হায়দারের ঝড়ে ঢাকাকে বিদায় করে পেস্ন অফের পথে চিটাগাং কিংস

প্রকাশ | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার বিপিএল রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে চিটাগাং কিংসকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান হায়দার আলী (ডানে) -ওয়েবসাইট
ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ইফতেখার আহমেদের হাফ সেঞ্চরিতে লড়াইয়ের একটা পুঁজি পেয়েছিল রংপুর রাইডার্স। মাঝারি লক্ষ্যে নেমে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান হায়দার আলীর ব্যাটে ওই পুঁজি পেরিয়ে অনায়াসে ম্যাচ জিতেছে চিটাগাং কিংস। এই জয়ে পেস্ন অফের পথে অনেকটা এগিয়ে গেল টুর্নামেন্টে নানান বিতর্কের জন্ম দেওয়া কিংস। তাদের জয়ে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে ঢাকা ক্যাপিটালসের। মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার বিপিএলে দিনের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে চিটাগাং কিংস। এই জয়ে তাদের পয়েন্ট এখন ১২। আরেক ম্যাচ জিতলে তো বটেই, না জিতলেও সুযোগ থাকবে পেস্ন অফের। শুরু থেকে টানা ৮ ম্যাচ জিতে পর পর তিন হারে পয়েন্ট টেবিলে দুইয়ে নেমে গেছে রংপুর। কিংসের জয়ে টুর্নামেন্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালসের। বাকি দুই ম্যাচ জিতলেও তাদের আর লাভ হবে না। এদিন আগে ব্যাট করে মাত্র ১৪৩ রান করে রংপুর। ১৪ বল আগে ওই রান তুলে ম্যাচ জিতে যায় কিংস। মাত্র ১৮ বলে ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে কিংসে নায়ক হায়দার। এ ছাড়া পারভেজ হোসেন ইমন ৪১ রান করলেও ৪৩ বল লাগিয়ে তিনি বাড়িয়েছেন চাপ। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ইফতেখার আহমেদের ৬৫ রানে ভর করে ১৪৩ রান সংগ্রহ করে রংপুর। মাঝারী মানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে পাওয়ার পেস্নতেই দুই উইকেট হারায় চিটাগং। এরপর তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুন ও পারভেজ হোসেন ইমন মিলে গড়েন ৩৪ রানের জুটি। মিঠুন ১৫ বলে ২০ রান করে আউট হওয়ার পর পারভেজের সঙ্গে জুটি বাঁধেন হায়দার আলী। এবার চতুর্থ উইকেটে হয় ৪৩ রানের জুটি। ইমন ৪৩ বলে ৪১ রান করে আউট হলে জুটি ভাঙে তাদের। এরপর শামীম হোসেন দুই বলে ৮ রান করে আউট হন। জয়ের জন্য বাকি পথটা হায়দার ও রাহাতুল ফেরদৌস মিলে পাড়ি দিয়ে ফেলেন। হায়দার ১৮ বলে ১ চার ও ৬ ছক্কায় মিরপুরে টর্নেডো বইয়ে দেন। শেষ তিন ওভারে চিটাগংয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০ রান। আকিফ জাবেদের প্রথম চার বলে চার ছক্কা মেরে ১৮তম ওভারেই জয় নিশ্চিত করেন হায়দার আলী। এই জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে পেস্ন-অফের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে তারা। চিটাগংয়ের সঙ্গে পেস্ন-অফের মিশনে আছে দুর্বার রাজশাহী ও খুলনা টাইগার্স। ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর বল হাতে খুব সফল হতে পারেনি রংপুর। আকিফ জাবেদ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। বাকি বোলারদের কেউই তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি। টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পাওয়া রংপুর রাইডার্স বুধবারও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। পাওয়ার পেস্নতে ৩৭ রানে তিনটি উইকেট হারায় তারা। ইনজুরি থেকে ফিরে বুধবার দ্বিতীয় ম্যাচে ভালো শুরু পেয়েছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু ২৩ রানের বেশি করতে পারেননি। ৩৭ রানে তিন উইকেট হারানোর পর নুরুল হাসান সোহান ও ইফতেখার হোসেন মিলে ৩৩ বলে ২৪ রানের জুটি গড়েন। অধিনায়ক সোহান ব্যক্তিগত ৯ রানে আউট হলে জুটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। এরপর একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকে একাই দলকে টেনে নিয়ে গেছেন ইফতেখার। শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করায় তার অপরাজিত ৬৫ রানের ইনিংসে দাঁড়িয়ে রংপুর পায় ১৪৩ রানের সংগ্রহ। ৪৭ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ইফতেখার নিজের ইনিংসটি সাজান। শেষ দিকে শেখ মেহেদীর ২০ বলে ২২ রানের ইনিংসও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চিটাগং কিংসের বোলারদের মধ্যে খালেদ আহমেদ দুটি এবং শামীম হোসেন ও শরিফুল ইসলাম একটি করে উইকেট নিয়েছেন। সংক্ষিপ্ত স্কোর: রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৪৩/৫ (টেইলর ০, সৌম্য ২৩, সাইফ ৮, হাসান, ইফতিখার ৬৫*, নুরুল ৯, ইরফান ১, শেখ মেহেদী ২২*; ফার্নান্দো ০/১৫, শরিফুল ১/৩৪, খালেদ ২/৪৪, আলিস ০/১৪, রাহাতুল ০/২০, শামীম ১/১০)। চিটাগাং কিংস : ১৭.৪ ওভারে ১৪৮/৫ (মিলান্থা ৬, পারভেজ ৪১, ক্লার্ক ১৫, মিঠুন ২০, হায়দার ৪৮*, শামীম ৮, রাহাতুল ৬*; শেখ মেহেদী ০/২৩-, ইফতিখার ০/১৪, আকিফ ২/৩৭, রকিবুল ০/২৩, নাহিদ ০/১৮, সাইফ উদ্দিন ২/২৫, সাইফ হাসান ০/৮) ফল: চিটাগাং কিংস ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা: হায়দার আলী।