উয়েফা সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
চেলসিকে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় শিরোপা নিয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন লিভারপুলের খেলোয়াড়রা -ওয়েবসাইট
ক্রীড়া ডেস্ক লিভারপুল-চেলসি ম্যাচ মানেই যেন উত্তেজনা। একটা সময় নিয়মিত চ্যাম্পিয়নস লিগের ফিক্সচার হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই দুই দলের ম্যাচ। বহুদিন পর এবার সুপার কাপে দেখা তাদের। সেই ম্যাচ মনে করিয়ে দিয়েছে, পুরনো সেইদিনের কথা। উয়েফা সুপার কাপের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। টাইব্রেকারে চেলসির বিপক্ষে ৫-৪ গোলে জয় পেয়ে চতুর্থবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা। ২০০৫ সালে ইস্তাম্বুলে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে পরে সুপার কাপ জিতেছিল লিভারপুল। ইংলিশ কোনো দলের সেটাই ছিল শেষবার সুপার কাপ জয়। ১৪ বছর পর আবার সেই কীর্তি গড়ল লিভারপুল। চতুর্থ শিরোপা জিতে লিভারপুল এখন মিলান ও বার্সেলোনার পর সুপার কাপের দ্বিতীয় সফল দল। প্রথমে থাকা দুইদলই এই ম্যাচ জিতেছে ৫ বার করে। আর চেলসির ভাগ্য বদলালো না এবারও। ছয় বছর আগে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে সুপার কাপে টাইব্রেকারে হেরেছিল তারা। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সুপার কাপ থেকে খালি হাতে ফিরল বস্নুজরা। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণ আর প্রতি আক্রমণে খেলা জমে ওঠে। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে অলিভিয়ার জিরুর গোলে এগিয়ে যায় চেলসি। যুক্তরাষ্ট্রের ফরোয়ার্ড ক্রিস্তিয়ান পুলিসিচের ডিফেন্স চেরা পাস পেয়ে এগিয়ে ছোট ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড। এরপর গোল শোধে মরিয়া লিভারপুল আর ব্যবধান বাড়াতে চায় চেলসি। ম্যাচের ৪০ মিনিটে লিভারপুলের জালে বল পাঠিয়ে ব্যবধান বাড়ায় পুলিসিচ। কিন্তু অফ-সাইডের কারণে গোলটি বাতিল করেন নারী রেফারি ফ্রান্সের স্তেফানি ফ্রাপা। ফলে বিরতিতে যাওয়ার আগে কোনো দলই গোলের দেখা পায়নি। বিরতি থেকে ফিরে গতি বাড়ায় লিভারপুল। ৪৮ মিনিটে সাদিওমানের গোলের মধ্য দিয়ে সমতায় ফেরে ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা। ফাবিনিয়োর উঁচু করে ডি-বক্সে বাড়ানো বল আগুয়ান গোলরক্ষক কেপা আরিসাবালাগা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার আগ মুহূর্তে টোকা দিয়ে ডান পাশে থাকা সাদিওমানেকে দেন ফিরমিনো। ফাঁকা পোস্টে বল পাঠাতে ভুল করেননি সাদিওমানে। নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র হওয়ায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়। ৯৫ মিনিটে সেই সাদিওমানের গোলে এগিয়ে যায় লিভারপুল। বাঁ পাশ দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে বাইলাইনের কাছাকাছি থেকে ফিরমিনোর করা কাট ব্যাক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে উঁচু কোনাকুনি শটে আবারও লক্ষ্যভেদ করেন সেনেগালের এই ফরোয়ার্ড। কিন্তু বেশিক্ষণ ব্যবধান ধরে রাখতে পাড়ল না ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা। ছয় মিনিট পর ট্যামি আব্রাহামকে ডি-বক্সে আদ্রিয়ান ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের দল। স্পট কিক থেকে সমতা ফেরান জর্জিনিয়ো। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। আর টাইব্রেকারের পাঁচটি শটেই গোল করে লিভারপুল। টাইব্রেকারে লিভারপুলের হয়ে ফিরমিনো, ফাবিনিহো, অরিগি, আর্নল্ড, সালাহ- সবাই সফল কিক নেন। কেপা অবশ্য দুইবার সেভ করতে করতেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি টাইব্রেকারে। চেলসির হয়ে জর্জিনিয়ো, বার্কলি, মাউন্ট, এমারসনরাই বরং বেশি আত্মবিশ্বাসী কিক নিয়েছিলেন। তবে শেষটায় এসে তরুণ আব্রাহাম মারলেন সোজাসুজি, আদ্রিয়ানও বসে পড়ে সেভ করে ঢুকে গেলেন লিভারপুলের বর্ণিল ইতিহাসে। ম্যাচ শেষে অবশ্য দুই ম্যানেজারই তৃপ্তি খুঁজতে পারেন। লিভারপুল তাদের অনুমিত শিরোপাটা পেয়েছে। ক্লপ লিভারপুলকে জেতালেন দ্বিতীয় শিরোপা। আর চেলসি প্রায় পুরোটা সময়ই তাড়া করেছেন লিভারপুলকে। লিগে এই দুই দলের বেশ বড়সড় পার্থক্য আঁচ করা যাচ্ছিল। তবে চেলসি যে প্রেরণা সঙ্গী করে নিয়ে ফিরছে, সেটা কাজে লাগাতে পারলে একেবারে হতাশায় মৌসুম শেষ হওয়ার কথা নয় তাদের।