রশিদকে ভয় পান না মোসাদ্দেকরা

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
কখনো বলেছি, আমরা রশিদ খানকে ভয় পাই! তাকে ভয় পাওয়ার কোনো কিছু নেই। তার ওপর আমরা একটু চড়াও হয়ে খেলার চেষ্টা করেছি। আর যদি পাঁচটা ম্যাচ জেতা থাকে তাও ফাইনাল কিন্তু ফাইনাল। ফাইনালে যেকোনো কিছুই হতে পারে। এদিক থেকে আমরা একটু আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা একটি ম্যাচ বেশি জিতেছি
প্রতিপক্ষ দলে যখন রশিদ খান, তখন তাকে নিয়ে একটা আলাদা ভাবনা থেকেই যায়। বাংলাদেশ দলও এর ব্যতিক্রম নয়। গত কয়েক ম্যাচ ধরে সাকিব-মুশফিকদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন আফগান এই লেগস্পিনার। অবশেষে এলো স্বস্তির এক জয়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি২০তে জয়খরা কাটানোর পর অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন জানালেন, রশিদকে তারা কখনো ভয় পান না। চট্টগ্রাম টেস্টে ১১ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশবধে বড় ভূমিকা রাখেন আফগান অধিনায়ক রশিদ। ত্রিদেশীয় সিরিজের দুই ম্যাচেও বাংলাদেশের বিপক্ষে দুটি করে উইকেট নেন। শনিবারও স্বাগতিকদের ভড়কে দেন দুটি উইকেট নিয়ে। তবে ১৮তম ওভারে সাকিব-মোসাদ্দেক তার বলে করেন ১৮ রান। এতেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছায় স্বাগতিকরা। আর রশিদের ওই ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকান মোসাদ্দেক। একটি করে ছয় ও চার হাঁকান সাকিবও। আর শেষ ৩ ওভারে যখন ২৭ রান দরকার, তখন রশিদের বিপক্ষে ওমন ভয়ডরহীন ক্রিকেট আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে বাংলাদেশকে। তাইতো এমন পুরো দলকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলোর কথায় শোনোলেন মোসাদ্দেক, 'কখনো বলেছি, আমরা রশিদ খানকে ভয় পাই! তাকে ভয় পাওয়ার কোনো কিছু নেই। তার ওপর আমরা একটু চড়াও হয়ে খেলার চেষ্টা করেছি। আর যদি পাঁচটা ম্যাচ জেতা থাকে তাও ফাইনাল কিন্তু ফাইনাল। ফাইনালে যেকোনো কিছুই হতে পারে। এদিক থেকে আমরা একটু আত্মবিশ্বাসী যে, আমরা একটি ম্যাচ বেশি জিতেছি।' ইনিংসের মাঝপথে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট নিয়ে মাঠের বাইরে যেতে হয় রশিদকে। কয়েক ওভার পর ফিরে পরপর দুই ওভারে দুটি উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে শঙ্কায় ফেলে দেন। বেশ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বল করতে হয়েছিল তাকে। তবে এই চোট বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল মানতে নারাজ মোসাদ্দেক, 'এভাবে বলা উচিত নয়। ইনজুরি নিয়ে আগের ওভারেই তো উইকেটে পেয়েছেন রশিদ। আমাদের একটা ওভারে সুযোগ নিতেই হতো। আমরা তার ওই ওভারে সফল হয়েছি।' মঙ্গলবার ফাইনালে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার আগে ৪ উইকেটের এই জয় আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে বাংলাদেশকে। মোসাদ্দেক বলেছেন, 'ফাইনালের আগে এমন একটা ম্যাচ জেতা খুব দরকার ছিল। তবে জিতেছি বলে আকাশে উড়ছি না, আবার হেরে গেলেও মাটিতে পড়ে যেতাম না। ফাইনালে যেকোনো কিছুই হতে পারে। তবে জয় সবসময় আত্মবিশ্বাসী করে তোলে দলকে।' চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই দুই ম্যাচের মতো ফাইনালে খেলতে পারলে সাফল্য আসবে মনে করেন মোসাদ্দেক, 'শেষ দুটি ম্যাচে আমরা ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলেছি। এভাবে ফাইনালেও খেলতে পারলে ট্রফি জেতা কঠিন কিছুই না।' ২০১৪ সালের আগে যখন বাংলাদেশ একের পর এক হারে ক্লান্ত, তখনই দেশে ডেকে আনা হয় জিম্বাবুয়েকে। সেবার ওয়ানডে ও টেস্ট দুই সিরিজেই তাদের হোয়াইটওয়াশ করে আত্মবিশ্বাস মিলে বাংলাদেশের। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে যায় ২০১৫ বিশ্বকাপে। পায় সর্বোচ্চ সাফল্য। এরপর সেই ধারা টিকে ছিল অনেক দিন। মাঝে বিক্ষিপ্তভাবে হারলেও জয় কখনোই অধরা হয়ে ওঠেনি। এর আগেও এমন অনেকবারই হয়েছে। আর শুধু সে ম্যাচেই নয়, পরের ম্যাচে তারা আফগানিস্তানকে হারিয়ে সুবিধা করে দেয় বাংলাদেশকে। জানিয়ে দেয়, টানা জয়ের বিশ্বরেকর্ড যতই করুক, এই দলটি অজেয় কিছু নয়। শুধু মাঠে সেরাটা খেললেই হয়। সঙ্গে আফগানদের আত্মবিশ্বাসে আঘাত ফেলে যায়। আর জিম্বাবুয়ের দেখানো পথে হেঁটেছে বাংলাদেশ। এদিনের শুরুটা খারাপ হলেও গুছিয়ে নিতে খুব একটা সময় নেয়নি তারা। এরপর দারুণ লড়াই করেই জিতেছে দলটি। আর এতে টাইগারদের আত্মবিশ্বাসের পারদ এখন অনেক উঁচুতে।