ব্যাটসম্যানদের ঘরের শত্রম্নই বিভীষণ : নিল ম্যাকেঞ্জি

আমার মনে হয় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শত্রম্ন বাংলাদেশেই। কারণ আমরা তাদের মাত্রাতিরিক্ত চাপে রাখি। এর বদলে যদি বিশ্বাস রাখতাম, যেটা সমর্থক ও গণমাধ্যমের কাছ থেকে আসতে পারত। তারা তো মেশিন না, তারা মানুষ। আমরা যদি হারিও তবু আমাদের সমর্থন থাকতে হবে

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রীড়া প্রতিবেদক বেশ কয়েকদিন থেকেই ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের দৈন্যদশা। তরুণরা ভুগছেন ধারাবাহিকতার অভাবে, সিনিয়রদের কেউ কেউ হুট করে ছন্দহীন। টেস্টের মতো তাই সাদা বলের ক্রিকেটেও ব্যাটিং এখন বড় চিন্তার নাম। প্রশ্ন উঠছে ব্যাটসম্যানদের সামর্থ্য নিয়েও। ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জির তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নন। সমর্থক আর গণমাধ্যমের চাপকেই ব্যাটসম্যানদের বড় প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করেন তিনি। ব্যাটিং ব্যর্থতায় আফগানিস্তানের কাছে টেস্ট হেরে আসার পর ত্রিদেশীয় সিরিজে নেমেও বাংলাদেশ পড়ে একই সংকটে। শক্তিতে অনেক পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৪৫ রান তাড়ায় নেমে এক পর্যায়ে ৬০ রানে ৬ উইকেট খুইয়ে বসেছিল বাংলাদেশ। ওই অবস্থা থেকে আফিফ হোসেনের মুন্সিয়ানায় শেষ পর্যন্ত জিতলেও টপ আর মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা আড়ালে পড়েনি। সাদা বলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে ব্যাটসম্যানদের ভুলত্রম্নটি নিয়ে কাজ করেন ম্যাকেঞ্জি। সীমিত ওভারে ব্যাটসম্যানদের রান খরার জবাব তাই তাকে দিতেই হয়। ব্যাটসম্যানদের কেন এই হাল, ধারাবাহিকতার সংকট কি সামর্থ্যের কারণে? ম্যাকেঞ্জি এক্ষেত্রে দায় দিলেন সমর্থক ও গণমাধ্যমের চাপকে, 'আমি বিশ্বাস করি যে মানের প্রতিভা ও তার প্রয়োগ আছে প্রতি ম্যাচেই আমাদের জেতার অবস্থা থাকে। আমার মনে হয় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শত্রম্ন বাংলাদেশেই। কারণ আমরা তাদের মাত্রাতিরিক্ত চাপে রাখি। এর বদলে যদি বিশ্বাস রাখতাম, যেটা সমর্থক ও গণমাধ্যমের কাছ থেকে আসতে পারত। তারা তো মেশিন না, তারা মানুষ। আমরা যদি হারিও তবু আমাদের সমর্থন থাকতে হবে। আমরা হারতে আসি না। বাংলাদেশ ভয়ডরহীন থেকে শতভাগ ইতিবাচক খেলতে আসে।' টপ অর্ডারে মাঝে মাঝে জ্বলে ওঠেন লিটন দাস, সৌম্য সরকার। কিন্তু বড় রানের বিপরীতে তাদের রান খরাই থাকে বেশির ভাগ সময়। ছন্দহীন হয়ে পড়া তামিম ইকবাল ছন্দ পেতে আছেন বিশ্রামে। মাহমুদউলস্নাহর কাছ থেকে আসছে না নিয়মিত অবদান। তাদের সবার হয়েই ব্যাট করলেন ম্যাকেঞ্জি, 'আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক কঠিন। আপনি এখানে সবসময় রান করতে পারবে না। সাকিবকে দেখেন। দুর্দান্ত এক বিশ্বকাপ গেছে ওর। আরও অনেকেই আছে যারা গত ছয় মাসে দারুণ ক্রিকেট খেলেছে। আবার যখন এক-দুই ম্যাচে রান পাচ্ছে না তখন চাপে পড়ছে। আমাদের প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রাখতে হবে। বাংলাদেশে অনেক মেধাবী খেলোয়াড় আছে আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।' 'সৌম্য সরকার আয়ারল্যান্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফাইনালে দারুণ খেলল। আপনারা নিশ্চয়ই টিভিতে দেখেছেন। সে ঝড়ো ফিফটি করেছিল। সে পরিপূর্ণ খেলোয়াড়। তার বিশ্বাসটা দরকার। তার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কথা না। সে বড় বড় সেঞ্চুরি করেছে। মাত্র ছয় মাস আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে ৮০ করল। আয়ারল্যান্ডে দারুণ টু্যর কাটাল। এই খেলোয়াড়দের ওপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে, সমর্থন করতে হবে। আপনি সব সময় সেঞ্চুরি মারতে পারবেন না। লিটন দাস, আপনারা দেখেছেন সে কি করতে পারে। এশিয়া কাপের ফাইনালে ১৪০ রান করল। এটা চার বছর আগে নয়, মাত্র সাত মাস আগের ঘটনা। বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য রান তাড়ায় সে ৯০ করল। কাজেই তারা খেলতে পারে।' সামর্থ্যে সমস্যা নেই, প্রতিভা নিয়েও প্রশ্নের জায়গা নেই। ম্যাকেঞ্জি সংকট দেখছেন কেবল ধারাবাহিকতার। তা নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তার কিছু দেখছেন না তিনি, 'আমাদের বড় ব্যাপার হচ্ছে হাতে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে, কেবল তাদের ধারাবাহিকতা দরকার। তাদের সামর্থ্য নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। যেদিন ওপেনাররা ভালো শুরু করবে সেদিন ওপেনারদের দিন। যেদিন তারা পারবে না সুযোগ সাত বা আট নম্বরের। একদমই শুক্রবার যা হয়েছে। কোচ হিসেবে খুব ভালো একটা দিন ছিল। কিছু নেতিবাচক ব্যাপারের মধ্যে এটা বড় ইতিবাচক ব্যাপার।'