এরশাদের অবদান মনে রাখবে ক্রীড়াঙ্গন

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বলা হতো স্বৈরশাসক। তবে প্রায় ৯ বছর সরকার প্রধান থাকাকালে তিনি দেশের উন্নয়নে বেশ কিছু অবদান রেখেছিলেন। সেই উন্নয়নের মধ্যে ছিল ক্রীড়াঙ্গনও। তাই ক্রীড়াঙ্গনও মনে রাখবে এরশাদকে। কারণ, তিনি ছিলেন ক্রীড়া অন্তঃপ্রাণ মানুষ। দেশের ক্রীড়াঙ্গনের দুটি শীর্ষ প্রতিষ্ঠান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। তিনি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম সভাপতি হিসেবে ১৯৭৭ সাল থেকে ৯০ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন ১৯৭৬ সালের জুলাই থেকে ১৯৭৯ সালের ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীনই তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়াম (বর্তমান বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) চত্বর থেকে ক্লাবগুলোকে সরিয়ে স্থায়ী জায়গার ব্যবস্থা করা হয় মতিঝিলে। ১৯৮৭ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এক সভায় ক্লাবগুলো সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয় এবং পরের বছরই ক্লাবগুলো স্থানান্তর করা হয় মতিঝিলে। ক্ষমতা ছাড়ার আগের বছর তিনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের নামে মতিঝিলের জায়গাটি স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দিয়েছিলেন। পরে তিনি ক্লাবটির সার্বিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখেন। এরশাদ দীর্ঘদিন বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে তিনি রমনাস্থ জাতীয় টেনিস কমপেস্নক্সকে আধুনিকভাবে তৈরি করেছিলেন। টেনিস কোর্টের সংখ্যা বৃদ্ধি, নতুন প্যাভিলিয়ন সমৃদ্ধ দ্বিতল ভবন, জিমনেসিয়াম নির্মাণসহ নানাবিধ উন্নয়ন হয়েছে তার সময়ে। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে প্রতিষ্ঠিত। ঢাকা থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জিরানীতে ১৯৭৪ সালে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ১০০ একর জমির ওপর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব স্পোর্টস (বিআইএস) প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছিল। সেখানেই ১৯৮৩ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বাংলাদেশ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৮৬ সালের ১৪ এপ্রিল বিকেএসপি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি এখন দেশের ক্রীড়াবিদ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তার সময়েই তৈরি হয়েছিল মিরপুর স্টেডিয়াম, মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়াম, এরশাদ আর্মি স্টেডিয়াম (বর্তমান বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়াম)। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন ১৯৭৮ সালে প্রথম বাংলাদেশ গেমস আয়োজন করা হয়েছিল। এরশাদের সময়েই বাংলাদেশ প্রথম সাফ (সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন) গেমস (বর্তমান সাউথ এশিয়ান গেমস) আয়োজন হয়েছিল ১৯৮৫ সালে। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রীড়ানুষ্ঠানের আয়োজক হওয়ার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখেন এরশাদ। একই বছর বাংলাদেশ আয়োজন করেছিল এশিয়া কাপ হকিও। দীর্ঘদিন ক্রীড়াঙ্গনে সম্পৃক্ত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃতু্যতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রীড়াঙ্গনেও। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) তাদের প্রথম সভাপতির মৃতু্যতে শোক প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন তাদের সাবেক সভাপতির মৃতু্যতে শোক জানিয়েছে। শোক জানিয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও বাফুফেও।