তামিমের অনুপস্থিতিতে অন্যদের সুযোগ

তামিম অনেক বড় মানের খেলোয়াড়। ওর জায়গা পূরণ করাটা কঠিন। এখন একটা সুযোগ, যারা বাকিরা আছে সাদমান, ইমরুল, আমি, সৌম্য। টেস্ট ক্রিকেট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ফরম্যাট। যদি এখানে পারফর্ম করা যায় তাহলে সব ফরম্যাটেই পারফর্ম করা সহজ। আমি বলব, যেহেতু তামিম নেই, তাই যারা থাকবে তাদের জন্য এটা বিরাট সুযোগ -জহুরুল ইসলাম

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজ সামনে রেখে সোমবার থেকে মিরপুরে শুরু হয়েছে কন্ডিশনিং ক্যাম্প। দীর্ঘদিন পর প্রাথমিক দলে ডাক পেয়েছেন জহুরুল ইসলাম অমি। মঙ্গলবার মাহমুদউলস্নাহর সঙ্গে এভাবেই হাসি-মুখে দেখা যায় ডানহাতি এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানকে -বিসিবি
অবসাদ কাটাতে তামিম ইকবাল ছুটি চেয়েছিলেন। তাকে ছুটি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ও ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজে খেলছেন না এ বাঁহাতি ওপেনার। সামনের দুটি সিরিজে তামিম বিশ্রামে থাকায় অন্য ওপেনারদের জন্য সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সুযোগের অপেক্ষায় থাকাদের একজন জহুরুল ইসলাম অমি। ৩৫ সদস্যের প্রাথমিক দলে রাখা হয়েছে ৬ বছর আগে সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানকে। জহুরুলকে বিবেচনা করা হচ্ছে মূলত টেস্ট সিরিজের কথা মাথায় রেখে। যেখানে তার লড়াই করতে হবে ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, সাদমান ইসলাম ও লিটন দাসের সঙ্গে। তামিমের অভাব পূরণ করা কঠিন। তবে এটি যে অন্যদের জন্য বড় একটা সুযোগ সেটি অকপটেই বললেন জহুরুল, 'তামিম অনেক বড় মানের খেলোয়াড়। ওর জায়গা পূরণ করাটা কঠিন। এখন একটা সুযোগ, যারা বাকিরা আছে সাদমান, ইমরুল, আমি, সৌম্য। টেস্ট ক্রিকেট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ফরম্যাট। যদি এখানে পারফর্ম করা যায় তাহলে সব ফরম্যাটেই পারফর্ম করা সহজ। আমি বলব, যেহেতু তামিম নেই, তাই যারা থাকবে তাদের জন্য এটা বিরাট সুযোগ।' বাংলাদেশের জার্সিতে সাতটি টেস্ট, ১৪ ওয়ানডে ও তিনটি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন জহুরুল। ২০১৩ সালের পর আর আসতে পারেননি জাতীয় দলের আঙিনায়। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে তার বয়সী ক্রিকেটাররা আর জাতীয় দলের ফেরার আশাই দেখেন না। জহুরুল ভিন্ন, ক্রিকেট নিয়ে ভাবনা না-কি এখন এসেই হয়েছে আরও পোক্ত। সেই আশায় প্রাথমিক দলে ডাক পেয়ে মূল দলেও ফেরার আশায় তিনি। সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও বিসিবি একাদশের হয়ে ভারত সফরে ভালো ব্যাটিং করায় চলে আসেন নির্বাচকদের ভাবনায়। প্রাথমিক দল থেকে ১৪ সদস্যের মূল স্কোয়াডে নির্বাচকেরা তাকে রাখেন কিনা সেটিই এখন দেখার। ফেরার স্বপ্ন নিয়ে জহরুল ইসলাম বলেন, 'অনেকদিন পর প্রাথমিক দলে জায়গা পেলাম। সব খেলোয়াড়েরই স্বপ্ন জাতীয় দলে খেলবে। তো এই উদ্দেশ্যে প্রত্যেক বছর শুরু করি। এই বছর প্রিমিয়ার লিগে ভালো করার পর আমাকে 'এ' দলে ডাকল। 'এ' দলেও ভালো হয়েছে ব্যাঙ্গালুরুতে। তারপর প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেলাম। এখন সব কিছু আমার চেষ্টা এবং আলস্নাহর সহায়তার উপর। দেখা যাক।' জাতীয় দলে ফেরার পথে জহুরুলের সবচেয়ে বড় বাধা হতে পারত ফিটনেস। কিন্তু ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান জানাচ্ছেন, এই জায়গায় তিনি উন্নতি করেছেন ব্যাপক যার প্রমাণ মিলেছে ফিটনেস টেস্টেও, 'আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি নিজের টেকনিক উন্নতি করার এবং ফিটনেস নিয়ে কাজ করার। বাকিটা নির্বাচকদের উপর। উনাদের যদি দরকার মনে হয় আমাকে নেবে এবং আমি আমার সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করব।' জহুরুলের বয়েসি যারা আছেন, তাদের অনেকেই অল্প বয়সে জাতীয় দলে খেলে ফেলে ঝরেও গেছেন দ্রম্নত। কোনোভাবেই আর কেউ ফিরতে পারছেন না। হয় পারফরম্যান্সের ঘাটতি, না হয় ফিটনেসের অভাব তাদের দূরে রেখেছে জাতীয় দল থেকে। জহুরুল মনে করছেন, বয়স ৩০ হলেই যখন ক্রিকেট বোঝা যায় আরও বেশি করে, তখনই এসব কারণে মূলস্রোত থেকে ছিটকে যান তারা, 'আসলে ক্রিকেটটা ৩০ বছরের পার হলেই বেশি ভালো বোঝা যায়। আমাদের ঘাটতি হলো আমরা ফিটনেস নিয়ে কাজ করি না, এই কারণে আমাদের পারফরম্যান্স ভালো হয় না। পারফরম্যান্স ভালো হলেও এই পর্যায়ে এসে ফিটনেস ধরে রাখতে পারি না। আমি আশা করব ত্রিশের বেশি কেন চলিস্নশ পেরুলেও যেন খেলতে পারে খেলোয়াড়রা- এই ধরনের ফিটনেস যেন থাকে।' গত বছর অক্টোবর-নভেম্বরে টানা দুটি হোম সিরিজে তামিমের অনুপস্থিতিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সুযোগ পেয়েছিলেন ফজলে রাব্বি আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে সাদমান ইসলাম। চমক হয়ে বাংলাদেশ দলে আসা দুই ক্রিকেটারের মধ্যে ফজলে রাব্বি ব্যর্থ হলেও সাদমান নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছেন। তামিমের জায়গায় এবার যদি ৩২ বছর বয়সি জহুরুলকে ফেরানো হয় সেটিও হবে বড় চমক।