বিশ্বকাপে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে বুমরাহ

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বল হাতে দু্যতি ছড়াবেন জাসপ্রিত বুমরাহ -ওয়েবসাইট
জাসপ্রিত বুমরাহর বোলিং বৈচিত্র্যের কথা এখন সবার মুখে মুখে। বাঘা বাঘা সাবেক ক্রিকেটাররাও বিস্মিত তার বোলিং দেখে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ভারত-নিউজিল্যান্ডের প্রথম সেমিফাইনালের আগে ক্যারিবীয় কিংবদন্তি বোলার ও ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ জানালেন বুমরাহকে নিয়ে মুগ্ধতার কথা। বুমরাহর অসাধারণত্ব সংশয়াতীত। টেস্ট, ওয়ানডে, টি-২০, সব ফরম্যাটেই সমান সাফল্য তার। ব্রেন্ডন ম্যাককালম তো ইতোমধ্যেই তাকে ফরম্যাট নির্বিশেষে সেরা বোলারের আখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু পরিসংখ্যানের বাইরেও বুমরাহকে নিয়ে চর্চার শেষ নেই। আসলে বুমরাহর সবকিছুই আলাদা। রান-আপটাই ধরুন না। শুরুটা আর পাঁচজনের মতোই সাদামাটা। তারপর দুটো হাত হঠাৎই সামনে ঠেলে দেন অনেকটা ওই গাড়ি ঠেলার মতো। তারপর মাথার পাশ দিয়ে ঘুরে এসে চাবুকের মতো আছড়ে পড়ে ডান হাত। এই অভিনব অ্যাকশনের সামনে পরাভূত হয়েছেন বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যান আর মুগ্ধ হয়েছেন স্বয়ং বিশপ, চোটে জর্জরিত না হলে যিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলারের শিরোপা পেতে পারতেন। শুধু উইকেট দেখলে বুমরাহর এবারের অবদান বোঝা যাবে না। স্টার্ক এবার বেশি উইকেট পেলেও বুমরাহ কোনো অংশে কম নয়। 'বুমরাহর সবকিছু মুগ্ধ হয়ে দেখি,' বলেন বিশপ। দেখুন, আমি তো গবেষণা করি না, কিন্তু ফাস্ট বোলিং নিয়ে যে বৈজ্ঞানিকরা কাজ করেন, তারা মোটামুটি একমত যে সাবলীল রান-আপ বলের গতির জন্য ষাট শতাংশ দায়ী। বুমরাহর যা অদ্ভুত রান-আপ, তাতে কীভাবে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার বেগে বল করে বুঝতে পারি না। তারপর ধরুন ফলো-থ্রম্ন। বল করার ঠিক পর আমাদের ডান হাত শেষ হতো বাঁ কোমরের পাশে। বুমরাহ বল ছাড়ে একটু বাঁদিক থেকে, ফলে ওর ডান হাত নামে দু'পায়ের ফাঁকে।' বিশ্বকাপের লীগ পর্যায়ে ১৭ উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ, গড় ১৯। শুনতে অবাক লাগলেও মিচেল স্টার্কের নয় উইকেট পেছনে আছেন তিনি। কিন্তু স্টার্ককে সেরা বোলার মানতে নারাজ বিশপ। শুধু উইকেট দেখলে বুমরাহর এবারের অবদান বোঝা যাবে না। উইকেট না পেলেও দলকে অন্যভাবে সাহায্য করেছে ও। স্টার্ক এবার বেশি উইকেট পেলেও বুমরাহ কোনো অংশে কম নয়। সেরা বোলাররা আসলে ওয়ান-ডে ক্রিকেটে প্রায়ই বেশি উইকেট পান না। বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের দেখে আজকাল মনে হয় যে তারা ধরে নিয়েছেন বুমরাহকে চার-ছয় মারা যাবে না। তাই বুমরাহর ওভারগুলো খেলে দিয়ে অন্যপ্রান্তের বোলারদের সামনে বাড়তি ঝুঁকি নেন তারা। পরিসংখ্যান বলে যে এই বছর ৩৫টা ডেথ ওভারের মাত্র দুটোয় দশের বেশি রান দিয়েছেন বুমরাহ। ওর লেন্থ, গতি, দুটোরই বৈচিত্র্য সাংঘাতিক। আর ওর ইয়র্কার কতটা মারাত্মক তা আর বললাম না। লাসিথ মালিঙ্গা হয়তো আরও বেশি ইয়র্কার দেয়, কিন্তু মাঝেমধ্যে ফসকেও যায়। বুমরার লক্ষ্য অব্যর্থ। আর দুজনের ইয়র্কারের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে; মালিঙ্গার অ্যাকশনের জন্য বল আসে অনেক নিচ থেকে, আর বুমরাহর বল আসে একদম ওপর থেকে। নতুন বল ব্যবহার করতে সিদ্ধহস্ত বুমরাহ। ইনিংসের মাঝখানে বল করতে ওর জুড়ি নেই। আর ডেথ ওভারে এত ভালো বল করতে খুব কম বোলারকে দেখেছি।