মাঠে রানের উৎসব মন ভরাচ্ছে খেলা দেখতে আসা দর্শকদের। কিন্তু খেলার আগে পর্যন্ত বাকি সব ইসু্যতেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) চলছে ব্যাপক সমালোচনা। টিকিট না পেয়ে গেট ভেঙেছেন দর্শকরা। হয়েছে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা। আবার প্রেসিডেন্সিয়াল বক্সে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দুর্ব্যবহার সবই দেখা গিয়েছে বিপিএলের প্রথম পর্বে।
বিপিএল সিলেটে চলে গেলেও বিতর্কটা যেন রেখে গেছে ঢাকাতেই। এবারে অভিযোগের তীর বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের দিকে। বোর্ডের আরেক পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিমের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ এসেছে তার প্রতি। দেশের এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে আলাপকালে পরিচালক ফাহিম স্বীকার করেছেন বিষয়টি।
গত ৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে ঘটনাচক্রে বিসিবির পরিচালক হওয়া নাজমুল আবেদিন ফাহিম দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়া নিয়ে নেতিবাচক অবস্থানে চলে গেছেন। কাজে বাধা আসলে আর দায়িত্বে থাকতে চান না বলে জানিয়ছেন তিনি। তবে কাজে বাধা এসেছে কিনা তা স্পষ্ট করেননি এই সাবেক কোচ ও বর্তমান সংগঠক। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে জালাল ইউনূস ও সাজ্জাদুল আলম ববির বদলে বিসিবিতে পরিচালক হয়ে আসেন ফাহিম ও ফারুক আহমেদ। ফারুক পরে হন সভাপতি। নতুন পরিচালক হওয়া ফাহিমকে এরপর থেকে বিসিবির গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়েই কথা বলতে দেখা গেছে।
সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি মনে করা হয় তাকে। অনানুষ্ঠনিকভাবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের দায়িত্বও সামলাচ্ছেন ফাহিম। আর এসবের মধ্যে রোববার একটি গণমাধ্যমে খবর বের হয় বিসিবি সভাপতি ফারুকের দুর্ব্যবহারের কারণে পদত্যাগ করতে চান ফাহিম। এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন,' হয়ত বলতে পারি (ওই গণমাধ্যমকে) যেভাবে প্রত্যাশা করেছিলাম সেরকম না হলে আমি সেরকম (পদত্যাগ) চিন্তা ভাবনা করব। একদম কি বলেছি সেটা এখন মনে করতে পারছি না।'
ঠিক কী বলেছিলেন বোর্ড সভাপতি, সেটা অবশ্য ক্যামেরার সামনে প্রকাশ করেননি দেশের এই বর্ষীয়ান কোচ ও ক্রিকেট সংগঠক। 'ওরকম একটা মন্তব্য আমি স্পেসেফিক বলতে চাই না। মন্তব্যটা কী ছিল, তবে সেটা আমাকে খুবই হতাশ করেছে। সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে এই মুহূর্তে ক্রিকেট বোর্ড বা প্রেসিডেন্ট হয়ত আমাকে তার আত্মবিশ্বাসের জায়গায় নিচ্ছেন না। আমি জানিনা কেন প্রেসিডেন্ট আমার ব্যাপারে কমেন্ট করেছে। তবে আমি খুব অবাকও হয়েছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই আমি মোটেই আশা করিনি ওরকম একটা মন্তব্য। আর সেটা অনেকগুলো মানুষের সামনে। সেখানে মন্ত্রণালয়ের মানুষ ছিল।'
তাহলে কি সেরকম পরিস্থিতি এসেছে? এই প্রশ্ন করা হলে ফাহিম জানা, হ্যাঁ, কাজ যদি আমার সন্তোষজনক না হয় সেক্ষেত্রে হয়ত সরে যেতে পারি। বিসিবি সভাপতির দুর্ব্যবহার প্রসঙ্গে স্বীকার বা অস্বীকার কোনো কিছুই করেননি তিনি। পুরো বিষয় এড়িয়ে গিয়ে ফাহিম বলেন,' সব মিলিয়ে যদি যা চেয়েছিলাম না হয়, সেটা যদি অসন্তোষজনক হয় তাহলে থাকা যাবে না।।'
এমনকি বোর্ড থেকে সরে যাওয়ার কথাও সেই টিভি চ্যানেলের সামনে বলেছেন নাজমুল আবেদিন ফাহিম, 'আমার মাঝেমাঝে মনে হয় বোর্ডে না থাকলেই বুঝি ভালো হয়। কারণ বোর্ডের বাইরে থেকে আমি যে ভূমিকা রাখতে পারি বা কথা বলতে পারি, তা বোর্ডে থেকে সম্ভব না। আমি যদি বোর্ডে থাকি, আমাকে কাজ করতে হবে। যদি কাজ করতে না পারি, তারচে ভালো বাইরে থাকা।'
সরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও এখনই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও স্পষ্ট করেননি তিনি,' এভাবে বলিনি, মানে বলতে চাই যে, আমি যদি সন্তুষ্ট না থাকি তাহলে থাকতে চাইব না। এটা একটা অপশন খোলা থাকল।'
আলাপের এক পর্যায়ে বোর্ডে কাজ করার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা পাওয়া না পাওয়ার কথাও তুলেছেন সাকিব-সৌম্য-লিটনদের গুরু ফাহিম।