বাফুফের চিঠিতেও নানা ফাঁকফোকর!

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের আসর শেষ হওয়ার আগেই বাফুফের সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলে আগামী দলবদলের অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লিগের তিন ক্লাব সাইফ স্পোর্টিং, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ ও চট্টগ্রাম আবাহনী। তাদের মতে বাফুফের এ সিদ্ধান্তে স্থানীয় ফুটবলারদের থেকে কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছেন না তারা। যদিও বাফুফে বলছে ক্লাবগুলোকে চিঠি দিয়ে মতামত নিয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। কিন্তু চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবল কমিটির সেক্রেটারী শাকিল মাহমুদ চৌধুরী জানালেন বাফুফের চিঠি দেয়াতেও থাকে নানা ফাঁকফোকর। সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব সমিতির সভাপতি। যেখানে তারা বাফুফেকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভার তারিখ ঘোষণার দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে ফুটবল লিগের পার্টিশিপেশন মানি ও ট্রান্সফার ফি অবিলম্বে ক্লাবগুলোকে প্রদান করা না হলে পরবর্তী দলবদলে অংশগ্রহণ না করার আল্টিমেটাম দিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব সমিতির সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমীন বলেছেন, 'লিগ চলাকালীন অবস্থায় দলবদল নির্ধারণ করায় ক্লাবের ফুটবলারদের মনসংযোগ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা ঠিক মতো খেলছে না কারণ লিগ শেষ না হতেই দলবদলের তারিখ পড়ে গেছে।' আরামবাগ ক্লাবের সভাপতি ও ফুটবল ক্লাব সমিতির সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ জানিয়েছেন এই অবস্থায় আরামবাগ ক্লাবের পক্ষে দলবদলে অংশগ্রহণ করা সম্ভব না। যদিও বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেছেন ক্লাবগুলোকে চিঠি দিয়ে তাদের সম্মতি নিয়েই দলবদলের ঘোষণা দিয়েছে বাফুফে। কিন্তু চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবল কমিটির সেক্রেটারী শাকিল মাহমুদ চৌধুরী দিলেন এক ভিন্ন তথ্য। তার কথায় বাফুফের পাঠানো চিঠিতে নাকি থাকে নানান ফাঁকফোকর। এ প্রসঙ্গে শাকিল মাহমুদ বলেছেন, 'বাফুফে ক্লাবগুলোকে চিঠি দিয়েই মতামত নিয়েই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। কিন্তু সেই চিঠিতে থাকে নানান ফাঁক ফোকর। ধরুণ ২০ তারিখের মধ্যে কোন একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। সেই চিঠি আমাদের হাতে দেয়া হয় ১৯ তারিখ। তাও হয়তো বেশ রাতে। সেই চিঠিতে আবার লেখা থাকে এই তারিখের মধ্যে ক্লাবের পক্ষ থেকে কোন সিদ্ধান্ত জানানো না হলে ধরে নেয়া হবে এ বিষয়ে ক্লাবের সম্মতি আছে। তখন ক্লাব যখন ঐ অল্প সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত না জানাতে পারে। তখন ধরে নেয়া হয় ক্লাবের সম্মতি আছে।' তাহলে আপনারা তিন ক্লাব আগামী দল বদলে অংশ নিচ্ছেন না? শাকিল মাহমুদের উত্তর, 'আমাদের দাবিগুলো মেনে না নিলে আমরা সেই পথেই হাটবো। বেশিরভাগ ক্লাবই এখনো তাদের অংশগ্রহণ ফি বুঝে পায়নি। আমরা যা পাবার কথা হয়তো তার চারভাগের একভাগ আমাদের দিতে চাইছে বাফুফে। অথচ তারা তো স্পন্সরও পেয়ে গেছে। তারা বলছে স্পন্সর থেকে তারা পুরো টাকা বুঝে পায়নি। যে স্পন্সর ঠিকভাবে টাকা দিতে পারে না তাদের নেয়ারই বা দরকার কি! 'এখনো আমাদের লিগ চলছে। বুঝতে হবে এটা বাংলাদেশ। এখানের ফুটবলাররা এতোটা পেশাদার হয়নি এখনো। একবার ফুটবলাররা যদি অন্য ক্লাবের সঙ্গে আলোচনা করে ফেলে তাহলে তারা পা বাঁচিয়ে খেলে। এখনও লিগ চলছে। এই অবস্থায় দলবদলের সিদ্ধান্ত হওয়াতে আমরা কি আমাদের ফুটবলারদের থেকে কাঙ্ক্ষিত পারফরম্যান্স পাবো?' যোগ করেন শাকিল। যদিও রেজিস্ট্রেষন উইন্ডো ওপেন না হওয়া পর্যন্ত ফুটবলারদের অন্য কোন ক্লাবের সঙ্গে আলোচনা করার নিয়ম নেই। তবে বাস্তবতা বলছে বিগত মৌসুমগুলোতে এমনটাই হয়ে এসেছে। দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা সারার আগেই ভেতরে ভেতরে ফুটবলাররা অন্য ক্লাবের সঙ্গে রীতিমতো চুক্তি পাকাপোক্ত করে ফেলে। এটা এখন ওপেন সিক্রেট।