রোজ বোলে যে দ্বৈরথে ম্যাচের গতিপথ

আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপে একবারের মুখোমুখিতে শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশই। তবে ওয়ানডে পরিসংখ্যানে বাংলাদেশই যে আফগানদের প্রিয় প্রতিপক্ষ তা স্পষ্ট। এবারের আসরে ধুঁকতে থাকা আফগানরা যেভাবে ভারতের টুঁটি চেপে ধরেছিল তাতে সহজেই অনুমেয় হঠাৎ গর্জে ওঠা রশিদ-নবীদের সামনে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে বাংলাদেশকেও। চলুন জেনে নেয়া যাক দুই দলের পরিসংখ্যান এবং আজকের ম্যাচের ভাগ্য বদলাবেন যারা। যায়যায়দিনের পাঠকদের জন্য বিশেষ এ আয়োজনটি তৈরি করেছেন- মো. ফখরুল ইসলাম

প্রকাশ | ২৪ জুন ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯, ১২:৫২

অনলাইন ডেস্ক
ধারাবাহিক সাকিব ব্যাট-বলের অনবদ্য পারফরমেন্সে বিশ্বকাপটাকে নিজের করে নিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গত ম্যাচে ভালো শুরুর পরও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি তিনি। যার খেসারত হিসেবে ম্যাচটাই হাত ফসকে বের হয়ে যায় টিম টাইগার্সের। তবে এর আগে টানা চার ম্যাচে পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস এবং পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি সবকিছুই যেন নতুন করে সাকিবের সক্ষমতারই নজির। এখন পর্যন্ত ব্যাটে হাতে দ্বিতীয় সেরা। বল হাতেও তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। অভিজ্ঞতা ও হালের পারফরম্যান্স- দুই বিবেচনাতেই সাকিব সন্দেহাতীতভাবে বর্তমান ক্রিকেটের অন্যতম শীর্ষ তারকা। এবারের আসরসহ বিশ্বকাপ খেলছেন চারটি। বাংলাদেশের আশা-ভরসার প্রতীক সাকিব আজও আরেকবার জ্বলে উঠতে চাইবেন। মিরাজের ঘূর্ণি এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত খেলা টাইগারদের ম্যাচগুলোতে দেখা গেছে, যে মুহূর্তে প্রতিপক্ষের উইকেট প্রয়োজন তখনি অধিনায়ক মাশরাফির আস্থায় ছিলেন মিরাজ। এখন পর্যন্ত ওডিআইতে ২৮ ম্যাচ খেলে ব্যাট হাতে ২৯১ রান করেন মিরাজ। ডান হাতি এই অফব্রেক বোলার ২৮ ম্যাচের ২৭ ইনিংসে বল করে নিয়েছেন ২৯ উইকেট। বেস্ট ২৯ রানে ৪ উইকেট। তবে তার ইকনোমি বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে বেস্ট। ৪.৩৮ ইকনোমি নিয়ে তিনি বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে কৃপণ বোলার। আর এটাই বোলার মিরাজের পস্নাস পয়েন্ট। একজন পরিপূর্ণ এবং পরিপক্ব ক্রিকেটারের যতগুলো গুণ থাকা আবশ্যক তার প্রায় সবই বিদ্যমান মেহেদি হাসান মিরাজের মধ্যে। তবে এবার সময় হয়েছে ব্যাট হাতে কিছু করার। হার না মানা মুশফিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশাল রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে সৌম্য-লিটনরা একে একে যখন উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসছিলেন, তখন বাংলাদেশের আশা-ভরসার প্রতীক হয়ে একপ্রান্ত আগলে রেখেছেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। সেদিন তার অনবদ্য শতকেও শেষ পর্যন্ত জয়ের নোঙরে পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ, তবে মুশফিকুরের ওই ক্যামীয় ইনিংসটি এখনো লেপ্টে আছে টাইগার ভক্তদের হৃদয়ের গহিন কোণে। বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যানদের একজন তিনি। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের যতগুলো পার্টনারশিপের রেকর্ড হয়েছে সবগুলোতেই নাম আছে এই ব্যাটসম্যানের। গত তিন বিশ্বকাপে মুশফিক ২১ ম্যাচে ৫১০ রান করেছেন। গর্জে ওঠা নবী মোহাম্মদ নবীর শক্তিমত্তা কতটুকুন তা ক্রিকেট বিশ্ব শনিবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেই আরও একবার টের পেয়েছে। বুমরাহ-শামিদের আগুনে বোলিংয়ের সামনে বুক চিতিয়ে লড়া এই আফগান অলরাউন্ডারের ক্যামীয় ইনিংসটি ক্রিকেট ভক্তদের অনেকদিন মনে থাকার কথা। পরিপূর্ণ অলরাউন্ডার বলতে যা বোঝায় মোহাম্মদ নবী তাই। রহমতুলস্নাহ নাইবদের সঙ্গে ব্যাটিংয়ে ফিনিশিংয়ের কাজটা করেন সুনিপুণ ভাবে। আর দলের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে রশীদ, মুজিবদের সঙ্গে বল হাতেও সমান পারদর্শী এই তিনি। রশিদের লেগ ভেলকি আফগানদের সবচেয়ে বড় ভরসা রশিদের স্পিন ভেলকি। এক রশিদে মজে আজ আফগান ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে সবাই। লেগস্পিন কতটা ভয়ংকর হতে পারে, রশিদ খান তা চোখে আঙুল দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে যে দেখিয়ে দিয়েছেন। তবে এবারের বিশ্বকাপটা মোটেও ভালো যাচ্ছে না এ লেগ বিস্ময়ের। তবে বিশ্বের বর্তমান সময়ের সেরা এই লেগ স্পিনার যেকোন সময় জ্বলে উঠতে পারেন। ভারতের বিপক্ষে দূর্দান্ত বল করে প্রত্যাবর্তনের আভাস দিয়েছেন এই লেগ বিস্ময়। লড়াকু রহমত শাহ এবারের বিশ্বকাপে প্রত্যাশামতো ব্যাটিং করতে পারছে না আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। শ্রীলংকা ও সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষে সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমেও দলকে জেতাতে পারে নি জাজাইরা। তবে আফগান মারকুটে ব্যাটসম্যান রহমত শাহ যেকোন মুহুর্তে জ্বলে ওঠতে পারেন। তবে ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু করে রানে ফেরার বার্তা দিয়েছিলেন। তাই তার কাছ থেকে আফগান ভক্তদের প্রত্যাশা এবার যেন ঠিকঠাক জ্বলে উঠতে পারেন তিনি।