পরীক্ষায় ব্যর্থ বয়স্ক ক্রিকেটাররা

প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
জাতীয় ক্রিকেট লিগ সামনে রেখে মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরে বিসিবির ট্রেনার তুষার কান্তি হাওলাদারের তত্ত্বাবধানে হয়েছে বিপ টেস্ট। ছবিতে বিপ টেস্টে অংশ নেওয়া ক্রিকেটাররা হলেন সোহরাওয়ার্দী শুভ, নাইম ইসলাম এবং আব্দুর রাজ্জাক (বাঁ দিক থেকে) -ওয়েবসাইট
ফিটনেসের পরীক্ষা দিয়েই এবার জাতীয় লিগে খেলতে হবে ক্রিকেটারদের। ব্যপারটা বড়ই দুশ্চিন্তার ছিল সিনিয়র ক্রিকেটারদের জন্য। বিশেষ করে যারা জাতীয় দল, এইচপি দল কিংবা বয়সভিত্তিক দলগুলোতে নেই অনেকদিন ধরে। এ কারণে গত কদিন ধরে এ নিয়ে চিন্তার শেষ নেই তাদের। মঙ্গলবার প্রথম দিনে ছিল বিপ টেস্ট। তাতে কয়েকজন বয়স্ক ক্রিকেটার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। তবে বেশিরভাগ ক্রিকেটারই টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছেন। গত বছর থেকে বিসিবি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের জন্য ফিটনেসের পরীক্ষা নেয়া শুরু করে। তখন বিপ টেস্টে ৯ পেলেই চলত। দুই ধাপ বাড়িয়ে এবার করা হয়েছে ১১। যেটি জাতীয় দলের জন্য নির্ধারিত মানের সমান। জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) শুরু হচ্ছে ১০ অক্টোবর। তার আগে মঙ্গলবার আটটি বিভাগীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের বিপ টেস্ট নিয়েছে বিসিবি। ফিটনেস পরীক্ষায় বোর্ডের বেঁধে দেয়া লেভেল (১১) ছুঁতে পারেননি ঘরোয়াতে নিয়মিত পারফরমারদের বেশ কয়েকজন। অকৃতকার্যদের তালিকায় রয়েছে বেশকিছু ভারি নাম। আব্দুর রাজ্জাক, তুষার ইমরান, মোহাম্মদ আশরাফুল, নাসির হোসেন, ইলিয়াস সানি, আরাফাত সানি, নাদিফ চৌধুরীর মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা টার্গেট ছুঁতে পারেননি। এনসিএলের দলে বিবেচনায় আসতে তাদের আবারও দিতে হবে পরীক্ষা। নির্ধারিত মান ছুঁতে পারলেই কেবল সুযোগ মিলবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের আসরটিতে খেলার। মঙ্গলবার সকালে সবার আগে পরীক্ষা দেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। পরীক্ষার ফল ছিল ফেল। অর্থাৎ ৯.৬ পয়েন্ট পেয়ে পাস করতে পারেননি তিনি। এ নিয়ে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, 'আমাকে ৯.৬ দিয়েছে। তবে আমি বিশ্বাস করি, আরও সাত-আট দিন ভালোমতো অনুশীলন করলে উন্নতি করা যাবে। আবার চার তারিখে একটা সুযোগ আছে। এই তিন-চার দিন অনুশীলন করলে এবং চেষ্টা করলে হয়তো বা আরও উন্নতি করতে পারব।' আশরাফুল মনে করেন, বিপ টেস্টের পাস মার্ক ১১ এর পরিবর্তে ১০.৫ করলে সবার জন্য সহজ হতো। শুধু আশরাফুল নন, দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা নাসির হোসেনও পাস মার্কস ওঠাতে পারেননি বিপ টেস্টে। ৯.