প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঘরোয়া ক্রিকেটের লড়াই এনসিএল টি২০। আসরের প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন সিলেট বিভাগের জিসান আলম। ঢাকার বিপক্ষে ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে ঝোড়ো গতিতে কাটায় কাটায় একশ রান করেন এই তরুণ ব্যাটার -ওয়েবসাইট
মাঠে গড়িয়েছে জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি২০। বুধবার উদ্বোধনী দিনেই মাঠে নামছে ৮টি দলই। দুপুরে সিলেট স্টেডিয়াম এবং আউটার মাঠে লড়ছে চার দল। এর মধ্যে চট্টগ্রামের হয়ে খেলেছেন তামিম ইকবাল। দীর্ঘদিন পর মাঠের ক্রিকেটে ফিরলেন সাবেক এই অধিনায়ক। তবে ব্যাট হাতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। রংপুরের বিপক্ষে ব্যাট হাতে এদিন এক ছয় ও এক চারের মারে ১০ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তামিম। রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে মাঠে নামেন আজিজুল হাকিম তামিম। ব্যাট করতে নেমেই দারুণ ফিফটি হাঁকালেন। শুরু থেকেই আগ্রাসী খেলতে থাকেন তিনি। রাজশাহী বোলারদের রীতিমতো শাসন করেছেন। তবে ৩১ বলে ৫৩ রান করার পর ক্যাচ আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে।
আগ্রাসী ব্যাটিং যাকে বলে। জাতীয় ক্রিকেট লিগের উদ্বোধনী ম্যাচেই ঝোড়ো সেঞ্চুরি জিসান আলমের। শুরুর ম্যাচেই জিসান আলম যেন বার্তাই দিয়ে রাখলেন একপ্রকার। সিলেট বিভাগের হয়ে ওপেন করতে নেমে ১০ ছক্কায় স্বীকৃত টি২০তে প্রথম শতকের দেখা পেলেন ডান হাতি ব্যাটার।
বুধবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় ঢাকা ও সিলেট। আগে ব্যাট করে জিসান আলমের সেঞ্চুরি ও বাকিদের টুকটাক সংগ্রহে ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রানের সংগ্রহ পায় চায়ের নগরীর বিভাগটি। জবাবে আরিফুল ইসলাম ও শুভাগত হোমের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ম্যাচ জিতে নেয় ঢাকা। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলল তারা। একদম শেষ বল পর্যন্ত রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছে ঢাকা। একই দিনে বরিশালের বিপক্ষে ৩১ রানের দারুণ জয়ে আসর শুরু করল ঢাকা মেট্রো।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১২ রান। সিলেটের তোফায়েল আহমেদের করা ওভারটির প্রথম ৫ ডেলিভারি থেকে ৭ রান নিতে পারে ঢাকা বিভাগ। শেষ বলে জয়ের জন্য ঢাকার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ রান। ব্যাটিং প্রান্তে ছিলেন শুভাগত হোম। ছক্কা মেরে রোমাঞ্চকর জয় এনে দিলেন দলকে।
জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি২০-র উদ্বোধনী ম্যাচেই চার ছক্কার ঝড় বয়ে গেছে। প্রথম ইনিংসে রেকর্ড ১০ ছক্কায় মাত্র ৫২ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন জিসান আলম। তরুণ এই ডান হাতি ব্যাটারের ঝোড়ো ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রান করেছিল সিলেট বিভাগ।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জিসানের ইনিংসেরই পুনরাবৃত্তি ঘটালেন ঢাকার তরুণ ব্যাটার আরিফুল ইসলাম। ৪৬ বলে ৯৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়েই আউট হয়ে গেছেন যদিও। তবে তার দল ঠিকই জয় পেয়েছে। ৬ উইকেটের জয়ে আসর শুরু করল ঢাকা বিভাগ।
বুধবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মূল মাঠে বুধবার ঢাকা বিভাগের সঙ্গে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিক দল। ওপেনার তৌফিক ও জিসান আলমের ব্যাটে ৪৯ রানের জুটি পায় দলটি। তবে শুরু থেকে মন্থর গতিতে ব্যাট চালানো জিসান সময় বাড়ার সঙ্গে রানের গতিও বাড়িয়েছেন।
এনসিএলে এবারের আসরে প্রথম সেঞ্চুরি পেতে জিসানের খরচ করতে হয়েছে ৫২ বল। তবে প্রথম অর্ধশতক পেতে ৪০ বল খেলতে হয়েছে সিলেটের ওপেনারের। পরবর্তী অর্ধশতক করতে মাত্র ১২ বল খেলেছেন এ ডান হাতি। ম্যাচের ১৭তম ওভারে নাজমুল হোসেন অপুর বলে আউট হওয়ার আগে এ ব্যাটার ৫৩ বলে করেন ১০০ রান। যেখানে চার বাউন্ডারির সঙ্গে ছিল ১০ ছক্কা।
জিসানের খুনে ব্যাটিং দেখা গিয়েছে ম্যাচের ১৪তম ওভারে। অফস্পিনার মোহাম্মদ আরাফাতের ওভারে ৫ ছক্কায় তুলেছেন ৩২ রান। পরবর্তী ওভারে সুমন খানের ওপর চড়াও হন এ ব্যাটার। সুমনের ওভারে ডাবল ছক্কায় সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছান তিনি। ১৬তম ওভারে নজমুল ইসলাম অপুর বলে সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরি করে দুহাত উঁচিয়ে ধরেন তিনি, অপুর বলেই পরে বোল্ড হয়ে থামে তার স্মরণীয় ইনিংস। স্বীকৃত টি২০তে প্রথম শতকের দেখা পেয়েছেন ডান হাতি ব্যাটার। বাংলাদেশিদের মধ্যে যা চতুর্থ দ্রম্নততম। এর আগে পারভেজ হোসেন ইমনের (৪২ বল)। তামিম ইকবালের ৫০ বলের সেঞ্চুরি এবং নাজমুল হোসেন শান্তর ৫১ ও ৫২ বলে সেঞ্চুরি আছে।
বড় টার্গেট তাড়ায় দলীয় ২ রানের মাথায় অধিনায়ক সাইফ হাসানকে হারায় ঢাকা। ব্যক্তিগত ১৭ রানে ফিরেছেন আরেক ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলীও। এরপরই খুনে ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন আরিফুল ইসলাম। জিসানের চেয়েও বিধ্বংসী ইনিংসে ৪৬ বলে ২০৪.৩৫ স্ট্রাইক রেটে ৯৪ রান করে ফেরেন সাজঘরে। ঝোড়ো ইনিংসটিতে ৬টি চার ও ৮টি ছক্কার মার মেরেছেন। শেষ বলে জয়ের জন্য ঢাকার প্রয়োজন ছিল ৫ রান। তোফায়েল আহমেদের করা শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে ঢাকাকে ম্যাচ জেতান শুভাগত হোম চৌধুরী।
দিনের অন্য ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে ঝড় তোলেন ঢাকা মেট্রোর টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার। ইমরানুজ্জামানের ৩৩ বলে ৫৩, নাঈম শেখের ৩৫ বলে ৬৫ ও তাজিবুল ইসলামের ২৫ বলে ৩৬ রানের তিনটি ইনিংসে ভর করে ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রানের পুঁজি পায় ঢাকা মেট্রো। জবাব দিতে নেমে শুরুতেই বিদায় নেন বরিশালের দুই ওপেনার। ওয়ানডাউনে নামা ফজলে মাহমুদ রাব্বি ৫২ বলে ৭৭ রানের ইনিংস খেললেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি। শেষদিকে সোহাগ গাজী ৩২ বলে ৪০ করলেও টি-টোয়েন্টির চাহিদা মেটাতে পারেননি। ফলে ১৬২ রানেই থামতে হয় বরিশালকে।