জাতীয় দলে ফিরতে বিসিবিকে অপেক্ষায় রাখলেন তামিম

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিপিএলের কয়েকটি দলের অনুশীলন চলছিল মাঠে। কিন্তু সকাল থেকেই সিলেটে সংবাদমাধ্যমের ভিড় ফরচুন বরিশালের টিম হোটেলে। সেখানে বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবালের সঙ্গে আলোচনা ছিল নির্বাচক কমিটির। দীর্ঘ সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে বিকেলে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু জানালেন, সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে থাকতে বিসিবি ও নির্বাচকদের অনুরোধে ভাবার জন্য সময় নিয়েছেন তামিম। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য দল ঘোষণার শেষ হয় আগামী রোববার। দল ঘোষণার পরও অবশ্য চাইলে সেই দলে পরিবর্তন আনা যাবে পরের এক মাসে। তবে তামিমের সিদ্ধান্ত জানা যেতে পারে দিন দুয়েকের মধ্যেই। তামিমের সঙ্গে কথা বলার জন্যই বুধবার সকালে সিলেটে আসেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ। অন্য দুই নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক ও হান্নান সরকার সিলেটে ছিলেন আগে থেকেই। সকালে ১১টার পরপর শুরু হয় বৈঠক। লম্বা আলোচনার পর জাতীয় দলে না ফেরার সিদ্ধান্ত জানিয়েই দিয়েছিলেন তামিম। তবে দুপুরে প্রধান নির্বাচক আরেক দফায় কথা বলেন তার সঙ্গে। এরপর তিনি সময় নেন আরেকটু ভাবার জন্য। প্রধান নির্বাচক সিলেটে আসার আগেই মঙ্গলবার রাতে তামিমের সঙ্গে কথা বলে তাকে ফেরার প্রবল অনুরোধ জানান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বুধবার নির্বাচকদের প্রথম দফায় বৈঠকের পর তামিমের সঙ্গে আরেক দফায় কথা বলেন দলের কয়েকজন ক্রিকেটারও। দ্বিতীয় দফায় আলোচনার পর বিকালে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রধান নির্বাচক জানালেন,' বেশ কিছু ব্যাপারে আমরা খোলামেলা কথা বলেছি। ক্রিকেট নিয়ে কথা হয়েছে অবশ্যই। বর্তমান পরিস্থিতি, বাংলাদেশ ক্রিকেট, জাতীয় দল, বিপিএল, সবকিছু নিয়েই খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। তামিম ইকবালের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ে আপনাদের একটা আগ্রহ থাকবে, এটা খুবই স্বাভাবিক। এ ব্যাপারটা নিয়ে এর আগেই হয়তো তামিমের সঙ্গে আমাদের আরেকটু আলোচনা হতে পারত। যাই হোক, সামনে আমাদের একটা বড় ইভেন্ট আছে। আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো আলোচনাতেই সঙ্গে সঙ্গে ওই মুহূর্তে একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় না। কারণ এটা অনেক বড় একটা সিদ্ধান্ত।' ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের মাঠে ওয়ানডে সিরিজের পর তামিমকে আর দেখা যায়নি জাতীয় দলের জার্সিতে। সবশেষ টেস্ট খেলেছেন তিনি ২০২৩ সালের এপ্রিলে। আন্তর্জাতিক টি২০ তিনি সবশেষ মাঠে নেমেছেন ২০২০ সালের মার্চে। এই সংস্করণ থেকে অবসরের কথা জানান তিনি ২০২২ সালের জুলাইয়ে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে তিনি সরে দাঁড়ান। এরপর বোর্ডের কোনো ধরনের চুক্তিতে তিনি আর নেই। তার পরও তাকে নিয়ে আলোচনা থামেনি। বিশেষ করে, ওপেনিংয়ে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করার মতো নির্ভরযোগ্য কাউকে এখনও পায়নি দল। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে সেই শূন্যতা পূরণেই আবার তামিমের দুয়ারে কড়া নাড়েন নির্বাচকরা। ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য হয়তো সময়টুকু নিয়েছেন তামিম। এমনটাই বললেন প্রধান নির্বাচক,' আমাদের যেমন আমাদের ওপর বোর্ড আছে। বোর্ডের তরফ থেকে আমরা এসেছি। এখানে কোনো অসুবিধা নাই। পাশাপাশি খেয়াল করতে হবে, একটা খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে অনেক সময় এ সমস্ত ইসু্যতে ফেরত আসার ব্যাপারে তার ঘনিষ্ঠজন, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব অনেক সময়, কিংবা তার প্রিয় কোচ অথবা শুভাকাঙ্‌ক্ষী, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার একটা ব্যাপার থাকে। সেক্ষেত্রে একটু সময় নেওয়ার তো ব্যাপার এসেই যায়। আমাদের যেহেতু ১২ তারিখে দল ঘোষণা করতে হবে, তার আগেই আমাদেরকে দলটা দিতে হবে বোর্ডের কাছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, সময় আছে, তাকে সময় নিতে দেই, তাড়াহুড়োর কিছু নেই। তিনি একটা টুর্নামেন্ট খেলছেন, আমাদের প্রাথমিক আলোচনা আমরা সেরে নিয়েছি। আমাদের আলোচনার বিষয় আমাদের মধ্যেই থাক। যেহেতু আমি বললাম ব্যাপারটা আলোচনা করেছি, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে। সে সিদ্ধান্তের জন্য তামিম ইকবালকে একটু সময় দিতে হবে।'