বরিশালের জয় ছিনিয়ে নিলেন রংপুর রাইডার্সের সোহান

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে বাউন্ডারি হাঁকাচ্ছেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান -ওয়েবসাইট
শেষ ওভারে জয়ের জন্য রংপুর রাইডার্সের প্রয়োজন ছিল ২৬ রান। কাইল মেয়ার্সের করা ২০তম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে রাইডার্সদের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন নুরুল হাসান সোহান। পরের চার বলে আরো চার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সমীকরণ সহজ করেন তিনি। তাতে সমীকরণ দাঁড়ায় ১ বলে ২ রানে। শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন রংপুরের অধিনায়ক। ৬ ম্যাচ খেলে অপরাজিতই রইল রংপুর। বৃহস্পতিবার সিলেটে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৭ রান সংগ্রহ করে ফরচুন বরিশাল। দলের হয়ে ২৯ বলে অপরাজিত ৬১ রান করেছেন কাইল মেয়ার্স। জবাবে খেলতে নেমে ৩ উইকেট হাতে রেখে ইনিংসের শেষ বলে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় রংপুর। চলতি বিপিএলে শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচই উপহার দিলো রংপুর রাইডার্স। ফরচুন বরিশালের হাতে পাওয়া জয়টিই যেন ছিনিয়ে নিলেন রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। শেষ ওভারের ক্যামিওতে ক্রিকেটভক্তদের অবাক করে দিয়েছেন তিনি। সোহানের এই ব্যাটিংকে বর্ণনা করতে হলে একটি বিশেষণই বলতে হয়, সেটি হলো অবিশ্বাস্য। জয়ের জন্য শেষ ওভারে দরকার ছিল ২৬ রান। ৬ বলেই বাউন্ডারি হাঁকালেন সোহান। প্রথম চার বলে ৬, ৪, ৪ ও ৬ হাঁকানোয় শেষ ২ বলে দরকার ছিল ৬ রান। পঞ্চম বলে হাঁকালেন ৪ আর শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে রংপুরকে ৩ উইকেটের অবিশ্বাস্য এক জয় উপহার দেন সোহান। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ১৯৭ রান করে বরিশাল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বরিশাল জয় তুলে নেয় ৩ উইকেট হাতে রেখে। রংপুরের হয়ে শুরুর লড়াইটা করেছেন এক বাংলাদেশি তাওফিক খান এবং দুই পাকিস্তানি ইফতিখার আহমেদ ও খুশদিল শাহ। ওপেনার তাওফিক ২৮ বলে ৩৮ রান করে ফেরেন। শেষ দিকে দেশের উত্তরাঞ্চলের দলটিকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটি করছিলেন ইফতিখার ও খুশদিল। শাহিন আফ্রিদির করা ১৮তম ইফতিখান উইকেটের পেছনে ক্যাচ হলে রংপুরের জয়টা পাওয়া কঠিনই বলে মনে হলো। ৩৬ বলে ৪৮ রান করে ফেরেন ডানহাতি পাকিস্তানি ব্যাটার। এরপর কিছু শট খেলে লড়াই অব্যাহত রাখেন খুশদিল। তবে জয়ের জন্য সেটি যথেষ্ট বলে মনে হয়নি। ২৪ বলে ৪৮ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। ১৯তম ওভারে জাহানদাদের খানের করা ওভারে অবট্রাটিং দ্য ফিল্ড আউট হন শেখ মেহেদী। স্ট্র্যাইটে খেলছিলেন মেহেদী। বোলার জাহানদাদ এগিয়ে ক্যাচ নিতে আসলে নন-স্ট্রাইকপ্রান্ত থেকে আসা নুরুল হাসান সোহান বাধা সৃষ্টি করেন। মেহেদীর আউট হওয়ার দায় নিজের মাথায় নিয়েই বোধহয় অবিশ্বাস্য ইনিংসটি খেলেন সোহান। ৭ বলে তোলেন ৩২ রান। হাঁকান ৩ ছক্কা ও ৩ চার। এর আগে ব্যাট করতে নেমে খুব দেখেশুনে শুরু করে ফরচুন বরিশাল। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর নাজমুল হোসেন শান্ত প্রথম ৮ বলে কোনো রানই নেননি। এরপর আস্তে আস্তে হাত খুলতে শুরু করেন তারা। ৬১ বলে উদ্বোধনী জুটিতে তারা তোলেন ৮১ রান। ১১তম ওভারে দুজনকেই ফেরান কামরুল ইসলাম রাব্বি। শান্ত ৩০ বলে ৫ চার আর ১ ছক্কায় ৪১ এবং তামিম ৩৪ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ৪০ করে আউট হন। এরপর ঝড় তোলেন কাইল মায়ার্স। মাঝে ১৮ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ২৩ করে আউট হন তাওহিদ হৃদয়। মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদও ৪ বলে ২ করে সাজঘরে ফেরেন। ফাহিম আশরাফের ব্যাট থেকে আসে ৬ বলে ২০ রানের ক্যামিও। মায়ার্স শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে ৬১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। মারকুটে এ ইনিংসে একটি চারের সঙ্গে ৭টি ছক্কা হাঁকান এই ব্যাটার। এর মধ্যে শেষ ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনই হজম করেন ৩টি। রংপুরের হয়ে ৪ ওভারে ৪২ রান খরচ করে একটি উইকেট পান সাইফউদ্দিন। ৩ ওভারে ৪৭ রানের বিনিময়ে কামরুল ইসলাম রাব্বির শিকার দুটি। নাহিদ রানা ৪ ওভারে ৪৭ দিয়েও উইকেটের দেখা পাননি। বরিশালের হয়ে ২ উইকেট নেন জাহানদাদ খান।