ফাইনালেও সেই নিষ্প্রভ গাপটিল

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

সুলতান মাহমুদ রিপন
মার্টিন গাপটিল
গত বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে দু্যতি ছড়িয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের ডাহাতি ওপেনার মার্টিন গাপটিল। এবারের বিশ্বকাপে একটি ম্যাচ বাদে বাকি সবগুলোতেই কিউই এই ওপেনারের ব্যাটে ছিল ভীষণ অন্ধকার। সেবারও নিউজিল্যান্ড ফাইনাল খেলেছিল, এবারও খেলছে ফাইনালে। অথচ এই বিশ্বকাপে একটি ম্যাচ বাদ দিলে হাসেনি গাপটিলের ব্যাট। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালেও মাত্র ১৯ রান করে ফিরে গেলেন সাজঘরে। যদিও শুরুতেই উইকেট পড়তে পারত ক্রিস ওকসের বলে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই তার বলে এলবিডবিস্নউর আবেদন ওঠে এবং আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আঙ্গুল তুলে দেন। হেনরি নিকোলস ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি রিভিউ চেয়ে বসলেন। তাতেই দেখা গেল বল স্ট্যাম্পের অনেক ওপর দিয়ে চলে যেত। যে কারণে, ধর্মসেনাকে স্যারেন্ডার করে আউট ফিরিয়ে নিতে হয়েছে। কিন্তু সপ্তম ওভারে আর বাঁচতে পারলেন না। ক্রিস ওকসের বলেই ব্যাটে লাগাতে পারলেন না গাপটিল। বল আঘাত করলো প্যাডে। আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আঙ্গুল তুলে দিলেন। আবারও রিভিউ নিলেন গাপটিল। কিন্তু এবার আর রক্ষা হলো না। শেষ পর্যন্ত আউটই হয়ে যেতে হলো গাপটিলকে। সেমিফাইনালসহ ৯ ম্যাচে করেছিলেন মাত্র ১৬৭ রান। ফাইনালে তাই গাপটিলের কাছে একটা বড় ইনিংস পাওনাই ছিল নিউজিল্যান্ডের। কিন্তু এবারও হতাশ করলেন কিউই এই ওপেনার। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও নিষ্প্রভ থেকেছে তার ব্যাট। পুরো টুর্নামেন্টে বাজে পারফর্ম করা মার্টিন গাপটিলের কাছে কিউইদের প্রত্যাশা ছিল আকাশ-ছোঁয়া। ফাইনালে অন্তত তিনি কিছু একটা করে দেখাবেন। লর্ডসে অবশ্য আশাজাগানিয়া শুরুই করেছিলেন গাপটিল। বলের চেয়ে রানটা এগোচ্ছিল দ্রম্নতই। কিন্তু সপ্তম ওভারে ঘটল ছন্দপতন। সপ্তম ওভারটা ছিল ক্রিস ওকসের। ইংলিশ পেসারের দ্বিতীয় বলটা একদম নিখুঁত লেন্থে আঘাত হানে গাপটিলের পায়ে। কোনো সংকোচ ছাড়াই আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। পরে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি কিউই ওপেনার। এদিন ১৮ বল মোকাবিলায় খেলেন ১৯ রানের ছোট্ট এক ইনিংস। ২টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা হাঁকান ১টি। কিন্তু বেশিদুর এগুতে পারলেন না। ১৯ রান করেই থামতে হলো কিউই এই ওপেনারকে। গত বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে গাপটিল সংগ্রহ করেন ৫৪৭ রান। ৬৮.৩৭ গড়ে দুটি সেঞ্চুরি ছিল কিউই এই ওপেনারের নামের পাশে। একই সঙ্গে ছিল অপরাজিত ২৩৭ রানের এক টর্নেন্ডো ইনিংস। আর এই অতিমানবীয় ইনিংসটি হাঁকিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেদিন ক্যারিবীয় পেসাররা গাপটিলের ব্যাটের কাছে বড্ড অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। যা এখনও বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস। আর এবার তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭৩ রান। পুরো টুর্নামেন্টের রান যোগ করলে দাঁড়ায় ১৮৬ রান। ফাইনালসহ ১০ ম্যাচে ২০.৬৬ গড়ে রান করা গাপটিলের নামের পাশে নেই কোনো সেঞ্চুরি। দ্বাদশ বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে কার্ডিফে শ্রীলংকার বিপক্ষে গাপটিল ৭৩ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন। আর পরের ম্যাচে দ্য ওভালে বাংলাদেশের বিপক্ষে করেন ২৫, টন্টনে আফগানদের বিপক্ষে ০, বার্মিংহামে দক্ষিণণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৫, ম্যানচেস্টারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ০, বার্মিংহামে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫, লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০, চেস্টার লি স্ট্রিটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ রান করেন। প্রথম সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে করেছেন ১৪ বলে মাত্র ১ রান। আর ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১৯ রান।