বিদেশি নির্ভরতা কমানোর দাবি ফুটবলারদের

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের আসন্ন মৌসুমে নানান পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। যার মধ্যে বিদেশি ফুটবলারের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে স্থানীয় ফুটবলাররা মনে করছেন বিদেশির সংখ্যা কমিয়ে তাদের সুযোগ দেয়া হলেই উন্নতি হবে জাতীয় ফুটবল দলের। অন্য আসর থেকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সদ্য শেষ হওয়া এগারোতম আসরটি ছিল একটু ভিন্ন। দীর্ঘ দিন পর এবারই আবারও ঢাকার বাইরে গড়ায় খেলা। সবমিলে দেশব্যাপী ছয়টি ভেনু্যতে হয়েছে এবারের লিগ। বসুন্ধরার মতো নবাগত শক্তির সঙ্গে টেক্কা দিতে ঢাকা আবাহনী, শেখ রাসেল, সাইফ স্পোর্টিংও গড়ে বিগ বাজেটের দল। এছাড়াও লিগে অংশগ্রহণকারী অন্য দলগুলোতেও ছিল মানসম্পন্ন দেশি বিদেশি ফুটবলার। যে কারণে এবার দারুণ জমজমাট এক লিগ হয়েছে। কলিন্ড্রেসদের মতো বিশ্বকাপ খেলে আসা ফুটবলারদের সঙ্গে টেক্কা দিয়েছেন জীবন-মতিন মিয়ার মতো স্থানীয় ফুটবলাররা। যদিও লিগ শেষে সেরা গোলদাতার মুকুটটি শোভা পেয়েছে বিদেশিদের মাথাতেই। তারপরও মতিন-জীবনদের কৃতিত্ব কোনো অংশেই কম ছিল না। এবারের লিগে সর্বোচ্চ ২২ গোল করেছেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল ওডোইন। আর স্বদেশি ফরোয়ার্ড ঢাকা আবাহনীর সানডে চিজোবা ২০ গোল করেছেন। তবে স্থানীয়রা একেবারে পিছিয়ে ছিল তা কিন্তু বলা যাবে না। কারণ ঢাকা আবাহনীর নাবীব নেওয়াজ জীবন করেছেন ১৭টি গোল। যা স্থানীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোল। আরেক স্থানীয় ফরোয়ার্ড বসুন্ধরা কিংসের মতিন মিয়া করেছেন ১১টি গোল। যা তার ক্লাবের বিশ্বকপার ড্যানিয়েল কলিন্ড্রেসের সমান। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আগামী মৌসুমে বিদেশি সংখ্যা ৪ জন থেকে বাড়িয়ে ৫ জন করার চিন্তা-ভাবনা করছেন। প্রফেশনাল ফুটবল লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদীর কথায় ক্লাবগুলোর চাহিদা, এএফসি কাপে এশিয়ান কোটা সবদিক বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। মাঠে তো পূর্বের মতো তিন বিদেশিই খেলবে। তাই বিদেশি সংখ্যা বাড়লেও তার কোনো কুপ্রভাব মাঠে পড়বে না বলে বিশ্বাস বাফুফের। বিদেশি বাড়ানোর বিরোধিতা না করলেও স্থানীয়দের সুযোগ দেয়ার পক্ষে বাংলাদেশের ফুটবলাররা। সদ্য শিরোপা জেতা বসুন্ধরা কিংসের অন্যতম মিডফিল্ডার মাসুক মিয়া জনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, 'এটা সত্যি যে বিদেশি ফুটবলারের সংখ্যা কমালেই আমরা দেশি ফুটবলাররা বেশি খেলার সুযোগ পাব। তাতে জাতীয় দল আরও ভালো হবে বলে আমি মনে করি। বিদেশি আনলে কলিন্ড্রেসের মতো ভালো মানের বিদেশি আনা উচিত। যাদের সঙ্গে খেললে আমরা তাদের কাছ থেকে কিছু শিখতে পারব।' মতিন মিয়াও ভালো মানের বিদেশি থাকলে কোনো সমস্যা দেখছেন না। তবে তিনি মনে করেন নিজেদের প্রমাণের জন্য অবশ্যই তাদের সুযোগ দিতে হবে। মতিন মিয়া বলেন, 'বিদেশি ফুটবলারদের ভিড়ে কোচ আমার উপর আস্থা রেখেছেন। যতটুকু পেরেছি সে কারণেই। কোচ আমাকে সুযোগ না দিলে তো আর নিজেকে প্রমাণ করা সম্ভব হতো না।' স্থানীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতা ঢাকা আবাহনীর নাবীব নেওয়াজ জীবন। তার মতেও কোচ সুযোগ না দিলে হয়তো সানডে-সাইঘানীদের ভিড়ে হারিয়েই যেতেন তিনি। এ মৌসুমে ১৭টি গোল করলেও আগামী মৌসুমে অন্তত ২০টি গোল করার লক্ষ্য তার। সম্ভব হলে ঘরোয়া ফুটবলে সর্বোচ্চ ২১ গোল করা এনামুল হকের রেকর্ডটি আগামী মৌসুমে ভাঙবেন বলে জানালেন আবাহনীর এই তরুণ ফরোয়ার্ড।