সৌম্যসহ চারজন বাদ, নতুন মুখ তিন

নতুন কোচ আরও কয়েকজন ক্রিকেটারকে দেখতে চেয়েছেন। সেজন্যই স্কোয়াডে এতগুলো বদল করা হয়েছে। বিপস্নবকে লেগ স্পিনার হিসেবেই দলে নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকদিন থেকেই এইচপিতে ওকে নার্সিং করা হচ্ছিল। - প্রধান নির্বাচক

প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সৌম্য সরকারের ব্যাটে রান নেই। ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে করেন মাত্র ৪। রোববার আফগানিস্তানের বিপক্ষে কোনো রান না তুলে ধরেন সাজঘরের পথ। ২০ ওভারের ক্রিকেটের সঙ্গে ঠিক মানিয়েও নিতে পারছেন না এই ব্যাটসম্যান। অফ ফর্মের কারণেই চট্টগ্রামের ম্যাচ থেকে ছিটকে গেলেন এই অলরাউন্ডার -ফাইল ফটো
পরপর দুই ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, সৌম্য সরকাররা রান তুলতে পারছেন না। প্রথম ম্যাচের শেষ দিকে আফিফ হোসেন-মোসাদ্দেক হোসেনরা হাল ধরলেও রোববার আফগানদের বোলিং তান্ডবে চাপা পড়েছেন তারা। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ত্রিদেশীয় সিরিজের চট্টগ্রাম পর্ব। টি২০ দল সোমবার বিকেলে চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। ত্রিদেশীয় সিরিজের পরের তিনটি ম্যাচ বন্দরনগরীতে হবে। ফাইনাল মিরপুরে। ত্রিদেশীয় সিরিজে আফগানিস্তানের কাছে হতাশাজনক হারের পর বাংলাদেশ দলে ব্যাপক অদল বদল করা হয়েছে। বাদ পড়েছেন চারজন। যাদের তিনজনই স্কোয়াডে থেকেও খেলার সুযোগ পাননি। দলে ঢুকেছেন পাঁচজন। এর মধ্যে টি২০তে একেবারেই নতুন মুখ তিনজন। একটি টুর্নামেন্টের মাঝপথে কেন এত বেশি পরিবর্তন, গণমাধ্যমের কাছে কারণ ব্যাখ্যা করেছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হারতে হারতে জেতার পর পরের ম্যাচে বাংলাদেশ পাত্তা পায়নি আফগানিস্তানের কাছে। দলের এমন অবস্থায় এই নিয়ে তৃতীয়বার স্কোয়াডে বদল আনলেন নির্বাচকরা। ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজের পরের দুই ম্যাচের জন্য স্কোয়াড করা হয়েছে ১৫ সদস্যের। বাজে পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়েছেন ওপেনার সৌম্য সরকার। প্রথমবারের মতো টি২০ দলে এসেছেন তরুণ ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। সাইড স্ট্রেনের চোট থাকায় দলে নেই নতুন আসা ইয়াসিন আরাফাত মিশু। হঠাৎ স্কোয়াডে যোগ হওয়া আবু হায়দার রনিও বাদ পড়েছেন ইয়াসিনের মতো ম্যাচ না খেলেই। তাদের জায়গায় দলে এসেছেন দুই অভিজ্ঞ পেসার রুবেল হোসেন ও শফিউল ইসলাম। না খেলেই বাদ পড়েছেন অফস্পিনার মেহেদী হাসানও। নিজেদের তৃতীয় ও চতুর্থ ম্যাচে ব্যাটিং লাইন আপ আরও শক্তিশালী করতে দলে ডাক দেয়া হয়েছে দুই তরুণকে। সদ্যই অনূর্ধ্ব-১৯ পেরিয়ে আসা নাঈম শেখ ও আমিনুল ইসলাম বিপস্নবকে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে জাতীয় দলে। বাম-হাতি ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে অংশ নিয়েছেন। বেশ কয়েকদিন ধরে বিসিবি একাদশ, বাংলাদেশ 'এ' ও ইমার্জিং দলের হয়ে নিয়মিত খেলছেন ২০ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) গেল আসরে ১৬ ম্যাচে ৮০৭ রান করে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি। ঘরোয়া ক্যারিয়ারে ৭টি টি২০তে অংশ নিয়েছেন। রয়েছে ৯০ রান। অন্যদিকে লিস্ট এ ক্যারিয়ারে ৩২ ম্যাচে রান করেছেন ১ হাজার ৫৪১ রান। চারটি শতক ও নয়টি অর্ধশতক রয়েছে। এদিকে চারটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ১৫০ রান করেছেন তিনি। দলে সবচেয়ে বড় চমক আমিনুল ইসলাম বিপস্নব। বয়সভিত্তিক দলে তার পরিচয় ছিল ব্যাটসম্যান। সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বিকেএসপির হয়ে নিয়মিত রান করেই নজর কেড়েছিলেন তিনি। করতেন অনিয়মিত লেগ স্পিন, সেটাই নাকি মনে ধরেছিল এইচপির কোচ সাইমন হেলমটের। ১৯ বছর বয়সী বিকেএসপির টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান আমিনুল ইসলাম বিপস্নব সম্প্রতি বিসিবির সংশ্লিষ্ট দলগুলোতে খেলেছেন। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগব্রেক বোলিং করতে পারেন। আর সেই কারণেই দলে সম্পৃক্ত করা হয়েছে বিপস্নবকে। এমনটাই জানিয়েছে বিসিবি সূত্র। দুটি টি২০ খেলে ৪১ রান করেছেন। এছাড়া ১৯টি লিস্ট 'এ' ক্যারিয়ারে ম্যাচে ৫১৫ রান রয়েছে তার নামের পাশে লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার আমিনুল ইসলাম বিপস্নব। বাংলাদেশ দলের ব্যাপক অদল বদল সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদী নান্নু বলেন, 'নতুন কোচ আরও কয়েকজন ক্রিকেটারকে দেখতে চেয়েছেন। সেজন্যই স্কোয়াডে এতগুলো বদল করা হয়েছে।' মিনহাজুল জানালেন- রনি, মেহেদী, ইয়াসিনদের দলে না থাকার কারণ অবশ্য ভিন্ন। এইচপি দলে থাকায় রাখা হয়নি তাদের, 'কাল তারা এইচপি দলের হয়ে ভারত সফরে যাচ্ছে, তাই তাদের রাখা হয়নি। যেহেতু টি২০ খেলা কাজেই বড় স্কোয়াড করার দরকার নেই।' আমিনুল ইসলাম বিপস্নবকে নেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক, 'ওকে লেগ স্পিনার হিসেবেই দলে নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকদিন থেকেই এইচপিতে ওকে নার্সিং করা হচ্ছিল।' তৃতীয় ও চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, লিটন দাস, আফিফ হোসেন ধ্রম্নব, তাইজুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, শফিউল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাঈম শেখ, আমিনুল ইসলাম বিপস্নব, নাজমুল হোসেন শান্ত।