সাকিবের মতে বাংলাদেশ একশতে শূন্য

২০ বছর ধরে ক্রিকেট খেলেও আমরা এখনও শিখছি, এমনটা বলার সুযোগ নেই। তবে আমরা অনেকদিন পর টেস্ট খেলতে নেমেছি। তবে এই জয়টা আফগানিস্তানেরই প্রাপ্য ছিল। আমরা এই ম্যাচটা যত দ্রম্নত সম্ভব ভুলে যেতে চাই। মনোযোগ দিতে চাই আসন্ন টি২০ সিরিজে। - সাকিব আল হাসান

প্রকাশ | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
চট্টগ্রাম টেস্টে শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিও বাঁচাতে পারেনি। টেস্ট ক্রিকেটের নবীন দেশ আফগানিস্তানের কাছে হেরে ভীষণ হতাশ মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল-হাসান - ওয়েবসাইট
ক্রীড়া প্রতিবেদক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান রাখঢাক না করেই বৃষ্টির বদান্যতায় বাঁচতে চেয়েছিলেন। সেই বৃষ্টি কথা রেখে বাংলাদেশকে তো বাঁচিয়েই দিয়েছিল। কিন্তু যে দল আগেই ডুবে মরে আছে, তাদের আর জোর করে বাঁচাতে পারে কে! সারাদিনই বৃষ্টি ঢাল হয়ে জিইয়ে রেখেছিল বাংলাদেশের আশা। কিন্তু তার ফাঁকফোকরে যে ১০৪ বল খেলা হলো, তাতেই টিকতে পারলেন না সাকিবরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে দলের পারফরম্যান্সে ইতিবাচক কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না সাকিব আল হাসান। একশতে বাংলাদেশকে এক নম্বরও দিতে পারছেন না অধিনায়ক। শেষ ৭০ মিনিটের লড়াইয়ে আত্মসমপর্ণের পর নিজের সামর্থ্যের ঘাটতিও দেখছেন সাকিব। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে প্রথম প্রশ্নই হলো, এই টেস্টের পারফরম্যান্সে বাংলাদেশকে একশতে কত দেবেন তিনি। অধিনায়কের উত্তর, 'একশতে শূন্য'। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান স্বীকার করেন, তার দলের আরও পরিশ্রম করা প্রয়োজন। অধিনায়কত্বে অনীহাও প্রকাশ পেয়েছে সাকিব আল হাসানের বক্তব্যে। সাকিব বলেন, 'আমার মনে হয়ে আফগানিস্তানের বোলিংয়ের তুলনায় আমাদের ব্যাটসম্যানরা বেশ দুর্বল ছিল। ভালো করতে হলে, আমাদের আরও অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।' ঘরের মাঠে স্পিন সহায়ক পিচ বানিয়ে উল্টো আফগানিস্তানকে সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ! দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নেয়া রশিদ খানের ম্যাচে ১১ উইকেট। প্রায় ২০ বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেট খেলার পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে হার মেনে নেয়াটা সত্যিই কঠিন। সাকিব কতটা হতাশ, সেটা পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে কথা বলার সময়ই তার চোখেমুখে ফুটে উঠছিল। পুরো ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত ক্রিকেট উপহার দেয়া আফগানদের সমীহ করতে ভুল করেননি সাকিব। জানালেন, এই ম্যাচের দুঃসহ স্মৃতি ভুলে যেতে চায় তার দল। টাইগার দলপতি বলেন, '২০ বছর ধরে ক্রিকেট খেলেও আমরা এখনো শিখছি, এমনটা বলার সুযোগ নেই। তবে আমরা অনেকদিন পর টেস্ট খেলতে নেমেছি। তবে এই জয়টা আফগানিস্তানেরই প্রাপ্য ছিল। আমরা এই ম্যাচটা যত দ্রম্নত সম্ভব ভুলে যেতে চাই। মনোযোগ দিতে চাই আসন্ন টি২০ সিরিজে।' আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজ। বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ছাড়াও এতে অংশ নিচ্ছে জিম্বাবুয়ে। সাকিব বলেন, 'আফগানরা ছোট ফরম্যাটে আরও বেশি শক্তিশালী। সামনের বছর শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ (২০২০ টি২০ বিশ্বকাপ)। তাই আমরা টি২০ ক্রিকেটকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে চাই।' অধিনায়ক সাকিব অন্য রকম। যা বিশ্বাস করেন সেটাই বলেন। যেভাবে নিজের দল চান, সেটা না পেলে প্রতিবাদ করেন। এই চট্টগ্রাম টেস্ট শুরুর আগে সাকিব বলেছিলেন- 'আমি অধিনায়কত্বের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। কিন্তু দলের ভালোর জন্য এখন টেস্ট অধিনায়কত্বও করতে হচ্ছে।' অধিনায়কত্ব ক্রিকেট ক্যারিয়ারের অনেক বড় বিষয় হলো সবার কাছে খুব সুখকর কোনোকিছু না। সেই তালিকাটাও খুব বড় নয়। অধিনায়ক হিসেবে চিন্তা করার চেয়ে নিজের খেলা নিয়ে চিন্তা করতে ভালোবাসেন এমন ক্রিকেটারদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় সাকিব আল হাসান একজন। চট্টগ্রাম টেস্টে বড় ব্যবধানে হারের পর আরেকবার নিজের অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গে সাকিব সেই কথাই বললেন। এই টেস্টের ভুলভ্রান্তি, দলগঠন, খেলোয়াড়দের সামর্থ্য সবকিছু নিয়ে কথাবার্তায় সাকিব যা বোঝালেন তার অর্থ হলো তিনি যা চাচ্ছেন এখনো তা পাননি। আর তাই আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন, 'যদি নেতৃত্ব না দিতে হয় তবে সেটা আমার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে। আমার মনে হয় সেটা আমার ক্রিকেটের জন্যই ভালোই হবে। আর যদি নেতৃত্ব দিতেই হয় তবে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে অনেককিছু নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন আছে।' বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সাফল্যের পর হঠাৎ উল্টো পথে পারফরমেন্সের যাত্রা প্রসঙ্গে সাকিবের উত্তরটা বেশ পরিষ্কার, 'দেখুন বিশ্বকাপে খুব ভালো করার পর আমি কখনোই ভাবিনি যে আকাশে ছিলাম। আবার এই ম্যাচ হারের পর আমি মনে করছি না যে মাটির তলায় চলে গেছি। আমি যেখানে ছিলাম সেখানেই আছি। এটা কে কীভাবে নেবে আর কে কীভাবে চিন্তা করবে সেটা তাদের ব্যাপার। আমার সবসময় একটা চেষ্টাই থাকে যে কীভাবে ভালো করতে পারি। সবসময় যে অবদান রাখতে পারব না, সেটা খুবই স্বাভাবিক। একটা ম্যাচ বাজে যেতেই পারে।'