৭ পয়েন্ট পেয়ে তারও অপেক্ষা বাড়ছে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য। পাস করতে পারেননি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকও। তারও মার্কস ৯-এর নিচে। প্রথম দিনে পরীক্ষা দিয়েছেন অনেকেই। তার মধ্যে আবু হায়দার ১১.১, জাহিদুজ্জামান ১২.৯, সৈকত আলী ১১.৪, মার্শাল আইয়ুব ১১.৪, জুনাইদ সিদ্দিকি ১১.২, মিজানুর রহমান ১১.৬, শামসুর রহমান ১১.৩, আল আমিন জুনিয়র ১১.৩, মেহেদি মারুফ ১১.৮, শুভাগত ১১, অপু ১১.১, জুবায়ের লিখন ১১.২, মানিক ১২.৮, মোহাম্মদ শাকিল ১২.৬ ও আরাফাত সানি ১০.৯ এবং নাদিফ চৌধুরী ১০.৪ পয়েন্ট পেয়ে ফেল করেছেন প্রথম দিনের পরীক্ষায়। এক বিপ টেস্টে ফেল করলেই যে জাতীয় লিগ থেকে ছিটকে পড়বেন সেটিও নয়। এরপর আরও পরীক্ষা রয়েছে ফিটনেসের। সেখানে ঠিকঠাক উত্তীর্ণ হলেই তবে খেলতে পারবেন আসন্ন মৌসুমে। বিপ টেস্ট পরীক্ষায় যারা মানদন্ড পূরণ করতে পারেননি তারা আরও কয়েক দফা পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পাবেন- জানিয়েছেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। তিনি জানান, বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই ফিটনেসের ব্যাপারে কঠোর হচ্ছে বোর্ড। তবে পর্যাপ্ত সুযোগ থাকবে নির্দিষ্ট মান ছুঁয়ে দলে ঢোকার, 'গতবার যে স্কোরটা ছিল, এবার তারচেয়ে একটু বেশি। এটা খেলোয়াড়রা সবাই জানত। নতুন কিছু না। আলোচনা একটু বেশি হয়েছে হয়ত, যেহেতু লেভেলটা একটু বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয়- যে যাই বলুক, খেলোয়াড়রা এটি খুব ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। এটা তাদের জন্যই ভালো, সবাই এটা উপলব্ধি করতে পেরেছে। যে কারণে আমি খুবই খুশি। যতদূর দেখলাম এখন পর্যন্ত ঢাকার ফলাফল। ঢাকার বাইরের ফলাফল আমরা এখনো হাতে পাইনি। ঢাকায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৯৬ শতাংশ পাস করে গেছে। যে লক্ষ্যটা (১১) দেয়া হয়েছিল, সেটা পূরণ করতে পেরেছে। আমরা বলেছি যে, যদি কেউ পূরণ করতে না পারে, আমরা দ্বিতীয়-তৃতীয় বা চতুর্থবার নেব। সুযোগটা থাকবে ওই লেভেলে আসার।' হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, 'আমরা একটা স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করার চেষ্টা করছি। কালচার তৈরি করার চেষ্টা করছি। আশা করছি সবাই এটা বুঝতে পারবে। আমার খেলোয়াড়রা বুঝতে পেরেছে তো আমি খুবই খুশি।' 'দরকার হলে ৫ বার পরীক্ষার সুযোগ দেব। গতবারও দিয়েছি। ৪-৫ জন পারেনি লেভেল ছুঁতে। তাদের রাখা হয়নি এবং সময় দেয়া হয়েছিল, বলা হয়েছিল যখনই পারবা পরদিনই টিমে ঢুকে যাবা। গতবার এভাবে ৩-৪ জন ঢুকেও গিয়েছিল। আমরা একটা সিদ্ধান্তে এসেছি যে, ভবিষ্যতের ক্রিকেটের জন্য আমরা একটা ব্র্যান্ড সেট করতে চাই। সেটার প্রথম শর্ত হলো ফিটনেস এবং ফিল্ডিং। এ দুটি সবার আগে।' জানান হাবিবুল।