কন্ডিশনিং ক্যাম্পে নেই মাশরাফি!

মাশরাফি বলছে তার ব্যথা কমেছে। তার সঙ্গে বেশ কিছুদিন হলো দেখা হচ্ছে না। পরীক্ষা করে না দেখতে পারলে আসল অবস্থা বোঝা যাচ্ছে না। সরাসরি অবস্থা দেখলে বোঝা যাবে -বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের পর হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে শ্রীলংকা সফরে যাওয়া হয়নি। এবার দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের কন্ডিশনিং ক্যাম্পে মাশরাফির থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে -ফাইল ফটো
বিশ্বকাপের আগে ভাবা হয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজা হয়তো এই বৃহত্তর আসরে ঘোষণা দিয়ে বসতে পারেন অবসরের। তা যখন হয়নি, তখন ক্রিকেটামোদীরা মনে করছেন দেশের মাটিতে খুব শিগগিরই অবসরে যাবেন সফল অধিনায়ক মাশরাফি। কিন্তু এ ব্যাপারে তিনি কিছুই খোলাসা করছেন না। বিশ্বকাপের পর প্রথম দেশের মাটিতে সিরিজ হবে সেপ্টেম্বরে তাই মাশরাফির ব্যাপারটি নিয়ে বিসিবিও রয়েছে সিদ্ধান্তহীনতায়। আগামী রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া টাইগারদের কন্ডিশনিং ক্যাম্পে থাকছেন না মাশরাফি বিন মর্তুজা। মাশরাফির এই ক্যাম্পে যোগ না দেয়ার খবরে ফের তার অবসর নিয়ে আলোচনার বিষয়টি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। দেশের ক্রিকেটকে অনেক সাফল্যেও ভাসানো মাশরাফি বিন মর্তুজাকে বর্ণাঢ্য আয়োজন করে বিদায় জানাতে চায় বিসিবি। এ সম্পর্কে ক্রিকেট বিষয়ক অনলাইন গণমাধ্যম ক্রিকবাজকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, মাশরাফির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তারাও। বিশ্বকাপের পর তার খেলার কথা ছিল শ্রীলংকায় তিন ওয়ানডে সিরিজে। কিন্তু চোটের কারণে লঙ্কায় যেতে পারেননি মাশরাফি। চলতি বছর এফটিপি বাংলাদেশের আর কোনো ওয়ানডে নেই। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ২০২০ সালের জুনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পরবর্তী ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। তবে আগামী সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। ওই টেস্টের পরই আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে শুরু হবে ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজ। টেস্ট আর ত্রিদেশীয় সিরিজের সূচিও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এই সিরিজে যেহেতু ওয়ানডে নেই, মাশরাফির খেলারও কথা না। কিন্তু মাশরাফি যদি অবসর নেয়ার কথা ভাবেন তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি ওয়ানডে আয়োজন করতে চায় বিসিবি। বিসিবির সূত্রে জানা গেছে, এই ওয়ানডে আয়োজনের জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হবে বাংলাদেশকে। কারণ জিম্বাবুয়ের সদস্যপদ আইসিসির সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করায় যাবতীয় খরচ বহন করতে হবে বিসিবিকে। এতে সব মিলে প্রায় ৬০ লাখ টাকা খরচ করতে হবে তাদের। মাশরাফির মতো ক্রিকেটারের জন্য এই অর্থ খরচ করতেও প্রস্তুত বোর্ড। কিন্তু তার আগে নিশ্চিত হতে হবে, বিদায়ী মঞ্চে উঠতে চান কি না মাশরাফি! মাশরাফির কি চাওয়া তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। বিশ্বকাপ শেষে কয়েক দফা অধিনায়কের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করেছিল গণমাধ্যমও। কিন্তু প্রতিবারই শোনা যায় একই বক্তব্য, 'এখনো কিছু ভাবিনি। চিন্তা করে জানাব।' তাই বিসিবি সভাপতি পাপনও অপেক্ষায় মাশরাফির সিদ্ধান্তের, 'এখনো ওর সঙ্গে কথা হয়নি। আমরা জানি না, কি চলছে তার মনে। সে ঈদের ছুটি কাটিয়ে আসুক, তারপর আমরা তার সঙ্গে বসব, তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানার জন্য।' ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসেছিলেন নাজমুল হাসান পাপন। সেখানেও তিনি একই কথা বলেছেন। এদিকে সেপ্টেম্বরের সিরিজ সামনে রেখে বাংলাদেশ দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু হচ্ছে রোববার। ক্যাম্পে থাকছেন না মাশরাফি মর্তুজা। জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। তিনি বলেন, 'কন্ডিশনিং ক্যাম্পে থাকছে না মাশরাফি। সে টেস্ট ও টি২০ খেলে না। তা সত্ত্বেও ক্যাম্পে তার থাকার কথা ছিল। তবে আমরা এখন ওকে রাখছি না। সামনে যদি ওয়ানডে সিরিজ থাকত, তাহলে তাকে ক্যাম্পে ডাকা হতো। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হওয়ার সম্ভাবনা কম।' ৩৫ জনকে নিয়ে ক্যাম্প চলবে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত। বর্তমানে ক্রিকেট থেকে অনেকটাই দূরে রয়েছেন মাশরাফি। ঢাকায় তেমন একটা থাকছেন না তিনি এখন। মাশরাফি নিজের নির্বাচনী এলাকা নড়াইলে রয়েছেন। সেখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশ্বকাপের সময় থেকে হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরিতে ভুগছেন মাশরাফি। চোট নিয়েই বিশ্বকাপ শেষ করে শ্রীলংকা সফরেও যেতে পারেননি সেই হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরির কারণেই। এবার তার কন্ডিশনিং ক্যাম্পে থাকাটা আরও বেশি দরকার ছিল বলে জানাচ্ছেন ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা। যেহেতু তিনি মাত্রই হ্যামস্ট্রিং চোট থেকে সেরে উঠেছেন। মাশরাফির ইনজুরির অবস্থা জানতে চাইলে বিসিবির চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, 'মাশরাফি বলছে তার ব্যথা কমেছে। তার সঙ্গে বেশ কিছুদিন হলো দেখা হচ্ছে না। পরীক্ষা করে না দেখতে পারলে আসল অবস্থা বোঝা যাচ্ছে না। সরাসরি অবস্থা দেখলে বোঝা যাবে।' নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির এক পরিচালক জানিয়েছেন, 'অবসর না নিয়ে যদি মাশরাফি খেলা চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে তাকে ফিটনেস পরীক্ষা দিতে হবে। অন্যদের মতো ফিটনেস পরীক্ষায় পাস করতে হবে। ফিটনেস সন্তোষজনক না হলে দলে নেয়া হবে না।'