আফগানিস্তান সিরিজ সামনে রেখে মিরপুরে শুরু হয়েছে টাইগারদের কন্ডিশনিং ক্যাম্প। শুক্রবার এ ক্যাম্প না থাকলেও বাড়তি প্রস্তুতি হিসেবে অনুশীলন করেছেন তাইজুল ইসলাম। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কাছ থেকে টিপস নিচ্ছেন এ বাঁহাতি স্পিনার -বিসিবি
ক্রীড়া প্রতিবেদক
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ সামনে রেখে ৩৫ সদস্যের প্রাথমিক দল গত কয়েক দিন ধরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করছে। আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তামিম ইকবাল আর বিশ্রামে থাকা সাকিব আল হাসান ছাড়া অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন বাকিরা। শুক্রবার ছিল কন্ডিশনিং ক্যাম্পের ছুটির দিন। আর তাই নিজেকে তৈরির জন্য বাড়তি প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভালো করতে তাই ছুটির দিনেও চলে এলেন মাঠে। তবে সাকিবকে ছাড়া সব কিছুই কঠিন মনে করছেন তাইজুল।
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট শুরু হবে বাংলাদেশে। ঢাকায় ইতোমধ্যে এসে যোগ দিয়েছেন টাইগারদের নতুন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো আর পেস বোলিং কোচ চার্লস ল্যাঙ্গাভেল্ট। আর স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টোরি আসবেন আসন্ন ভারত সফরের পর। আফগানদের বিপক্ষে এক ম্যাচের সেই টেস্ট সিরিজ সামনে রেখে নিজেকে তৈরির জন্য বাড়তি প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্পিনার তাইজুল। ব্যাটিং অনুশীলনেই সময় কাটল তার। মিরপুরে হোম অব ক্রিকেটে তাইজুল কথা বললেন মন খুলে।
টেস্টে দেখা যায় অন্যান্য দেশের লোয়ার অর্ডার থেকেও বেশ রান আসে। তবে বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা তেমন একটা সুবিধা করে উঠতে পারেন না কখনোই। তবে তাদের মধ্যে কিছুটা ব্যতিক্রম তাইজুল। বেশ কিছু টেস্টজুড়েই দারুণ ব্যাটিং করছেন তাইজুল। আর তাই ব্যাটিং নিয়ে বাড়তি কাজ করছেন এই বাঁহাতি স্পিনার, 'আসলে ক্রিকেট একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক খেলা, এখানে টিকে থাকতে হলে বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং নিয়েও কাজ কর?তে হবে। দলের কথা চিন্তা করে আমি আমার বোলিংয়ের সঙ্গে-সঙ্গে ব্যাটিং নিয়েও কাজ করছি।'
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের হয়ে অকল্পনীয় পারফরম্যান্স করেছেন সাকিব। আর বিশ্বকাপের পর ক্লান্তি দূর করতে তাই লম্বা সময় বিশ্রাম নিয়েছেন তিনি। শ্রীলংকা সফরেও যাননি এই অলরাউন্ডার। টি২০, ওয়ানডে কিংবা টেস্ট সব ফরম্যাটেই টাইগারদের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার তিনিই। আর তাই তো দলে না থাকলে তার অভাব পূরণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে বলে মানছেন তাইজুলও, 'সাকিব ভাই না থাকলে সব কাজই কঠিন হয়ে যায়। সাকিব ভাই যখন বল করেন তখন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যান অনেক সাবধান হয়ে যায়, আর তখনই আমাদের মতো বোলারদের উইকেট নেয়ার সুযোগ তৈরি হয়। সাকিব ভাই বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার আর অনেক অভিজ্ঞ। তার উপস্থিতি আমাদের কাজটা সহজ করে দেয়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে সাকিব ভাই যোগ দিচ্ছেন, এটা আমাদের জন্য বেশ ভালো খবর।'
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বোলিং ছিল ছন্নছাড়া, বোলাররা যেন উইকেট নিতেই ভুলে গিয়েছিল। আর তাই তো কথা প্রসঙ্গে উঠে এসেছে টাইগারদের বোলিংয়ের কথাটি। নিজেদের বোলিং সম্পর্কে এই স্পিনার বলেন, 'দেখুন বিশ্বকাপের ঠিক আগের সিরিজটা আমরা জিতেছিলাম এবং ভালো পারফরম্যান্সও করেছিলাম। একটি সিরিজ খারাপ যেতেই পারে, তাই বলে মন খারাপ করে বসে থাকলে তো চলবে না। আমরা আমাদের উন্নতির জন্য অনুশীলন ক্যাম্পে কাজ করছি। আশা করি দ্রম্নতই আমরা ভালো পারফরম্যান্সে ফিরে আসতে পারব।'
ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে টাইগারদের প্রধান অস্ত্র স্পিন। আফগানদের বিপক্ষেই একই ফাঁদ পাতবেন কিনা তা নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে তাইজুল বলেন, 'আমরা আসলে এখনো জানি না কেমন উইকেট হবে। এটার সম্পূর্ণ দেখভাল করবে ম্যানেজমেন্ট। তবে একজন স্পিনার হিসেবে আমি যেকোনো উইকেটের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি।'
আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে একটি উইকেট সংগ্রহ করতে পারলেই বাংলাদেশের সব থেকে দ্রম্নততম বোলার হিসেবে টেস্টে ১০০ উইকেট সংগ্রহ করবেন তাইজুল। তবে আফগানদের মোটেও সহজ প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করছেন না এই স্পিনার। তাইজুল মনে করেন বদলে গেছে আফগানদের ক্রিকেট। এখন আর তারা আগের মতো দুর্বল প্রতিপক্ষ নেই, তাই তো ম্যাচ জিততে হলে নিজদের সেরাটাই দিতে হবে টাইগারদের।
