান 'বি মাইনাস!' বাংলাদেশ প্রস্তুতির সাফল্যে স্বস্তিতে। আর পাকিস্তান প্রস্তুতির কোথায় কি ভুল হচ্ছে সেই হিসেব মেলাতে গালে হাত দুশ্চিন্তা! ঠিক এমন পরিস্থিতিতে এই দুই দল মুখোমুখি হচ্ছে আজ রোববার। কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনের সেই স্টেডিয়ামের এই ম্যাচের নামও প্রস্তুতি ম্যাচ। বিশ্বকাপের একেবারে আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি ম্যাচ। বিকেল সাড়ে তিনটায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মাঠে নামবে। সেই ম্যাচের জন্য নিজেদের জোরদার তৈরি করছে বাংলাদেশ দল। আয়ারল্যান্ডে তিনজাতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ট্রফি জেতার পর বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ফুরফুরে মেজাজেই দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে কার্ডিফে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার কার্ডিফ পৌঁছে সোফিয়া গার্ডেনে অনুশীলন করেছে মাশরাফি-মুশফিকরা। এরই মধ্যে কন্ডিশনের সাথে বেশ মানিয়ে নিয়েছে টাইগাররা। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার চাওয়া, ত্রিদেশীয় সিরিজের সাফল্যকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে নিজেদের উজাড় করে দেয়া। বিশ্বকাপের লড়াইয়ের আগে চাপেই থাকল সরফরাজ আহমেদের দল। বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামার সময় কোমরে জোর একটু কম থাকবে তাদের! টুর্নামেন্টের মূল প্রতিযোগিতায় নামার আগে প্রস্তুতি ম্যাচে সে কথাই যেন বুঝিয়ে দিলেন সরফরাজরা। ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে প্রতিবেশী আফগানিস্তানের কাছে ৩ উইকেটে হেরেছে পাকিস্তান। এদিকে প্রস্তুতি ম্যাচ থেকেই বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত টাইগাররা। দলের কোনো খেলোয়াড়ই এখন ইনজুরিতে নেই। সাকিবকে নিয়ে শঙ্কা তৈরি হলেও তা দূর হয়ে গেছে। লেস্টার থেকে কার্ডিফ পর্যন্ত সবকটি অনুশীলনে সাকিব নিজেকে ফিট করে তুলেছেন, অনুশীলনে ঘাম ঝরিয়েছেন। বিশ্বকাপের মাঠে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২ জুন। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ম্যাচে নামার আগে বাংলাদেশ দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। রোববার প্রথম ম্যাচটা পাকিস্তানের বিপক্ষে। দুদিন পরে ২৮ মে'র শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ভারতের। দুটি ম্যাচই হবে কার্ডিফে। ইংল্যান্ডের যে শহরের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক সুখস্মৃতি জড়িয়ে আছে। তবে বিশ্বকাপ প্রসঙ্গ এলে ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে অবিস্মরণীয় স্মৃতি তো পাকিস্তানকে হারানোর ম্যাচ! ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের আসরে ৩১ মার্চ নর্দাম্পটনশায়ারে মাঠে পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারিয়ে বাংলাদেশ পুরোবিশ্বকে চমকে দেয়। বিশ্বক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরে সেটাই ছিল বাংলাদেশের প্রথম কোনো জয়। যে কায়দায় সেদিন ফেভারিট পাকিস্তানকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ তাতেই রচিত হয় নতুন ইতিহাস। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার আগে নিশ্চয়ই ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের জয়ী সেই ম্যাচের ভিডিও ক্লিপস দেখে নেবেন মুশফিক রহিমরা। বিশ্বকাপের মাঠে পাকিস্তানকে হারানোর সেই জয়ই আমাদের ক্রিকেটের বদলে যাওয়ার কাহিনীর শুরু। অবাক করার বিষয় হলো বিশ্বকাপের মাঠে এখন পর্যন্ত সেটাই বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের একমাত্র ম্যাচ! পরের চার বিশ্বকাপে ভিন্ন গ্রম্নপে থাকায় কোনো সময় আর বাংলাদেশ-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়নি। সেই হিসেব বদলে যাচ্ছে এবার। নতুন ফরম্যাটের এবারের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী সব প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলবে একে অন্যেরা। বিশ্বকাপের আসল লড়াইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি একটু দেরিতে, গ্রম্নপের একেবারে শেষ ম্যাচ সেটা। লর্ডসে সেই ম্যাচে বাংলাদেশ-পাকিস্তান মুখোমুখি হবে ৫ জুলাই। বাংলাদেশের বিপক্ষে সার্বিক পরিসংখ্যানে মুখোমুখি লড়াইয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে পাকিস্তান অনেক এগিয়ে। তবে সাম্প্রতিক পারফরমেন্সের হিসেব যদি কষতে হয় তাহলে সেখানে প্রতিপক্ষ যখন পাকিস্তান তখন বাংলাদেশ ভীষণ দাপুটে দল। পেছনের চার ম্যাচের চারটিই বাংলাদেশ হারিয়েছে পাকিস্তানকে। আর সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে তো পাকিস্তানকে একেবারে ধবলধোলাই করেছিল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজ জিতেছিল ৩-০ তে। এবারের বিশ্বকাপেও হিসেবটা হোক ২-০। ২৬ মে'র প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়েই শুরু হোক এই সমীকরণ!