ঢাকা মেট্রোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন রংপুর

প্রকাশ | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) টি২০'র ফাইনালে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে উইকেট পাওয়ার পর রংপুর বিভাগের খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস। শেষ পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোকে হারানোর সঙ্গে শিরোপা নিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা -ওয়েবসাইট
জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) প্রথম কোয়ালিফায়ারে ঢাকা মেট্রোকে হারিয়েই ফাইনালে উঠেছিল রংপুর বিভাগ। মঙ্গলবার শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে তাদের হারিয়েই শিরোপা উদযাপনে মেতেছে রংপুর। ফাইনালে ৫ উইকেটের জয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অধিনায়ক আকবর আলির দল। রংপুরের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কাজটা সেরে রেখেছিল দলটির বোলাররা। বিশেষ করে দুই পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও আলাউদ্দিন বাবু। দুজনের তোপেই সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মাত্র ৬২ রানে অলআউট হয় ঢাকা মেট্রো। বাংলাদেশের কোনো স্বীকৃত টি২০্থা ফাইনালে যা সর্বনিম্ন স্কোর। এমনকি এর আগে ১০০ রানের নিচে অলআউট হয়নি কোনো দল। আগের সর্বনিম্ন রানের স্কোরটি যাদের ছিল সেই রাজশাহী কিংস ২০১৬ বিপিএলের ফাইনালে ১০৩ রান করেছিল ঢাকা ডায়নামইটসের বিপক্ষে। শুরুটা যেভাবে ধাক্কায় হয়েছিল ঢাকার তাতে এই স্কোরও পাওয়া কঠিন ছিল। কেননা দলীয় ১৬ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারায় তারা। শামসুর রহমান শুভ (১৪) ও আবু হায়দার রনি (১৩) দুটি দশোর্ধ্ব ইনিংস না খেললে ফিফটি হতো কিনা তা নিয়েও সন্দেহ ছিল। সমান ১২ রানে ৩ টি করে উইকেট নিয়েছেন মুগ্ধ ও বাবু। তবে এই ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রংপুরও বিপদে পড়েছিল। ওপেনিংয়ে জুটিতে ১৪ রান করা দলটি একটা সময় ১৮ রানে ৪ উইকেট হারায়। শেষ দিকে অবশ্য আরিফুল হক ও আনামুল হক আনাম দুটি ১৪ রানের ইনিংস খেলে দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত করেন। এতে ৫২ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় পায় রংপুর। ফাইনাল ম্যাচ যেন নির্ধারিত হয়ে গেল প্রথম ২৮ বলে। টস হেরে ব্যাট করতে নামা ঢাকা মেট্রো মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ আর আলাউদ্দিন বাবুর তোপে ওই সময়ে ১৬ রান তুলতেই হারিয়ে বসল পাঁচ উইকেট। এরপর টেনেটুনে পঞ্চাশ পেরুতে পারলেও ম্যাচ জেতার আর বাস্তবতা ছিলো না তাদের। লিগ পর্বে সাত ম্যাচ খেলে অপরাজিত ছিল মেট্রো। কিন্তু শেষ দিকে এসে হার সেই সাফল্য প্রশ্নবিদ্ধ করলো। প্রথম কোয়ালিফায়ারে রংপুরের কাছে হেরেছিল তারা। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খুলনার বিপক্ষে লো স্কোরিং ম্যাচ ডিফেন্ড করে ফাইনালে ওঠে ঢাকার দলটি। কিন্তু স্কোরবোর্ডে মাত্র ৬২ রান, দ্রম্নত পাঁচ উইকেট নিলেও অসম্ভাব্য জয়ের দেখা পায়নি। রংপুর ১১.