ক্ষমা চাইলেন স্টোকস

প্রকাশ | ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
মার্টিন গাপটিলের থ্রো বেন স্টোকসের ব্যাটে লাগায় নিজেকে দোষী মনে করছেন না ইংলিশ এই অলরাউডার -ওয়েবসাইট
এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হয়ে খেললেও নিউজিল্যান্ডের বংশোদ্ভূত বেন স্টোকস। লর্ডসে রোববারের ফাইনালে তার কাছেই ম্যাচ হারল কেন উইলিয়ামসনের দল। অথচ বিশ্বকাপের আগে তার ক্যারিয়ার ছিল ভীষণ টালমাটাল। নাইট ক্লাবে মারামারি করে জেলও খেটেছিলেন। একটা সময় নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালেও আটকাতে হয়েছিল। সেই স্টোকসই এখন ইংলিশদের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক! ৮৪ রানের ইনিংসের পর সুপার ওভারে গড়ানো ইনিংসেও ছিলেন সমান কার্যকরী। অবশ্য জয়ের আনন্দে উদ্বেলিত স্টোকস গাপটিলের করা থ্রোতে বাড়তি চার রান পাওয়াতে কিউই অধিনায়কের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের দেয়া ২৪১ রান টপকাতে পারেনি ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ। ম্যাচটিতে নিশ্চিত পরাজয় বরণ করতে হতো স্বাগতিকদের। কিন্তু বেন স্টোকসের ৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংস ম্যাচ টাই হতে ভূমিকা রাখে। শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। ডিপ মিড উইকেটে খেলে দুই রান নিতে শেষ পর্যায়ে ডাইভ দিয়েছিলেন স্টোকস, মার্টিন গাপটিলের থ্রো তার ব্যাটে লেগে চলে যায় বাউন্ডারিতে। দৌড়ে দুই রানের সঙ্গে ওই চারে আসে মোট ৬ রান! বাড়তি ৪ রানেই মূলত ম্যাচটি টাই হয়ে যায়। গাপটিলের থ্রোতে হওয়া বাউন্ডারি নিয়ে ক্ষমা চাইলেন কিউই অধিনায়কের কাছে, 'নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলাটা সবসময়ই দারুণ ব্যাপার। আমি সবসময়ই তাদের বিপক্ষে ম্যাচ উপভোগ করি। আমি কেনকে (উইলিয়ামসন) বলেছি, ওই ঘটনার জন্য আমি আমার বাকি জীবন ক্ষমা চাইব।' উদ্বোধনী দিনে পথ দেখিয়েছিলেন দলকে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শুভসূচনা করেছিল স্বাগতিকরা। টুর্নামেন্টের শেষ দিনে আবারও টানলেন দলকে। ইংল্যান্ড পেল বিশ্বকাপ শিরোপার অনির্বচনীয় স্বাদ। ফাইনালে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতলেন বেন স্টোকস। গত বছর ব্রিস্টলে গভীর রাতে মারামারির ঘটনায় থমকে যেতে বসেছিল তার ক্যারিয়ার। কঠিন সেই সময় পেছনে ফেলে আজ তিনি ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক। স্টোকস অবশ্য কৃতিত্ব দিলেন পুরো দলকে, 'আমি আসলে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমার মনে হয় না, এই ম্যাচের মতো আর কোনো ম্যাচ ক্রিকেটের ইতিহাসে কোনো দিন হবে। জস (বাটলার) আর আমি জানতাম, যদি আমরা শেষ পর্যন্ত থাকি নিউজিল্যান্ড চাপে পড়ে যাবে। আমি যেভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে শেষ করতে পারিনি। জফরা আর্চার আজ নিজের সামর্থ্য ক্রিকেট বিশ্বকে দেখিয়েছে।' ৪৪ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ পেল ইংল্যান্ড। এমন অর্জনে উচ্ছ্বসিত এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার, 'আমি আসলে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে চার বছর আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। এটা অসাধারণ অনুভূতি। আমার মনে হয় না, এই ম্যাচের মতো ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো ম্যাচ হবে। জস বাটলার ও আমি জানতাম, আমরা টিকে থাকলে সুযোগ আসবে। শেষ পর্যন্ত কাজটা করে সফল হতে পেরে ভালো লাগছে।' কিউই বাবা-মা'র সন্তান স্টোকসের জন্ম ক্রাইস্টচার্চে। ১২ বছর বয়স পর্যন্ত ছিলেন নিউজিল্যান্ডেই। পরে আসেন ইংল্যান্ডে। সেখানেই গড়ে নেন নিজের ক্যারিয়ার। ফাইনালের আগের দিন স্টোকসের বাবা বলেছিলেন, ছেলে নয় নিজের দেশকেই সমর্থন দেবেন তিনি। দারুণ ছন্দে থাকা অলরাউন্ডারের মা বলেছিলেন, যে দলই জিতুক, তারাই জয়ী।