আরও একবার স্বপ্নভঙ্গ যুবাদের

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রীড়া প্রতিবেদক ইতিহাস গড়া ম্যাচগুলো বুঝি এমনই হয়। যেখানে দেখেশুনে ব্যাট চালালেই হেসেখেলে ম্যাচ জেতা যায়, সেখানে বাংলাদেশের তরুণরা ধৈর্য হারিয়ে ফেললেন শুরু থেকেই। প্রতিপক্ষ ভারত বলেই বুঝি এমনটা! এশিয়া কাপ থেকে নিধাস ট্রফি, বড়দের ক্রিকেটে ভারত যেন এক জুজুর নাম। টাইগার তরুণদের কাঁধেও যেন চেপে বসল সেই জুজু। যার জেরে তীরে এসে তরী ডুবল তাদের। ১০৭ রানের টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল হেরে গেল ৫ রানে। অথচ এই চাপের মধ্যেও ইতিহাস ডাকছিল বাংলাদেশকে। ৭৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়েও দারুণ এক লড়াইয়ে ছেলেদের ক্রিকেটে দেশকে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ এনে দেয়ার দরজায় পৌঁছে গিয়েছিল টাইগার অনূর্ধ্ব-১৯ দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাছে গিয়ে স্বপ্ন ভাঙল। শ্রীলংকার প্রেমাদাসায় ভারতের চেয়েও আতঙ্কে শুরু হয় বাংলাদেশের। কাকতালীয় হলেও প্রতিপক্ষের সঙ্গে মিল রেখে দলীয় তিন রানে প্রথম উইকেট হারায় যুবারা। কুড়ির ঘর ধরার আগেই উইকেট পতনের হালি পূরণ হয়ে যায়। ৪০ রানে পতন হয় পঞ্চম উইকেটের। ৫৩ রানে ভারত হারিয়েছিল ৫ উইকেট। বাংলাদেশ সেখানে হারায় ৬ উইকেট। প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের একজনও দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। তানজীদ হাসান ফেরেন খাতা খোলার আগে। এরপর তার পথ ধরেন পারভেজ হাসান ইমন (৫), মাহমুদুল হাসান জয় (১), তৌহিদ হৃদয় (০) এবং শাহাদাত হোসেন (৩)। অন্যদের আসা-যাওয়ার মধ্যে একা ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকেন আকবর আলি। সাত রান করে শামীম হোসেন ফিরে গেলে আরও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন অধিনায়ক আলি। চরম বিপদের মধ্যেও মৃতু্যঞ্জয় চৌধুরীর সঙ্গে ২৭ রানে জুটি গড়ে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে থাকেন আকবর। কিন্তু বৃষ্টির বিরতির পরই আউট হয়ে যান তিনি। মূল্যবান ২৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে। অধিনায়ক ফেরার পর ক্রিজে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি মৃতু্যঞ্জয় চৌধুরীও। অযথা বড় শট খেলতে গিয়ে তিনি ফেরেন ২১ রানে। মৃতু্যঞ্জয় ফিরতেই মৃতু্য ঘটে বাংলাদেশের স্বপ্নের। তারপরও আশা জাগিয়েছিলেন রাকিবুল হাসান ও তানজীব হাসান সাকিব। ৬৮ বল মোকাবিলা করে জুটিতে তুলেছিলেন ২৩ রান। অনেক কাছে গিয়েও প্রথমবারের মতো এশিয়ার সেরা হওয়া হয়নি তাদের। স্কোর বোর্ড সেঞ্চুরি অতিক্রম করার পর এক ওভারেই আউট হয়ে যান সাকিব ও শাহীন আলম। মাত্র এক মাস আগেও ভারতের এই দলের কাছে ইংল্যান্ডে ত্রিদেশীয় কাপে জোর লড়াইয়ের পর হার মেনেছিল টাইগার যুবারা। পাঁচ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামান ভারতের স্পিনার অথর্ব অঙ্কোলেকার। তিন উইকেট নেন আকাশ সিং। এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩২.৪ ওভারে ১০৬ রানে অলআউট হয় ভারত। তাদেরকে গুটিয়ে দিতে দারুণ বোলিং করে বাংলাদেশের যুবারা। ফিল্ডিংও ছিল দুর্দান্ত। ইনিংসের শুরুতে ৮ রানের মধ্যে ভারতের ৩ উইকেট তুলে নেয় যুবারা। চতুর্থ উইকেটে ৪৫ রান যোগ করে প্রতিরোধ গড়েন দলটির অধিনায়ক ধ্রম্নব জুরেল ও শাশ্বত রাওয়াত। এই জুটি ভেঙে ফের প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। ভারত ৩১ রানের মধ্যে হারায় ৬ উইকেট। আটে নামা করণ লালের কল্যাণে ভারতের সংগ্রহ পেরিয়ে যায় তিন অঙ্ক। তিনি ৪৩ বলে করেন ৩৭ রান। জুরেলের ব্যাট থেকে আসে ৫৭ বলে ৩৩ রান। রাওয়াত ১৯ রান করেন ২৫ বলে। বাকিরা কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। বাংলাদেশের পক্ষে অফস্পিন অলরাউন্ডার শামিম হোসেন ৮ রানে ও বাঁহাতি পেসার মৃতু্যঞ্জয় ১৮ রানে ৩টি করে উইকেট দখল করেন। তানজিম ও শাহিন আলম ১টি করে উইকেট শিকার করেন। বাকিগুলো রানআউট।