মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুক্রবার বিপিএলে রাজশাহীর বিপক্ষে সেঞ্চুরি পেয়ে উচ্ছ্বসিত চট্টগ্রামের পাকিস্তানি ক্রিকেটার উসমান খান -ওয়েবসাইট
দানবীয় ব্যাটিংয়ে চিটাগং কিংসকে বিশাল পুঁজি এনে দেন উসমান খান। করলেন এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ( বিপিএল) চলতি আসরের প্রথম সেঞ্চুরিও। তাতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় দলটি। এরপর বাকি কাজ সারেন বোলাররা। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে দারুণ জয় পায় মোহাম্মদ মিঠুনের দল। যা আসরে দলটির প্রথম জয়।
শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের প্রথম ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীকে ১০৫ রানে হারিয়েছে চিটাগং কিংস। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২১৯ রান তোলে তারা। জবাবে ১৭.১ ওভারে ১১৪ রান তুলে গুটিয়ে যায় এনামুল হক বিজয়ের দল রাজশাহী।
দুর্বার রাজশাহীকে ১০৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে চলতি বিপিএলের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে চিটাগং কিংস। রানের হিসেবে বিপিএলের ইতিহাসে যৌথভাবে এটি দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় জয়। অন্যদিকে এক ম্যাচ জয়ের পর ফের হারের কবলে পড়েছে রাজশাহী।
রানের হিসেবে বিপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়টি ১১৯ রানের। ২০১৩ সালে শেরে বাংলায় সিলেট রয়্যালসকে এই ব্যবধানে হারিয়েছিল এই চিটাগংয়ই। এরপর ২০১৯ সালে রংপুর রাইডার্সকে ১০৫ রানে কুমিলস্না ওয়ারিয়র্স, একই আসরে খুলনা টাইানসকে সমান ব্যবধানে হারিয়েছিল ঢাকা ডাইনামাইটস। ১০৫ রানের জয় বিপিএলের ইতিহাসে রানের হিসেবে দ্বিতীয় সবচেয়ে জয়। অর্থাৎ যৌথভাবে তৃতীয় দল হিসেবে ১০৫ রানের ব্যবধানে জিতলো চিটাগং।
২২০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো করতে পারেনি রাজশাহী। প্রথম ওভারেই ওপেনার সাব্বির হোসেনকে হারায় তারা। অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়ও ব্যর্থ। তবে কিছুটা চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ হারিস। ১৩ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩২ রানের ইনিংস খেলে স্বদেশী মোহাম্মদ ওয়াসিমের শিকার হন তিনি।
টপ অর্ডারের মতো ব্যর্থ মিডল অর্ডারও। ইয়াসির আলী (১৬), আকবর আলী (১৮) ও রায়ান বার্ল (১০) উইকেটে সেট হয়ে দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ফলে পুঁজি একশ হওয়ার আগেই লেজ বেরিয়ে যায় দলটির। পারেননি লেজের ব্যাটাররাও লড়াই করতে। ফলে বড় ব্যবধানেই হারতে হয় রাজশাহীকে।
চিটাগংয়ের পক্ষে ৪ ওভার বল করে ১৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়ে সেরা বোলার আলিস আল ইসলাম। ২৩ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন আরাফাত সানিও। ২টি শিকার শরিফুল ইসলামের।
তবে চিটাগংয়ের জয়ের মূল ভিত্তিটা গড়ে দিয়েছিলেন উসমানই। যদিও আগের ম্যাচে সাত উইকেট তুলে নেওয়া তাসকিন প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন। খালি হাতেই ফেরান পারভেজ হোসেন ইমনকে। শুরুতে উইকেট হারালেও আক্রমণে কমতি ছিল না চিটাগংয়ের। যার নেতৃত্ব দেন উসমান। তাসকিনের পরের ওভারেই টানা দুটি বাউন্ডারি আদায় করে নেন। এর পরের ওভারে তো হাসান মুরাদকে মারেন টানা চারটি বাউন্ডারি। এরমধ্যে একটি ছক্কা।
পরের ওভারে মোহর শেখ অন্তরকেও তিনটি বাউন্ডারি মারেন উসমান। আর পাওয়ার পেস্নর শেষ ওভারে পার্টিতে যোগ দেন গ্রাহাম ক্লার্ক। শফিউল ইসলামের করা সে ওভারে একটি ছক্কাসহ পাঁচটি বাউন্ডারিতে ২২ রান তুলে নেন তিনি। তাতে হুহু করতে বাড়তে থাকে পুঁজি। ৬৩ বলে ১২০ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। ক্লার্ককে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন সোহাগ গাজী। ২৫ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪০ রান করেন ক্লার্ক।
এরপর অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন উসমান। ৩১ বলে ৬৩ রানের আরও একটি জুটি গড়েন তারা। ১৫ বলে সমান দুটি করে চার ও ছক্কায় ২৮ রান করে রায়ান বার্লের শিকার হন মিঠুন। তবে এক প্রান্ত আগলে এগিয়ে যেতে থাকেন উসমান। ১৯তম ওভারে তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে খেলেন ১২৩ রানের ইনিংস। ৬২ বলের ইনিংসটি সাজান ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কায়। ৮ বলে ১৯ রানের ক্যামিও খেলে অপরাজিত থাকেন হায়দার আলী। তাতে দুইশ ছাড়ানো পুঁজি মিলে চিটাগংয়ের।