দুই মাস সময় চেয়েছেন মাশরাফি

মাশরাফি মনে করেন যে এত তাড়াতাড়ি অবসরের সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন নেই। যেহেতু আগামী মে মাসের আগে আমাদের কোনো ওয়ানডে নেই। সেজন্য এখনই না হলে তার জন্য সুবিধা হয়। দুই মাস পরে হলে তিনি (মাশরাফি) সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আমরা তার কথায় রাজি হয়েছি। তাই আমরা অপেক্ষায় থাকতেই পারি -নাজমুল হাসান পাপন

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার মাশরাফি বিন মর্তুজার সঙ্গে অবসরের বিষয়ে আলোচনা করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। পরে সংবাদ সম্মেলনে পাপন জানান, দুই মাস সময় চেয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক -ফাইল ফটো
মাশরাফি বিন মর্তুজার ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার বিষয়টা নিয়ে আর লুকোছাপা করছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি। এই বিষয়ে শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবির কার্যালয়ে এসে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে গেছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে আরও দুই মাস সময় চেয়েছেন। তখনই জানাবেন নিজের অবসর নেয়ার তারিখ। বিসিবি সভাপতির কোচ ঘোষণা করার কথা ছিল দুপুর একটায়। এরমধ্যেই দেখা গেল বিসিবি কার্যালয়ে ঢুকছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। খানিক পরেই আবার বেরিয়ে এলেন, মুখটা যেন খানিকটা গম্ভীর। পরে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিশ্চিত করলেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে খেলে এখনই অবসর নিচ্ছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। মাশরাফির অবসর-ইসু্য বিশ্বকাপের সময় থেকেই ঘুরঘুর করছে টাইগার দলের আশপাশে। বয়স হয়ে গেছে, এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, ফর্মও পড়তির দিকে, তাই যত অবসর কেন্দ্রিক আলোচনা-গুঞ্জন। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন শনিবার মিরপুরে সাংবাদিকদের জানান, 'মাশরাফির সঙ্গে আমার অনেকক্ষণ কথা হয়েছে। সে এসেছিল দুই কারণে। আমরা তাকে এখানে ডেকেছিলাম। নতুন কোচ আমরা নিচ্ছি, সে বিষয়েও তার সঙ্গে আলোচনা করেছি। তা ছাড়া তার অবসরের বিষয়টিও প্রসঙ্গ ছিল। মাশরাফি জানিয়েছে, সে মাস দুয়েকের পরে তার সিদ্ধান্ত আমাদের জানাবে। এখন সময়ই সবকিছু বলে দেবে। সম্মানের সহিত আমরা ক্রিকেটারদের বিদায় দিতে চাই। তবে কখন বিদায় নিলে নিজেদের জন্য ভালো হবে, তা খেলোয়াড়দেরই ঠিক করতে হবে।' সামনের মাসে তিনজাতি টি২০ সিরিজ খেলতে জিম্বাবুয়ে আসছে বাংলাদেশ সফরে। সেই সফরে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে একটি ওয়ানডে ম্যাচের আয়োজন করে বিসিবি মাশরাফি বিন মর্তুজাকে বর্ণাঢ্য বিদায় জানানোর প্রাথমিক একটা পরিকল্পনা করেছিল। তবে আপাতত সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে বিসিবি। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের প্রতিশ্রম্নতি অনুযায়ী দেশের মাটিতে স্মরণীয়ভাবে বিদায় দেয়া হবে মাশরাফিকে। সেই পরিকল্পনা এখনো অটুট আছে বলে জানালেন বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। তিনি জানালেন, 'মাশরাফির কাছে জানতে চেয়েছি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি ম্যাচ আয়োজন করা যায় কি না। তিনি (মাশরাফি) মনে করেন যে এত তাড়াতাড়ি অবসরের সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন নেই। যেহেতু আগামী মে মাসের আগে আমাদের কোনো ওয়ানডে নেই। সেজন্য এখনই না হলে তার জন্য সুবিধা হয়। দুই মাস পরে হলে তিনি (মাশরাফি) সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আমরা তার কথায় রাজি হয়েছি। তাই আমরা অপেক্ষায় থাকতেই পারি।' লম্বা সময় ধরে ক্রিকেট খেলে যাওয়া অনেক ক্রিকেটারের ভাগ্যেই মাঠ থেকে বিদায় নেয়ার সৌভাগ্য হয়নি। মাশরাফির অন্তত যাতে সেই সৌভাগ্য হয়, সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে বিসিবি। আগামী বছরের মে'তে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। অ্যাওয়ে সিরিজ হওয়ায় সেই সিরিজে অবসর নেয়ার সুযোগ নেই মাশরাফির। তবে আগামী ডিসেম্বরে আইরিশদেরকে ঘরের মাঠে আতিথ্য দেবে বাংলাদেশ। আগে সম্ভব না হলে হোমে হতে যাওয়া এই সিরিজেই বিদায় নিতে হবে মাশরাফিকে! ক্যারিয়ারের অন্তিমে পৌঁছে যাওয়ায় কয়েকমাস থেকেই অবসর নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক। গুঞ্জন ছিল বিশ্বকাপের পরপরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়ে দেবেন তিনি। তবে মাশরাফি এই ব্যাপারে কখনোই স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। বিশ্বকাপের পরই শ্রীলংকায় ওয়ানডে সিরিজ খেলতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু চোটের কারণে যেতে পারেননি। চলতি বছরে আর ওয়ানডে না থাকায় এই বছর যে মাশরাফি অবসর নিচ্ছেন না তা অনেকটাই পরিষ্কার। ২০০৯ সালের পর থেকে সাদা পোশাকে মাঠে নামা হয়নি মাশরাফির। আন্তর্জাতিক টি২০কেও বিদায় জানিয়েছেন ২০১৭ সালের এপ্রিলে। ওয়ানডে থেকে অবসর না নিলেও বর্তমানে ক্রিকেট থেকে অনেকটা দূরেই রয়েছেন মাশরাফি। ঢাকায় তেমন একটা থাকছেন না এখন। নড়াইলে নিজের নির্বাচনী এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।