যাদের হাতে আজকের ম্যাচের লাগাম

প্রকাশ | ২৫ জুন ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মরগান বনাম ফিঞ্চ দুই অধিনায়কই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শিরোপা খরা কাটাতে ইয়ন মরগানের নেতৃত্বে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে ইংল্যান্ড। স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা ও বেশির ভাগ দর্শকই নিজেদের হওয়ায় আরাধ্য সেই শিরোপার স্বাদ নেয়ার সুবর্ণ সুযোগ তাদের সামনে। এ ছাড়া ফর্মের দিক থেকেও শিরোপার অন্যতম দাবিদার মরগানরাই। এত এত সব প্রত্যাশার চাপ এখন পর্যন্ত ভালোভাবেই সামলাচ্ছেন মরগান। প্রথম ম্যাচে প্রোটিয়াদের উড়িয়ে দিয়ে দুরন্ত সূচনার পর দ্বিতীয় ম্যাচে হোঁচট খেলেও টাইগারদের বিপক্ষে তার নেতৃত্বে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইংলিশরা। এরপর ষষ্ঠ ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে হারলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের বিচারে বিশ্বকাপে এখন অবধি খারাপ না খেললেও অবিশ্বাস্য কিছু করেননি ইংল্যান্ড অধিনায়ক। তবে এই বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তিনি ছিলেন ইংলিশদের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোরার। আজ ব্যাটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন তিনি। অন্যদিকে, মারকুটে ব্যাটসম্যান অ্যারন ফিঞ্চের অধিনায়কত্বে সবে পথচলা শুরু করেছে টিম অস্ট্রেলিয়া। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারিতে ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথ দোষী সার্বস্ত হওয়ার পর মহাসংকটে পড়েছিল অজি ক্রিকেট। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা যেন পথ হারিয়ে ফেলে। একের পর এক হারে তলিয়ে যাচ্ছিল ক্রিকেটের অন্যতম এই পরাশক্তি। তবে ঠিক সময়ে দলের হাল ধরেন ফিঞ্চ। তার নেতৃত্বেই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছে অজিরা। আর তাই আজকের ম্যাচের ভাগ্য দুই অধিনায়কের রণকৌশলেও। উড বনাম স্টার্ক এবারের বিশ্বকাপে আলাদাভাবে প্রভাব বিস্তার করছে পেসাররা। ম্যাচ জেতাতে সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখছেন তারাই। আর যার যত গতি তার তত কদর। যেমন, এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গতির মালিক ইংলিশ পেসার মার্কিন উডের কথাই ধরুন নাহ! অজিদের সঙ্গে ম্যাচের আগে সবচেয়ে বেশি হুঙ্কার তার দিক থেকেই আসছে। শরীর তাক করা বাউন্সারে ফিঞ্চ-ওয়ার্নারদের ভূপাতিত করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন এই ফাস্ট বোলার। তবে কামিন্স আর স্টয়নিসদের সামনে কাজটা অত সহজ হবে না। এ ছাড়া বিপক্ষ দলের বাউন্সার কিভাবে গুঁড়িয়ে দিতে হয় তা ভালোই জানা আছে মরগান বাহিনীর। অপরদিকে ইংল্যান্ডের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার সেরা 'গেম চেঞ্জার' মিচেল স্টার্ক। ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে স্বল্প পুঁজি নিয়েও যেভাবে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি, তাতে অজি ভক্তদের মনে কথাটি আরও পাকাপোক্ত হয়েছে। স্টার্ক একাই ক্যারিবীয়দের পাঁচ উইকেট ধসিয়ে দিয়েছিলেন। এর আগে আফগানদের সঙ্গে ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তার। মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বে গত বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল স্টার্কের। সেবার সর্বোচ্চ ২২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা বোলার নির্বাচিত হয়েছিলেন স্টার্ক। যদিও চোটের কারণে লম্বা সময় ধরে খেলার বাইরে ছিলেন তিনি। আজ স্টার্কের বাউন্সারে ভুগতে হতে পারে বাটলারদের। রয় বনাম স্মিথ এবারের আসরে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন জেসন রয়। উদ্বোধনী ম্যাচে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরির পর পাকিস্তানের বিপক্ষে সেইভাবে জ্বলে উঠতে না পারলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে ঠিকই দেড়শ ছাড়ানো এক অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি। এক রয়ের কাছেই ওই দিন অসহায় আত্মসমর্পণ করে টিম টাইগার্স। আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের মূল চ্যালেঞ্জ থাকবে মিশেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সদের আগুন ঝরানো বোলিং। আর এমন বোলিং শক্তির বিপক্ষে মরগানের ভরসা হতে পারেন জেসন রয়ই। কারণ, তিনি পেসে সবসময়ই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তার দুর্বলতা স্পিনে। দেখা যাক কেমন করেন তিনি। বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির দায়ে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সবে দলে ফিরে ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে সমালোচকদের নিন্দার জবাব দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথ। আসরে এ পর্যন্ত খেলা অজিদের তিন ম্যাচেই রান পেয়েছেন এই ঠান্ডা মাথার খেলোয়াড়। গেল এক বছরে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন নিন্দা, সমালোচনা পাশ কাটিয়ে চলার কতটা ক্ষমতা তার। নিষেধাজ্ঞা শেষে আইপিএলে খেলতে নেমে ব্যাট হাতে ছিলেন ধারাবাহিক। ওয়ানডেতে গত দুই বছর আগের রেকর্ড ঘাঁটলেই দেখা যাবে, কিভাবে ম্যাচের পর ম্যাচ বোলারদের দুঃস্বপ্ন হয়েছেন স্মিথ। দুঃস্বপ্ন পেছনে ফেলে সাবেক এই অধিনায়কই অস্ট্রেলিয়াকে ষষ্ঠবারের মতো শিরোপা জেতার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।