বিপিএলে শনিবার কুমিলস্নায় ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে কষ্টার্জিত জয়ের ম্যাচে বল দখলের চেষ্টায় আবাহনীর খেলোয়াড় -বাফুফে
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে ঢাকা আবাহনী। শনিবার নিজেদের হোম ভেনু্য কুমিলস্নার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় পেয়েছে আকাশি-নীলরা। তবে এই জয় পেতেও অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে ঐতিহ্যবাহী দলটিকে। আবাহনীর একমাত্র গোলটি করেন সুমন রেজা। একই দিনে ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভুইয়া স্টেডিয়ামে ফকিরের পুল ইয়ংম্যান্স ক্লাবকে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারায় পুলিশ ফুটবল ক্লাব। অন্যদিকে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাতে ব্রাদার্সের সঙ্গে ১-১ গোলের ড্র করে ফর্টিস এফসি।
এই জয়ে দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এলো ঢাকা আবাহনী। এক জয় ও ১ ড্র'তে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ব্রাদার্স আছে চতুর্থ স্থানে। ফর্টিসের ১ পয়েন্ট, তারা আছে সপ্তম স্থানে। প্রথম জয় পেয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে পুলিশ আছে ষষ্ঠ স্থানে।
শুক্রবার কুমিলস্নার এই মাঠেই মোহামেডান-বসুন্ধরার ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে নেমেছিল দর্শকের ঢল। অথচ পরদিনই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী মাঠে, কিন্তু গ্যালারি প্রায় ফাঁকা! নামে ভারে কোনো দিক থেকেই আবাহনীর সঙ্গে তুলনা চলে না ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের। কিন্তু বিদেশি ফুটবলার ছাড়া খেলার প্রভাব যেন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে আবাহনীর। 'ঘরোয়া ফুটবলে পার্থক্যটা গড়ে দেন বিদেশিরা' এমন কথা প্রচলিত। পরপর দুই ম্যাচে আবাহনীর স্থানীয় ফুটবলারদের পারফরম্যান্স বোধহয় সেই সত্যটাই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত দুই ম্যাচের একটিতেও হার মানেনি মারুফুল হকের শিষ্যরা। তবে দুই ম্যাচেই প্রতিপক্ষ ছিল বেশ দুর্বল। প্রথম ম্যাচে ফকিরেরপুল ইংয়ংম্যন্স ক্লাবের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় পেয়েছিল আবাহনী। দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে এলো ১-০ গোলের জয়! আবাহনীর মতো ঐতিহ্যবাহী দলের জন্য এই জয়গুলো ঘাম ঝরানো জয়ই। যেহেতু এখনো মোহামেডান-বসুন্ধরার মতো বড় নামে ক্লাবের মুখোমুখি হওয়া বাকি আছে আবাহনীর। ছোট দলের বিপক্ষে এই কম ব্যবধানের জয়গুলো আবাহনীর দুর্বলতার জানান দিচ্ছে। তাই নিজেদের প্রমাণ করতে এখনই জ্বলে উঠতে হবে আবাহনীর স্থানীয় ফুটবলারদের। কোচ মারুফুলকেও হয়তো এগোতে হবে অন্য কৌশলে। শনিবার কুমিলস্নাতে ম্যাচের ৩১ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে সুমন রেজার লং ক্রস লাফিয়ে উঠে প্রথম চেষ্টায় গ্রিপ করতে পারেননি ওয়ান্ডারার্সের গোলরক্ষক সুলতান। তবে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় সফল হন। প্রথমার্ধে আরও কয়েকটি গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল আবাহনী। তবে প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে আবাহনী একটি গোল আদায় করে নেয়। ৫৯ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের কর্নারে বক্সে জটলার মধ্যে থেকে দারুণ হেডে ওয়ান্ডারার্সের জাল কাঁপান ফরোয়ার্ড সুমন রেজা (১-০)। এই গোলটিতেই জয় নিশ্চিত হয় আবাহনীর।
একই দিনে ময়মনসিংহে নিজেদের প্রথম জয়টি তুলে নিয়েছে পুলিশ। যদিও ম্যাচের ৯ মিনিটে উজবেকিস্তানের ফরোয়ার্ড আকবির তুরায়েভের গোলে লিড নিয়েছিল ইয়ংম্যান্স ক্লাবই (১-০)। তবে এরপর আর তারা কোনো গোল করতে পারেনি। বরং হজম করেছে চারটি গোল। ৪৫ মিনিটে পুলিশের ডিফেন্ডার জয়ন্ত কুমার গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন (১-১)। ৫২ মিনিটে বাবলুর জোগান দেওয়া বলে গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন পুলিশের মিডফিল্ডার মানিক মোলস্না (২-১)। ৬৫ ও ৮১ মিনিটে দুই গোল করে পুলিশের জয় নিশ্চিত করেন ফরোয়ার্ড আল-আমীন।
অন্যদিকে কিংস অ্যারেনাতে ম্যাচের প্রথম মিনিটেই লিড নেয় ব্রাদার্স ইউনিয়ন। গোল করেন সেনেগালের মিডফিল্ডার সেনে চেইখ (১-০)। তবে ম্যাচের ১৮ মিনিটে গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড পা ওমর বাবুর গোলে ম্যাচে সমতা আনে ফর্টিস (১-১)। এরপর আর ব্যবধান বাড়াতে পারেনি দু'দলের কেউই। তাই ১-১ গোলের ড্র'তেই শেষ হয়েছে ম্যাচটি। এই তিনটি ম্যাচ দিয়েই শেষ হয়েছে প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা। পরবর্তী ম্যাচ আগামী শুক্রবার। তবে মঙ্গলবার থাকছে ফেডারেশনকাপের ম্যাচ।