টেস্ট সিরিজ

প্রোটিয়াদের সহজেই হারাল ভারত

প্রকাশ | ০৭ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের একের পর এক উইকেট উপড়ে ফেলায় স্ট্যাম্প নিয়ে উচ্ছ্বসিত ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি -ওয়েবসাইট
ক্রীড়া ডেস্ক পুরো তিনটে সেশনও লাগল না। আড়াই সেশনেই গুটিয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। আসলে জয়ের মঞ্চটা আগেই গড়ে রেখেছিলেন ব্যাটসম্যানরা। বাকি কাজটা সারলেন বোলাররা। রবীন্দ্র জাদেজা ও মোহাম্মদ শামির দারুণ বোলিংয়ে প্রথম টেস্টে প্রেটিয়াদেরকে উড়িয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে (১-০) তে এগিয়ে গেল ভারত। রোববার বিশাখাপত্তম টেস্টের পঞ্চম দিনে ২০৩ রানে জিতেছে বিরাট কোহলির দল। ৩৯৫ রান তাড়ায় ম্যাচের শেষ দিনের দ্বিতীয় সেশনে ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় অতিথিরা। ৫টি উইকেট নেন শামি। আর ৪টি নেন জাদেজা। জিততে ৩৮৪ রান করতে হতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে অথবা ম্যাচ বাঁচাতে কাটিয়ে দিতে হতো পুরো দিন। নূ্যনতম লড়াইও করতে পারেনি তারা। যদিও তাদের হাতে ছিল ৯ উইকেট। শেষ দিনে এতবড় লক্ষ্য তাড়া করে জেতা খুবই কঠিন, দিন পার করে ড্র আদায় করে নেওয়াটাও তার চেয়ে কম কিছু নয়। কঠিন কাজের কোনোটাই করতে পারেনি প্রোটিয়ারা। মোহাম্মদ শামি আর রবীন্দ্র জাদেজার দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন দলটির তারকা ব্যাটসম্যানরা। তাইতো কাজে আসেনি লোয়ার অর্ডারের লড়াইও। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারত চলছে দুর্দান্ত গতিতে। টানা তৃতীয় টেস্ট জিতলো বিরাট কোহলির দল। অবশ্য এই টেস্ট জয়ে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং ধসের মূল নায়ক ছিলেন পেসার মোহাম্মদ শামিই। আগের দিন মাত্র ৪ রানে প্রথম উইকেট হারানো প্রোটিয়ারা পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনেই ছিটকে যায় ম্যাচ থেকে। বিশেষ করে লাঞ্চের আগেই ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ফাফ ডু পেস্নসিসের দল। পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে দলটির টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার। নবম উইকেটে ড্যান পিটের সঙ্গে ৯১ ও শেষ উইকেটে কাগিসো রাবাদার সঙ্গে ৩০ রানের জুটি গড়ে হারের ব্যবধানই শুধু কমাতে পেরেছেন মুসুসামি। পিট করেন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৫৬ রান। ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন মুসুসামি। পঞ্চম দিনের শুরুর সাফল্য এনে দেন স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ১৯ রানে থিউনিস ডি ব্রম্নইনকে বোল্ড করেন। অশ্বিন একটি উইকেট নিয়েই টেস্টের দ্রম্নততম ৩৫০ উইকেট শিকারে মুত্তিয়া মুরালি ধরনের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন। শ্রীলংকান কিংবদন্তিরও একই রকম মাইলফলক ছুঁতে লেগেছে ৬৬টি টেস্ট। এর পরের তিন ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফিরিয়ে প্রোটিয়াদের পুরোপুরি কোণঠাসা করে দেন পেসার মোহাম্ম সামি। টেম্বা বাভুমা, ফাফ ডু পেস্নসিস ও কুইন্টন ডি কককে ফেরান বোল্ড করে! এদের মধ্যে বাভুমা ও প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ডি কক রানের খাতা খুলতেই পারেননি। ওপেনার মার্করাম তখনও ক্রিজে ছিলেন থিতু হওয়ার আশায়। কিন্তু তাকে ব্যক্তিগত ৩৯ রানে ফিরতি বলে ক্যাচ তুলে বিদায় দেন রবীন্দ্র জাদেজা। পরে জাদেজা আরও ?দুই উইকেট তুলে নিলে একটা সময় জয়টা মাত্র সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভারতের। প্রোটিয়াদের তখন স্কোর ছিল ৮ উইকেটে ৭০! কিন্তু সেনুরান মুথুসামি ও ডেন পিটের ৯১ রানের জুটি ভারতের জয়টাকে বিলম্বিত করেছে আরও। পিটকে অবশেষে ৫৬ রানে বোল্ড করে এই জুটি ভেঙেছেন শামি। আর শেষ উইকেটে রাবাদা জুটি গড়ার চেষ্টা করলে তাকে ১৮ রানে গস্নাভসবন্দি করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৯১ রানে গুটিয়ে দিয়েছেন ভারতীয় এই পেসার। মুথুসামি ৪৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৫ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন শামি। বাঁহাতি স্পিনার জাদেজা নিয়েছেন ৪টি। দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকানোর সুবাদে ম্যাচসেরা হয়েছেন রোহিত শর্মা। সংক্ষিপ্ত স্কোর ভারত প্রথম ইনিংস: ৫০২/৭ (ডিক্লেয়ার) দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ৪৩১ ভারত দ্বিতীয় ইনিংস: ৩২৩/৪ (ডিক্লেয়ার) দক্ষিণণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংস: ৬৩.৫ ওভারে ১৯১ (মার্করাম ৩৯, এলগার ২, ডি ব্রম্নইন ১০, বাভুমা ০, দু পেস্নসিস ১৩, ডি কক ০, মুসুসামি ৪৯*, ফিল্যান্ডার ০, মহারাজ ০, পিট ৫৬, রাবাদা ১৮; অশ্বিন ১/৪৪, জাদেজা ৪/৮৭ শামি ৫/৩৫, ইশান্ত ০/১৮, রোহিত ০/৩) ফল: ভারত ২০৩ রানে জয়ী ম্যান অব দা ম্যাচ: রোহিত শর্মা