রোহিতের সেঞ্চুরিতে ভারতের দিন

প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
ব্যাট উঁচিয়ে দর্শক অভিনন্দনের জবাব দিচ্ছেন সেঞ্চুরিয়ান রোহিত শর্মা -ওয়েবসাইট
ভার্নন ফিল্যান্ডার, কাগিসো রাবাদা, কেশভ মহারাজ- দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণের বড় বড় নামগুলো শুধু 'নাম' হয়েই থাকল। বিশাখাপত্তমে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে ভারতের দুই ওপেনারকেই বিপদে ফেলতে পারলেন না তারা। আর তাই ওপেনিংয়ে প্রমোশন পেয়ে চোখ ধাঁধানো এক সেঞ্চুরি তুলে নিলেন রোহিত শর্মা। সঙ্গী মায়াঙ্ক আগারওয়ালও সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে। এই যুগলের ব্যাটে চড়ে বিনা উইকেটে ২০২ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছে ভারত। রোহিত ১১৫ আর আগারওয়াল ৮৪ রানে অপরাজিত আছেন। টেস্ট অভিষেক রাঙিয়েছিলেন দারুণ সেঞ্চুরিতে। সেই ম্যাচের ৬ বছর পর আরেক দফা অভিষেক হলো রোহিত শর্মার। সীমিত ওভারের ক্রিকেটের দারুণ সফল ওপেনার প্রথমবার ওপেন করলেন টেস্টে। দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভারতীয় ব্যাটসম্যান স্মরণীয় করে রাখলেন টেস্ট ওপেনার হিসেবে প্রথম ইনিংসটিও। এমনকি সেঞ্চুরির সুবাস পাচ্ছেন ওপেনিংয়ে রোহিতের সঙ্গী মায়াঙ্ক আগারওয়ালও। দু'জনের সৌজন্যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ভারতের শুরু হলো দারুণ। বিশাখাপত্তমে বুধবার বৃষ্টিতে এক সেশন ভেসে যাওয়ার দিনে স্বাগতিকরা কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলে ফেলেছে ২০২ রান। মিডল অর্ডার হিসেবে এর আগে ২৭টি টেস্ট খেলেছেন রোহিত। প্রথম দুই টেস্টেই সেঞ্চুরি দিয়ে শুরু ক্যারিয়ারে পরে খুব আলো ছড়াতে পারেননি। বিশেষ করে বিদেশের মাটিতে রেকর্ড ছিল ভীষণ অনুজ্জ্বল। হারান টেস্ট দলে জায়গা। ভারতের টেস্ট ওপেনারের সঙ্কটে এবার সুযোগ পেলেন ক্যারিয়ার পুনরুজ্জীবনের। ওয়ানডে ওপেনারকে টেস্টে একই ভূমিকায় নামানোর বাজি ধরল ভারত। শুরুতেই মিলল সাফল্যের ইঙ্গিত। দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্দশার শুরু টস হার দিয়ে। টস জিতে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি যখন এগিয়ে যাচ্ছেন টিভি ধারাভাষ্যকারের সঙ্গে কথা বলতে, প্রোটিয়া দলপতি ফাফ ডু পেস্নসিস তখন মলিন চেহারায় তাকালেন নিজ ড্রেসং রুমের দিকে। সম্ভাব্য পরিণতিও যেন ফুটে উঠল তার চেহারাতেই। প্রথম ওভারে মায়াঙ্কের বাউন্ডারিতে শুরু করে ভারত। ওপেনার হিসেবে নিজের দ্বিতীয় বলেই রোহিত বল পাঠান বাউন্ডারিতে। দু'জনের কাউকেই আর থামাতে পারেনি প্রোটিয়া বোলাররা। নতুন বলে কাগিসো রাবাদা ও ভার্নন ফিল্যান্ডারের বোলিংয়ে ছিল না খুব একটা ধার। স্পিন আক্রমণে বাঁহাতি কেশভ মহারাজের সঙ্গে ছিলেন অফ স্পিনার ডেন পিট ও অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার সেনুরান মুথসামি। কিন্তু খুব একটা প্রভাব তারা রাখতে পারেননি। রোহিত ফিফটি স্পর্শ করেন লাঞ্চের আগেই। পাঁচ চারের সঙ্গে দুটি ছক্কা তখনই মেরেছেন। চলতে থাকে স্ট্রোকের জোয়ার। চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ১৫৪ বলে। চা-বিরতির একটু আগে আলোকস্বল্পতায় বন্ধ হয় খেলা। পরে বৃষ্টিতে আর খেলা শুরুই হতে পারেনি। ১২ চার ও ৫ ছক্কায় ১৭৪ বলে রোহিত অপরাজিত তখন ১১৫ রানে। আরেক পাশে মায়াঙ্ক খেলেন প্রথাগত টেস্ট ওপেনারের মতোই। ১১ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত তিনি ১৮৩ বলে ৮৪ রান করে। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পেসার উইকেট থেকে পাননি খুব একটা সহায়তা। ঘরোয়া ক্রিকেটে অসাধারণ ধারাবাহিকতা দেখিয়ে তিন বছর পর টেস্টে ফিরে অফ স্পিনার পিট ছিলেন খরচে। কেবল বাঁহাতি স্পিনার মহারাজ কিছুটা ভাবিয়েছেন ভারতের দুই ওপেনারকে। তবে প্রথম দিনটিই বুঝিয়ে দিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার অপেক্ষায় কঠিন এক সফর। সংক্ষিপ্ত স্কোর ভারত প্রথম ইনিংস: ৫৯.১ ওভারে ২০২/০ ( মায়াঙ্ক ৮৪*, রোহিত ১১৫*; ফিল্যান্ডার ১১.১-২-৩৪-০, রাবাদা ১৩-৫-৩৫-০, মহারাজ ২৩-৪-৬৬-০, পিট ৭-১-৪৩-০, মুথুসামি ৫-০-২৩-০)।