টেলিভিশন পর্দায় দৃশ্যটা ভেসে উঠতেই সবার চোখ আটকে গেল তাতে। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের প্রেসিডেন্ট বক্সে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের এক পাশে বসে আছেন আকরাম খান ও অন্যপাশে বিসিবির আরেক পরিচালক নাজমূল আবেদীন ফাহিম।
অন্য সময় হলে এমন দৃশ্য উলেস্নখযোগ্য কিছু নয়। কিন্তু এখন অনেক কিছু। রোববার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদেকে নিয়ে রীতিমতো বিষোদ্?গারই করেছেন ফাহিম। তার দাবি, ফারুক আহমেদ তাকে উদ্দেশ্য করে অসন্তুষ্ট হওয়ার মতো মন্তব্য করেছেন। বর্তমান বোর্ডে চাইলেও কাজ করতে পারছেন না বলেও জানিয়েছেন ফাহিম।
এ ব্যাপাওে রোববারই সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন ফারুক। ফাহিমের সঙ্গে সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন। হয়তো তারই ধারাবাহিকতা আজ দুজনের পাশাপাশি বসে খেলা দেখা। কিন্তু এর ঘণ্টাখানেক আগে পাশের আউটার স্টেডিয়ামে ঢাকা ক্যাপিটালসের অনুশীলন শেষে নাজমূল আবেদীন ফাহিমকে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন বিসিবি থেকে পদত্যাগ করা সাবেক পরিচালক ও ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ। তিনি এমনও বলেছেন, নাজমূল আবেদীন ফাহিমের মধ্যে লোভ-লালসা ছাড়া তিনি কিছু দেখেন না।
যখন তাদের এই মনোভাব দেখি তখন খারাপ লাগে। দুজনই সিনিয়র মানুষ, আমরা যাদেরকে অনেক সম্মান করি। তাদের যখন এমন দেখি, ক্রিকেটার হিসেবে লজ্জিত হই। আসলেই আমরা কী ক্রিকেটাররা এত বেশি লোভী নাকি!
সাংবাদিকদের খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, 'দুজনই সাবেক ক্রিকেটার, তাদের কেন ইগোর সমস্যা হবে? তারা তো ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য আসছেন। তারা যখন আসেন, তখন তো অনেক কমিটমেন্ট দেখেছিলাম। বিশেষ করে ফাহিম (নাজমূল আবেদীন) ভাই তো বলছিলেন, উনি অনেক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করছেন, দেখছেন, চিন্তা করছেন। তো সেগুলো আমি এখন দেখতেছি না। এখন দেখতেছি লোভ লালসার মতো হয়ে যাচ্ছে যে, ক্রিকেট অপারেশনস না পেলে আমি কাজ করব না, পদত্যাগ করব। এটা তো লোভ-লালসা!'
সুজনের প্রশ্ন-এমন 'লোভ-লালসা' কেন আসবে? তিনি বলেন, 'ক্রিকেট অপারেশনসই নিতে হবে কেন? আমি যদি অন্য কমিটির চেয়ারম্যান হই, সেখানে সার্ভ করতে পারব না কেন? উনি (ফাহিম) কি ক্রিকেট অপারেশনসের মাস্টার? ওনার আগে তো আকরাম ভাই ক্রিকেট অপারেশনসের মাস্টার। উনি চাইতে পারেন। কারণ আকরাম ভাই বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক এবং অপারেশনসের চেয়ারম্যান ছিলেন।'
নাজমূল আবেদীন ফাহিম কোথায়, কাকে বলেছেন যে তিনি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব না পেলে পদত্যাগ করবেন; তা অবশ্য পরিষ্কার করেননি সুজন। বিসিবি সূত্র বরং এটি আগেই জানা গেছে যে, সর্বশেষ বোর্ড সভায় নাজমূল আবেদীন ফাহিমকে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ ও ওমেন্স উইং প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে বোর্ড সিদ্ধান্তটা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি।
ফারুক-ফাহিম দুজনের প্রতিই তার সম্মান আছে জানিয়ে কালেদ মাহমুদ সুজন এও বলেছেন, 'যখন তাদের এই মনোভাব দেখি তখন খারাপ লাগে। দুজনই সিনিয়র মানুষ, আমরা যাদেরকে অনেক সম্মান করি। তাদের যখন এমন দেখি, ক্রিকেটার হিসেবে লজ্জিত হই। আসলেই আমরা কী ক্রিকেটাররা এত বেশি লোভী নাকি!'
