ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেও সেরাটা চান সাকিব

আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে। ভারতের সঙ্গে পরের ম্যাচ অনেক কঠিন। অভিজ্ঞতা আছে কিন্তু অভিজ্ঞতা দিয়েই সব হয় না। আমাদের ভারতকে হারাতে সেরাটা ঢেলে দিতে হবে। তাদের হারানো সহজ না। বিশ্বমানের সব বোলার, ব্যাটসম্যান আছে ওদের। আমাদেরকে সেরা খেলাটা খেলতে হবে

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সময়টা স্বপ্নের মতো কাটছে সাকিব আল হাসানের। ছয় ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরি, তিন হাফ সেঞ্চুরি এবং একটি চলিস্নশোর্ধ্ব ইনিংস। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান, সঙ্গে নামের পাশে ১০ উইকেট। বাংলাদেশের তিনটি জয়েই সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন। একের পর এক রেকর্ড-কীর্তি গড়ে চলেছেন। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ দু'হাত ভরে দিচ্ছে তাকে। সোমবার আফগানিস্তানের বিপক্ষেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন টাইগারদের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তার নৈপুণ্যে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। তাকে নিয়ে তো কথা হচ্ছেই, ম্যাচ শেষে তাই হয়তো পার্শ্বনায়ক মুশফিকের দায়িত্বশীল ইনিংসের প্রশংসার দায়িত্ব কণ্ঠে তুলে নিলেন সাকিব। অবশ্য মুশফিককে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফিও। সাউদাম্পটনে ৬২ রানে জয়ের ম্যাচে সাকিব ৫১ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ৫ উইকেট নিয়েছেন। হয়েছেন ম্যাচসেরা। যেভাবে আলো ছড়াচ্ছেন, রহস্যটা কী? তাতে বিশ্বমঞ্চে পারফর্ম করতে নিজেকে সেরা উপায়ে প্রস্তুত করেছেন বলে মনে করিয়ে দিলেন টাইগার অলরাউন্ডার। ম্যাচ শেষে সাকিব আল হাসান বলেন, 'বিশ্বকাপের আগে আমি অনেক কঠিন পরিশ্রম করেছি। ভালোভাবে প্রস্তুত ছিলাম। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এটির প্রতিদানও পাচ্ছি।' ম্যাচসেরার পুরস্কার পাওয়া নিয়ে সাকিব বলেছেন, 'হঁ্যা, এই বিশ্বকাপে দারুণ কিছু হচ্ছে। সৌভাগ্যবশত আমরা শুরুটা দারুণ করেছি। যে কারণে সমর্থকরা পাশে রয়েছে। ৫ উইকেট আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে। তবে ফিফটির জন্য সত্যিই অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।' তখনই মুশফিকের প্রশংসা করে বলেছেন, 'মুশফিক গুরুত্বপূর্ণ নক খেলেছে। তাকে ছাড়া আমরা এত রান করতে পারতাম না। আমরা জানতাম তাদের (আফগান) তিন স্পিনারের কারণে ব্যাটিংটা কঠিন হবে। সুতরাং দলীয় প্রচেষ্টার প্রয়োজন ছিল।' সামনে আরও দুটি নকআউট ম্যাচ। সেমির স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে তাতে জয়ের বিকল্প নেই। সাকিব সেই বড় দুই ম্যাচেও সেরাটাই দিতে চান, 'অবশ্যই (ভালো পারফরম্যান্সের ধারা) অব্যাহত রাখতে চাই। ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের পরবর্তী দুটি বিগ ম্যাচ।' বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আশা বাঁচাতেই প্রতিটা ম্যাচে জেতা চাই বাংলাদেশের। কিন্তু সেটা করলেও কেবল হচ্ছে না। কামনা করতে হবে অন্যদের হার। বিশেষ করে ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া যদি তাদের বাকি সব ম্যাচ হেরে যায় তাহলে নিজেদের কাজটা করেই সেরা চারে পা পড়বে মাশরাফি বিন মর্তুজার দলের। গাণিতিক হিসাবেও ব্যাপারটা বেশ জটিল। সাকিব আল হাসান বললেন, খেলাটা ক্রিকেট বলেই যেকোনো কিছুই হতে পারে। বার্মিংহামে ভারতের বিপক্ষে কঠিন ম্যাচ। হাতে আর দুই ম্যাচ। সেমির স্বপ্ন কি উঁকি দিচ্ছে? সাকিব ফিরলেন বাস্তবে, 'ইংল্যান্ডকে তিন খেলায় হারতে হবে। আমাদের বাকি দুটো জিততে হবে। এটা কঠিন। গাণিতিকভাবেও কঠিন। তবে ক্রিকেটে যেকোনো কিছুই হতে পারে। আমি আগেও বললাম কঠিন হলেও পরের দুটো খেলা জেতা সম্ভব। অন্যদের খেলা কি হচ্ছে দেখতে হবে। কিন্তু তার আগে তো নিজেদের কাজটা করা জরুরি।' ২ জুলাই ভারত ও ৫ জুলাই পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের বাকি দুই ম্যাচ। এর মধ্যে ভারতের বিপক্ষে ঠিক পরের ম্যাচটাই সবচেয়ে কঠিন ভাবছেন সাকিব, কেবল অভিজ্ঞতা দিয়েই সেই পথ পাড়ি দেয়া সহজ মনে হচ্ছে না তার, 'আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে। ভারতের সঙ্গে পরের ম্যাচ অনেক কঠিন। অভিজ্ঞতা আছে কিন্তু অভিজ্ঞতা দিয়েই সব হয় না। আমাদের ভারতকে হারাতে সেরাটা ঢেলে দিতে হবে। তাদের হারানো সহজ না। বিশ্বমানের সব বোলার, ব্যাটসম্যান আছে ওদের। আমাদেরকে সেরা খেলাটা খেলতে হবে।' এতটাই ধারাবাহিকতায় টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। বোলিং নিয়ে এদিন মাত করে নিজেকে টুর্নামেন্ট সেরার জোরালো দাবিদার করে ফেলেছেন। এই সাকিব আল হাসান কি তবে কিংবদন্তি কেউ? বরাবরই নিজেদের সাফল্য নিয়ে কম কথা বলা সাকিব সিদ্ধান্তটা ছাড়লেন মানুষের ওপর, 'আমি কি করে বলব (হাসি)। এটা তো আপনারা বলতে পারবেন। কিন্তু এইগুলা নিয়ে আমি কখনো চিন্তা করি না।' সোমবারের ম্যাচে অনন্য মাইলফলক নিয়ে সাকিব বলেন, 'আমি খুবই সন্তুষ্ট। এটা খুব দরকার ছিল (ভালো খেলা)। আমার নিজের কথা ভাবলে কিংবা দলের কথা ভাবলে। ভাগ্য সহায় যে আমি এটা করতে পেরেছি। এবং টুর্নামেন্ট যেভাবে যাচ্ছে। আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে। ভারতের সঙ্গে পরের ম্যাচ অনেক কঠিন হবে।'