ইংল্যান্ডের সামনে আজ নির্ভার অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশ | ২৫ জুন ২০১৯, ০০:০০

সুলতান মাহমুদ রিপন
শ্রীলংকার বিপক্ষে জয় পাওয়া হয়নি স্বাগতিক ইংল্যান্ডের। আজ লর্ডসে জেসন রয়ের কাছে ম্যাচজয়ী এক ইনিংস আশা করছেন ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগান। সোমবার দলের ব্যাটিং অনুশীলনে রয়কে সেই কথা বলছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক -ওয়েবসাইট
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ বলে দারুণ আত্মবিশ্বাসী ছিল ইয়ন মরগানের ইংল্যান্ড। আর সেই লক্ষ্যে দারুণ গতিতে ছুটছিল ইংলিশরা। পাঁচ ম্যাচের চারটিতে জিতে ইতোমধ্যেই সেমিফাইনালের দিকে এক পা বাড়িয়েও রেখেছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে তাদের সেই আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরিয়েছে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা শ্রীলংকা। লংকানদের কাছে হেরে সেমিতে ওঠাটা কিছুট হলেও জটিল করে ফেলেছে মরগানের দল। ৬ ম্যাচ থেকে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে আছে তারা। অপরদিকে ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছে অ্যারন ফিঞ্চের অস্ট্রেলিয়া। শেষ চার নিশ্চিত করতে আজ স্বাগতিকদেরকে হারাতে চায় তারা। তারওপর আবার অজিদের হয়ে কথা বলছে ইতিহাস। ১৯৯২ আসরের পর থেকে অর্থাৎ, গেল ২৭ বছর ধরে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়হীন ইংল্যান্ড। তাইতো অজিদের এগিয়ে চলার পথে কি আজ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে ইংলিশরা? এমন এক সমীকরণ সামনে রেখে লর্ডসে বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায় দল দুটি একে অপরের মুখোমুখি হবে। নিজেদের মাঠে বিশ্বকাপ হওয়ায় এবার টপ ফেভারিটের তালিকার শীর্ষেই ছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড। তার ওপর একবারও শিরোপার স্বাদ নেয়া হয়নি ইংলিশদের। যদিও বিশ্বকাপে প্রতিবারই ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা থাকে ইংল্যান্ডের। তবে ২০১৫ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর আমূল বদলে গেছে ইংল্যান্ডের ওয়ানডে ক্রিকেট। ইয়ন মরগানদের ভয়ডরহীন ক্রিকেট যেন এক সময়ের অজেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর অপ্রতিরোধ্য অস্ট্রেলিয়ার ইংলিশ সংস্করণ। আগের ছয় আসরে কোয়ার্টার-ফাইনালের বাধা পেরুতে না পারা দলটি স্বপ্ন দেখছে বিশ্বজয়ের। আর সেই ধারবাহিকতায় তারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে দুমড়ে-মুচড়ে ফেলেছিল। তবে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১৪ রানে হারের পর দারুণ সতর্ক স্বাগতিকরা। যার ফলে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে খুব একটা বেগ হতে হয়নি স্বাগতিকদের। কিন্তু পয়েন্ট টেবিলের নিচের সারির দল শ্রীলংকার কাছে হেরে কিছুটা হলেও আবারও শেষ চারে ওঠার দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে। তারওপর আবার ইতিহাসও ইংলিশদের বিপক্ষে কথা বলছে। ইংল্যান্ডকে সেমিফাইনালে যেতে হলে শেষ তিন ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং নিউজিল্যান্ডকে হারাতে হবে। কিন্তু এই তিন দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপে জয়হীন রয়েছে ইংলিশরা। যদিও শেষ চার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ছয় ম্যাচ থেকে ৮ পয়েন্টে বেশ সুবিধাজনক স্থানেই রয়েছে ইংলিশরা। তবে হাতে থাকা তিন ম্যাচের প্রতিপক্ষের বিপরীতে বিশ্বকাপের অতীত পরিসংখ্যানটা মোটেও স্বস্তি দিচ্ছে না তদের। উল্টো গ্রম্নপ পর্ব থেকেই 'বাদ পড়ে যাওয়ার ভয়' দেখাচ্ছে স্বাগতিকদের! বিশেষ করে ইংল্যান্ডের পরের তিন ম্যাচ যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ১৯৯২ আসরের পর থেকে তাদের বিপক্ষে বিশ্বকাপে সবমিলিয়ে ১১টি ম্যাচ খেলেছে দলটি। কিন্তু জয় পায়নি একটিতেও! হেরেছে ১০টি। ভারতের সঙ্গে ২০১১ আসরের মুখোমুখি লড়াইটি হয়েছিল টাই। অর্থাৎ, গেল ২৭ বছর ধরে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের দেখা পায়নি ইংল্যান্ড। তবে ১৯৯২ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার পথে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতেছিল ইংল্যান্ড। এরপর বিশ্ব মঞ্চে এই দুটি দলকে আর হারানোর স্বাদ নেয়া হয়নি ইংল্যান্ডের। অজিদের কাছে ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১৫ আসরে হেরেছিল তারা। আর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ইংলিশরা একই ফল পেয়েছিল ১৯৯৯ ও ২০০৩ সালে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গেল ৩৬ বছরেও জিততে পারেনি থ্রি লায়ন্সরা। তবে অতীত ইতিহাস নিয়ে পড়ে থাকতে চায় না বলে জানিয়েছেন ইংলিশ অধিনায়ক মরগান। তারা আজ অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে গড়তে চায় নতুন এক ইতিহাস। অপরদিকে ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে ইতোমধ্যেই সেমিফাইনালের দিকে এক পা বাড়িয়ে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে টুর্নামেন্ট এখনো অনেকটা বাকি, তার ওপর প্রতিপক্ষ ভীষণ শক্তিশালী হওয়ায় গা-ছাড়া দেয়ার প্রশ্নই উঠছে না। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে তাই সবটুকু নিংড়ে দেয়ার প্রতিশ্রম্নতি নিয়েই মাঠে নামবে ফিঞ্চের দল। যদিও শুরুর দিকে তাদের তারকা খেলোয়াড়রা অবিশ্বাস্য কিছু না করলেও ঠিকই দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেছে টিম অস্ট্রেলিয়া। শুধু বিরাট কোহলির টিম ইন্ডিয়ার বিপক্ষে শামুক গতির ব্যাটিং আর দ্রম্নত উইকেট হারানোর খেসারত হিসেবে ম্যাচ হাত ফসকে বের হয়ে যায়। এরপর থেকে দারুণ সতর্ক অজিরা। এমনকি বাংলাদেশের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি উপহার দেয়ায় ফমের্র তুঙ্গে আছেন অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। প্রতিপক্ষকে এক বিন্দু ছাড় দিতে নারাজ ফিঞ্চের অস্ট্রেলিয়া।