২ ওভারে ৫ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে ফেলে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে রংপুরকে ৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় মেট্রো। জবাবে খেলতে নেমে রংপুরও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। মেট্রোর মতো পাওয়ার পেস্নতে তারা ৫ উইকেট না হারালেও পড়েছিল চারটি উইকেট। অধিনায়ক আকবর আলী ও নাঈম ইসলাম রানের খাতা না খুলেই আউট হন। ওপেনার চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান (৯) ও আব্দুলস্নাহ আল মামুন (২) আউট হন দ্রম্নত। ১৪ থেকে ১৮- ৪ রানের ব্যবধানে চার উইকেট হারানোর পর তানভীর হায়দার ও আরিফুল হক মিলে ২৪ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু রাকিবুলের বলে আলিসকে ক্যাচ দিয়ে ১৪ রানে আরিফুল বিদায় নিলে জুটি ভাঙে। এরপর বাকি পথটা অনায়াসেই পাড়ি দেন তানভীর ও আনামুল হক আনাম। দুইজনের অবিচ্ছিন্ন ২৩ রানের জুটিতে ১২তম ওভারে জিতে যায় রংপুর। তানভীর ৮ ও আনামুল ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন। মেট্রোর বোলারদের মধ্যে আলিস সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নিয়েছেন। একটি উইকেট নেন রাকিবুল হাসান ও আবু হায়দার রনি। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় ঢাকা মেট্রো। কিন্তু মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ এবং আলাউদ্দিন বাবুর বোলিং তোপে পাওয়ার পেস্নতেই ১৬ রানে ৫ উইকেট হারায় তারা। ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে আসা যাওয়ার মিছিলে মেট্রোর দুই ব্যাটার কেবল দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন। শামসুর রহমান শুভ ১৪ ও আবু হায়দার রনি খেলেন ১৩ রানের ইনিংস। অতিরিক্ত খাত থেকে এসেছে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১ রান। মেট্রো অধিনায়ক ও আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক নাঈম শেখ এদিন শূন্যতে আউট হয়েছেন। রংপুরের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন মুগ্ধ ও আলাউদ্দিন। এদিন ১৯তম উইকেট নিয়ে আসরের সর্বোচ্চ বোলার হন আলাউদ্দিন। ফাইনাল ম্যাচ যেন নির্ধারিত হয়ে গেল প্রথম ২৮ বলে। টস হেরে ব্যাট করতে নামা ঢাকা মেট্রো মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ আর আলাউদ্দিন বাবুর তোপে ওই সময়ে ১৬ রান তুলতেই হারিয়ে বসল পাঁচ উইকেট। এরপর টেনেটুনে পঞ্চাশ পেরুতে পারলেও ম্যাচ জেতার আর বাস্তবতা ছিলো না তাদের। মেট্রোকে গুঁড়িয়ে তাই অনায়াসে জাতীয় লিগের টি-টোয়েন্টি আসরের প্রথম শিরোপা জিতল রংপুর বিভাগ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জাতীয় লিগের টি২০ আসরের ফাইনাল হয়েছে চরম লো স্কোরিং। তাতে ৫ উইকেটে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রংপুর বিভাগ। ফাইনাল মঞ্চে স্রেফ ৬২ রানে অলআউট হয়ে যায় ঢাকা মেট্রো। ওই রান তুলতেও ৫ উইকেট হারায় রংপুর, যদিও ম্যাচ শেষ করে নেয় ৮.৪ ওভার আগে। রংপুরের জয়ে বড় ভূমিকা তাদের দুই পেসারের। মুগ্ধ ও আলাউদ্দিন দুজনেই ঠিক ১৩ রান খরচায় পান সমান ৩টি করে উইকেট। ম্যাচের একদম তৃতীয় বলেই ইমরানুজ্জামানকে ফেরান মুগ্ধ। পরের ওভারে নাঈম শেখকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান আলাউদ্দিন। তৃতীয় ওভারে আমিনুল ইসলাম বিপস্নবকে বোল্ড করে দেন মুগ্ধ। পঞ্চম ওভারে তাহজিবুল ইসলামের স্টাম্প আলাউদ্দিনের বলে উড়ে গেলে ১৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় মেট্রো। অভিজ্ঞ শামসুর রহমান এই সংকটে ত্রাতা হতে পারেননি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও দেখাতে পারেননি বিপদ থেকে বেরুনোর পথ। শামসুরের ১৪ রান তাও দলের সর্বোচ্চ। তিনি ফেরেন চৌধুরী রিজওয়ানের বলে। ৬ রান করে এলবিডবিস্নউতে কাটা পড়েন সৈকত। টেল এন্ডাররা কোনরকমের পঞ্চাশ পার করালেও তা নিয়ে লড়াই করা ছিলো অসম্ভব। সহজ রান তাড়ায় নেমে ১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলো রংপুরও। আলিস আল ইসলাম আর আবু হায়দার রনি চেষ্টা চালালেও চাপ জারি রাখা যায়নি। আরিফুল হক ও এনামুল হক এনাম মিলে দলকে সহজেই লক্ষ্যে নিয়ে যান।