অধিনায়কত্ব যদি না করতে হয়, তাহলে সেটা সব থেকে ভালো হবে আমার জন্য। আমার কাছে মনে হয় নিজের ক্রিকেটের জন্য ভালো হবে, ব্যক্তিগত দিক থেকে চিন্তা করলে। আর নেতৃত্ব যদি দিতেই হয়, তাহলে অবশ্যই অনেককিছু নিয়ে আলোচনা করার ব্যাপার আছে -সাকিব আল হাসান

সাকিবের নেতৃত্ব নিয়ে ভাববে বিসিবি

সাকিব যদি নিজে অধিনায়কত্ব করতে না চায়, যদি সে উপভোগ না করে তাহলে তো অবশ্যই একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন থাকবে। সাকিব বলেছে, পারফরম্যান্স আরও ভালো হবে যদি ও ক্যাপ্টেনসি না করে। আমরা তো চাই সাকিবের পারফরম্যান্স -খালেদ মাহমুদ সুজন

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সাকিব আল হাসানের অধিনায়কত্ব নিয়ে সংকটময় পরিস্থিতি সমাধানের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন -ফাইল ফটো
ক্রীড়া প্রতিবেদক দলের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ব্যাটে-বলে মেলে ধরার তাগিদে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়ার ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক ও গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি বলেছেন, সাকিব যদি অধিনায়ক থাকতে না চায়, তাহলে ক্রিকেট বোর্ডের এ ব্যাপারে ভাবতেই হবে। তবে এ সংকটময় পরিস্থিতি সমাধানেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন। গুলশানে ঢাকা ডায়নামাইটসের অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সুজন জানান, সাকিব অধিনায়কত্ব করতে না চাইলে তরুণ কাউকে দেয়াটাই হবে এখন যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত। শনিবার খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, 'সাকিব আমাদের সেরা অধিনায়কের একজন। তার ক্রিকেট মেধা নিয়ে কারও প্রশ্ন থাকার কথা না। সাকিব যদি নিজে অধিনায়কত্ব করতে না চায়, যদি সে উপভোগ না করে তাহলে তো অবশ্যই একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন থাকবে। সাকিব যেটা বলেছে আমি শুনেছি, 'পারফরম্যান্স আরও ভালো হবে যদি ও ক্যাপ্টেনসি না করে। আমরা তো চাই সাকিবের পারফরম্যান্স। বিশ্বকাপে আমাদের এই পর্যন্ত আসার পেছনে সাকিবের একারই অবদান। টিকে থাকলেই সাকিব দলকে কিছু দিতে পারে।' তিনি বলেন, 'সাকিব অন দ্য ফিল্ড খুব ভালো অধিনায়ক। তার মাথা যে কারো চেয়ে ভালো। আকারে ইঙ্গিতে অনেকে মাশরাফির চেয়েও ভালো বলেন। কোনো যুক্তিতর্ক ছাড়াই পারফরমার হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সেরা। তার চেয়ে ভালো আছে বলে আমার জানা নেই।' সুজন আরও বলেন, 'আমাদের অধিনায়ক নেই, এই কথাটা আমি বিশ্বাস করি না। কাউকে দিয়ে দেখতে হবে সে থাকে কি না? জাতীয় দলে তো আরও ১১ জন খেলোয়াড় আছেন। আপনি কাউকে জিজ্ঞেস করেন, তিন সংস্করণের জন্যই চেষ্টা করেন। যদি সাকিব করতে না চায়, ও যদি পারফরম্যান্স নিয়ে চিন্তা করতে চায়, নিঃসন্দেহে সেটা বিসিবিকে চিন্তা করতেই হবে।' অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের বিকল্প কে? মুশফিক তো আর ক্যাপ্টেন্সি করতে উৎসাহী নন। তামিমও ফেল করেছে। মাহমুদউলস্নাহর তো দলে থাকাই দায়। তাহলে অধিনায়ক হবেন কে? সুজন কারো নাম উলেস্নখ না করে বলেন, 'সাকিব-মুশফিক যখন অধিনায়ক হয়েছিল তখন তাদের বয়স ছিল কত? ২২-২৪ বছর। এখন ওই বয়সের কাউকে অধিনায়ক করলে ক্ষতি কী? আমার মনে হয় না বাংলাদেশ দলে ক্যাপ্টেন্সিটা খুব বেশি ম্যাটার করে। আমরা এখনও এমন দল হইনি যে অধিনায়কই একা টেনে নিয়ে যাবে। বরং আমাদের দরকার কোয়ালিটি অ্যান্ড গুড পেস্নয়ার।' সাকিব যে এখন আর অধিনায়কত্ব উপভোগ করেন না, সেটিও ভিন্ন ভিন্ন সাক্ষাৎকারে বুঝিয়েছেন বেশ কয়েকবার। কিন্তু এখন দলে সাকিব ছাড়া অধিনায়ক হওয়ার মতো কেউ নেই। যে কারণে তার ইচ্ছা না থাকলেও দলের খাতিরেই করতে হচ্ছে অধিনায়কত্ব। এতে আবার রয়েছে অন্য ভয়- দলের সেরা খেলোয়াড়ের কাছ থেকে সেরা পারফরম্যান্স না পাওয়ার শঙ্কা। যে কারণে আপাতত উভয়-সংকটেই রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। নেতৃত্বে সাকিবের অনীহার ব্যাপারটি সামনে আসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে হারের পর। সংবাদ সম্মেলনে এ অলরাউন্ডার বলেন, 'অধিনায়কত্ব যদি না করতে হয়, তাহলে সেটা সব থেকে ভালো হবে আমার জন্য। আমার কাছে মনে হয় নিজের ক্রিকেটের জন্য ভালো হবে, ব্যক্তিগত দিক থেকে চিন্তা করলে। আর নেতৃত্ব যদি দিতেই হয়, তাহলে অবশ্যই অনেককিছু নিয়ে আলোচনা করার ব্যাপার আছে।' টেস্টের পর ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচেও মাঠে সপ্রতিভ দেখা যায়নি সাকিবকে। খরুচে বোলিং করার পাশাপাশি দলের বিপদে ব্যাটিংয়েও হাল ধরতে পারেননি। অথচ মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে ওয়ানডে বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলেছেন এ অলরাউন্ডার। পার্থক্যটা স্পষ্ট হচ্ছে মাঠেই। টেস্ট ও টি২০ অধিনায়ক অবশ্য এখনো নেতৃত্ব নিয়ে বিসিবির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলাপে যাননি।