চট্টগ্রামকে বিদায় করে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খুলনা

প্রকাশ | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:১৬

ক্রীড়া প্রতিবেদক
মেহেদি হাসানের শর্ট অব লেংথ বল উড়িয়ে মারলেন ইয়াসির আলি। কিন্তু দূরত্ব পার করতে পারলেন না। ডিপ মিড উইকেট সীমানায় ক্যাচ নিতে কোনো ভুল করলেন না মোহাম্মদ মিঠুন। ইয়াসিরের বিদায়ে মিইয়ে গেল চট্টগ্রামের আশা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচ জিতে নিল খুলনা। ইয়াসিরের উইকেটের আগে-পরেও চমৎকার বোলিং করেন বাঁহাতি পেসার মেহেদি। মাসুম খানও করেন আঁটসাঁট বোলিং। নুরুল হাসান সোহানের ফিফটির পর দুই পেসারের দারুণ প্রদর্শনীতে চট্টগ্রামকে ৭ রানে হারিয়ে ফাইনালের আশা বেঁচে রইল খুলনার। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার ১৪৭ রানের লক্ষ্যে ৬ উইকেটে ১৩৯ রানে থামে চট্টগ্রাম। এলিমিনেটর ম্যাচ হেরে এনসিএল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে চতুর্থ হয়ে বিদায় নিল তারা। আর প্রথম চার ম্যাচে মাত্র এক জয় পাওয়া খুলনা পরের চার ম্যাচে সবকটি জিতে পেয়ে গেল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের টিকেট। ঢাকা মেট্রো ও রংপুরের ম্যাচের পরাজিত দলের বিপক্ষে ফাইনালের টিকেট পেতে লড়বে তারা। দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেওয়া ইনিংসে ৩৯ বলে ৫২ রান করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন সোহান। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন মেহেদি ও মাসুম। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে এনামুল হকের উইকেট হারায় খুলনা। পাল্টা আক্রমণে চাপ আসতে দেননি আজিজুল হাকিম তামিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। মাত্র ২৪ বলে তারা যোগ করেন ৪৪ রান। দ্বিতীয় ওভারে ইফরান হোসেনের বলে ম্যাচের প্রথম ছক্কা মারেন আজিজুল। পরের বল চমৎকার কাট শটে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে মারেন বাউন্ডারি। এক ওভার পর নাঈম হাসানের বল ছক্কায় ওড়ান মিঠুন। পরের ওভারে আহমেদ শরিফের বলে ছক্কা মারেন আজিজুল। ওই ওভারেই তরুণ ওপেনারকে থামান শরিফ। বড় শটের চেষ্টায় মিড অফে ক্যাচ দেন আজিজুল (১৬ বলে ২০)। পাওয়ার পেস্নর শেষ ওভারে ইফরানের বলে আলগা শটে বিদায় নেন মিঠুন (১২ বলে ১৬)। এরপর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন ইমরুল কায়েস ও নুরুল হাসান সোহান। তবে রানের গতি বাড়াতে পারেননি তারা। সাদিকুর রহমানের দারুণ থ্রোয়ে রান আউট হন ইমরুল, ভাঙে ৩১ বল স্থায়ীূ ৩১ রানের জুটি। নাহিদুল ইসলামকে নিয়ে এগোতে থাকেন সোহান। আশরাফুল হাসানের বলে দুটি চার মারেন খুলনা অধিনায়ক। ১৪তম ওভারে ইফরানের বলে ছক্কার পর বাউন্ডারি মারেন নাহিদুল। শেষ বলে স্ট্রাইক পেয়ে সোহানও পাঠান সীমানার ওপারে। ওই ওভারে ১৮ রান নিয়ে একশ পূর্ণ করে খুলনা। এরপর ঘুরে দাঁড়ায় চট্টগ্রাম। শেষ ৬ ওভারে আর মাত্র ৩৩ রান খরচায় বাকি ৬ উইকেট নিয়ে নেয় তারা। বিশেষ করে শেষ ৪ ওভারে শরিফ ও ফাহাদ হোসেন করেন চমৎকার বোলিং।নাহিদুলকে ফিরিয়ে ৪৩ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙেন শরিফ। পরের ওভারে ফাহাদের শিকার শেখ পারভেজ রহমান। ১৯তম ওভারে শরিফের বল ছক্কায় উড়িয়ে ৩৮ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন সোহান। পরের বলেই অবশ্য তাকে বিদায় করেন শরিফ। এরপর আর গতি পায়নি খুলনার ইনিংস। দেড়শর আগেই গুটিয়ে যায় তারা। ২৬ রানে ৪ উইকেট নেন শরিফ। ফাহাদের শিকার ২০ রানে ৩টি। রান তাড়ায় হতাশ করে খুলনার ওপরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। তিন নম্বরে নামা শাহাদাত হোসেন পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৪ বলে ২৩ রান করে ফেরেন তিনি। ১১তম ওভারে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ইরফান শুক্কুরের বিদায়ের সময় চট্টগ্রামের সংগ্রহ মাত্র ৬৪ রান। এরপর নাঈম হাসানকে নিয়ে চেষ্টা করেন ইয়াসির। দুজনের ৩৮ বলের জুটিতে আসে ৫৫ রান। ১৩তম ওভারে টিপু সুলতানের বলে ছক্কার পর চার মারেন ইয়াসির। পরের ওভারে শেখ পারভেজ রহমানের বলও পাঠান সীমানার ওপারে। এক ওভার পর আল আমিন হোসেনের বলে চার-ছক্কা মেরে সমীকরণ কিছুটা সহজ করেন চট্টগ্রাম অধিনায়ক। পরের ওভারে মেহেদির বলে ইয়াসিরের বিদায়ে অনেকটাই শেষ হয়ে যায় আশা। দারুণ বোলিং করা শরিফের কাছ থেকে ব্যাটিংয়েও বিশেষ কিছুর আশা ছিল চট্টগ্রামের। কিন্তু ৫ রান করতে ১২ বল খেলে উল্টো বিপদ বাড়ান তিনি। শেষ ওভারে ২৪ রানের সমীকরণে দুই চার ও এক ছক্কা মারেন নাঈম। তাতে পরাজয়ের ব্যবধানই কমে শুধু। সংক্ষিপ্ত স্কোর খুলনা: ১৯.৩ ওভারে ১৪৬ (এনামুল ৪, আজিজুল ২০, মিঠুন ১৬, ইমরুল ১৭, সোহান ৫২, নাহিদুল ১৮, পারভেজ ৪, মাসুম ২, মেহেদি ১, টিপু ০, আল আমিন ০*; ফাহাদ ৩.৩-০-২০-৩, ইফরান ৪-০-৪২-১, নাঈম ৪-০-২৫-০, শরিফ ৪-০-২৬-৪, আশরাফুল ৪-০-২৭-০) চট্টগ্রাম: ২০ ওভারে ১৩৯/৬ (জয় ৮, সাদিকুর ১১, শাহাদাত ২৩, মুমিনুল ৮, ইরফান ৭, ইয়াসির ৩৭, নাঈম ৩৪*, শরিফ ৫*; আল আমিন ৪-০-৪৬-০, নাহিদুল ৩-০-২৩-১, মাসুম ৪-০-২১-২, পারভেজ ৪-০-২৪-০, মেহেদি ৪-০-১২-২, টিপু ১-০-১২-০) ফল: খুলনা ৭ রানে জয়ী ম্যাচসেরা: নুরুল হাসান সোহান