আফগান চ্যালেঞ্জের অপেক্ষায় মিরাজ

এই ম্যাচে চ্যালেঞ্জের মাত্রাটা আরও বাড়ছে। আমাদের স্পিনারদের ওপরও বাড়তি দায়িত্ব থাকবে, যাতে আমরা ম্যাচে প্রভাব ছড়িয়ে খেলতে পারি। দেশের মাটিতে আমরা যাদের সঙ্গেই খেলেছি, আমাদের স্পিনাররা ভালো করেছে। এবারও সেই লক্ষ্যটাই থাকবে।

প্রকাশ | ২৬ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মেহেদী হাসান মিরাজ
ক্রীড়া প্রতিবেদক বাংলাদেশ যখন তাদের প্রথম টেস্ট খেলেছে, তখন আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খান দুধের শিশু; বয়স তার দুই! টেস্ট ক্রিকেট বাংলাদেশের অভিষেক ২০০০ সালে। আর আফগানিস্তান টেস্ট ক্রিকেটে পা রাখল, এই তো সেদিন- গত বছরের ১৪ জুন। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচের অভিজ্ঞতা ১১৪ ম্যাচ। টেস্ট আঙিনায় পদার্পণের পর মাত্র দুটি ম্যাচ খেলা আফগানিস্তান শুক্রবার বাংলাদেশ সফরে আসছে। চট্টগ্রামে সিরিজের একমাত্র টেস্ট শুরু ৫ সেপ্টেম্বর। অভিজ্ঞতা, অর্জন, দক্ষতা- সব বিভাগেই বাংলাদেশের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে আফগানিস্তান। তাই বলে বাংলাদেশ ৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট সিরিজ নিয়ে আয়েশি হাই তুলছে- এমন কিছু নয়। বরং একটু বেশিই সিরিয়াস বাংলাদেশ! দলের অফস্পিনার কাম লেটঅর্ডার ব্যাটসম্যান মেহেদি হাসান মিরাজও সেই কথাই বললেন, 'মানছি যে অভিজ্ঞতার দিক থেকে আমরা আফগানিস্তানের তুলনায় অনেক এগিয়ে। আমরা টেস্ট খেলছি প্রায় ২০ বছর হতে চলছে। আর ওরা মাত্র বছর খানেক আগে থেকে টেস্ট খেলছে। তবে মনে রাখতে হবে ক্রিকেট ম্যাচে সেই দলই জেতে, যারা মাঠের ক্রিকেটে ভালো খেলে। আফগানিস্তানকে হালকাভাবে নেয়ার কিছু নেই। আমরা আমাদের স্কিল নিয়ে কাজ করছি। দক্ষতা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি।র্ যাংকিংয়ে ওরা পিছিয়ে আছে এসব চিন্তা আমরা মাথায় রাখছি না। ভাবছি যে টেস্ট সিরিজে আমাদের প্রভাব বিস্তার করে খেলতে হবে। নিয়ন্ত্রণটা নিজেদের হাতে রাখতে হবে।' চট্টগ্রাম টেস্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের পূর্বশর্ত জানিয়ে দিলেন মিরাজ। এক ম্যাচের এই টেস্ট সিরিজ এবং জিম্বাবুয়েকে নিয়ে তিনজাতি টি২০ টুর্নামেন্টের জন্য বাংলাদেশ দল ঈদের পর থেকে জোরেশোরে কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু করেছে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ের সঙ্গে পস্ন্যানিংয়ের কাজও একত্রিতভাবে সেরে ফেলছে বাংলাদেশ। র্ যাংকিংয়ে পিছিয়ে থাকা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে নামলে উপরে থাকা দলের একটা আশঙ্কা থাকে, আরে পা না আবার পিছলে যায়! তেমন কোনো চাপ কি বাংলাদেশ অনুভব করছে আফগান সিরিজের আগে? এই প্রশ্নের উত্তরে মিরাজের সহজ ব্যাখা, 'আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানেই তো চাপ। সেই চাপ যারা সইতে পেরে নিজেদের পারফরমেন্স দেখাতে পারে- তারাই ম্যাচ জিতে।' দেশের মাটিতে টেস্ট ম্যাচ মানেই তো বাংলাদেশ একাদশে স্পিনারে ঠাসা। কিন্তু প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান বলেই সম্ভবত বাংলাদেশ এবার একটু ভিন্ন চিন্তায়, ভিন্ন পরিকল্পনায়। স্পিন উইকেট তৈরি করলেও উল্টো ফলও হতে পারে! আফগানিস্তানের স্পিনাররাও যে দুর্দান্ত। মিরাজ জানান, 'এই ম্যাচে চ্যালেঞ্জের মাত্রাটা আরও বাড়ছে। এই ম্যাচে আমাদের স্পিনারদের ওপরও বাড়তি দায়িত্ব থাকবে যাতে আমরা ম্যাচে প্রভাব ছড়িয়ে খেলতে পারি। দেশের মাটিতে আমরা যাদের সঙ্গেই খেলেছি, আমাদের স্পিনাররা ভালো করেছে। এবারও সেই লক্ষ্যটাই থাকবে। টেস্ট ক্রিকেটে উইকেট থেকে সহায়তা মিললে বোলারদের জন্য কাজটা কিছুটা সহজ হয়ে যায়। তবে উইকেট যেমনই থাক, টেস্ট ক্রিকেটে একই স্পটে লাইন লেন্থ বজায় রেখে বল করতে হয়। তাহলেই উইকেট শিকারের পরিস্থিতি তৈরি হবে। আমার কাছে তো মনে হয় এই ম্যাচটা আমাদের মাটিতে হচ্ছে, আমরা স্পিনাররা তো অবশ্যই কিছুটা সুবিধা পাব।' লাল বল ও সাদা পোশাকের টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের প্রতিরোধের সুযোগ অবারিত থাকায় প্রতিপক্ষ আফগানদের স্পিন নিয়ে অতটা ভয়ের কারণ দেখছেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার ঝুলি ভারী হওয়ায় আত্মবিশ্বাস প্রতিফলিত হলো টাইগার অলরাউন্ডার কণ্ঠে, 'আমাদের স্পিনারদের অভিজ্ঞতা অনেক। বিশেষ করে সাকিব ভাই প্রায় ১৩-১৪ বছর ক্রিকেট খেলে ফেলেছে, সফল একজন খেলোয়াড়, বিশ্বমানের বোলার ও অলরাউন্ডার। তাইজুল ভাই হয়তো আর একটা উইকেট পেলে টেস্টে একশ উইকেট হয়ে যাবে। আমারও তিন বছর টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই সময়টায় যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, আমি বলব ওদের থেকে আমাদের টেস্ট ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা ভালো।' মিরাজের মূল শক্তির জায়গা বোলিং। অথচ অনুশীলনে আঙুলে চোট পাওয়ায় বল করতে পারছেন না এ অফস্পিনার। সাকিব-তাইজুলদের সঙ্গে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে বল করতে হলে দ্রম্নতই পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠতে হবে তাকে। আগামী বুধবার ঘোষণা করা হতে পারে ১৪ সদস্যের স্কোয়াড। ১৯ টেস্টে ৮৬ উইকেট শিকার করা এ তরুণ স্পিনারকে দলে থাকতে হলে পেতে হবে ফিটনেসের ছাড়পত্রও।