বল হাতে ঝলক মাহমুদউলস্নাহর

ফেরার ম্যাচে তামিমের বাজে শুরু

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ২১তম জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) চট্টগ্রাম বিভাগের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করেন ঢাকা মেট্রোর মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। প্রথমদিনেই ঢাকার এই স্পিন অলরাউন্ডার তুলে নিয়েছেন ৩টি উইকেট -বিসিবি
বিশ্বকাপে ছন্দহীন থাকার পর শ্রীলংকা সফরেও রান পাননি তামিম ইকবাল। এরপর চলে যান লম্বা বিশ্রামে। খেলেননি আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট আর ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজ। ক্রিকেট থেকে নিজেকে পুরোপুরি দূরে সরিয়ে চাঙা হয়েই ফেরার লড়াইয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু জাতীয় লিগ দিয়ে মাঠে ফেরা তামিম ইকবালের শুরুটা ভালো হয়নি। ২২ গজে ১৩২ মিনিট কাটালেও স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না তিনি। ঢাকা মেট্রোর বোলাররা বোতলবন্দি করে রাখেন 'অতি সাবধানি' তামিমকে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে নেমে চট্টগ্রামের তামিম ধুঁকে ধুঁকে ১০৫ বলে ৩০ রান করে উইকেট ছুড়ে দিয়েছেন। চার মেরেছেন ৩টি। মিরপুরে জাতীয় লিগের শুরুর দিন আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিলেন তামিম ইকবাল। তবে তামিমদের কাবু করে বল হাতে ঝলক দেখিয়েছেন ঢাকা মেট্রোর মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। তবে দিনের খেলার বড় একটা অংশ ভাসিয়ে নিয়েছে বৃষ্টি। চার ম্যাচের দুটিতে টসই হয়নি, বাকি দুটি মিলে ১৮০ ওভারের জায়গায় খেলা হয়েছে ১০২ ওভার। বৃষ্টির বাগড়ায় খেলোয়াড়দের অপেক্ষা করেই কাটাতে হয়েছে জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডের প্রথম দিনে। রাজশাহী, খুলনায় বৃষ্টি ভাসিয়ে নিল প্রথম দিন। রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল সিলেট ও বরিশাল বিভাগ। কিন্তু বৃষ্টির কারণে মাঠ ভেজা থাকায় ওই ভেনু্যতে টসই হতে পারেনি। একই অবস্থায় খুলনায়। সেখানে প্রথম স্তরের ম্যাচে স্বাগতিক খুলনার প্রতিপক্ষ ছিল রংপুর বিভাগ। কিন্তু বৃষ্টি টস হতে দেয়নি সে ম্যাচেও। ফতুলস্নার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ঢাকা বিভাগ ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী বিভাগের ম্যাচে সারাদিনে খেলা হয়েছে ৫১.৫ ওভার। টস হেরে ব্যাটিং করতে নামা ঢাকা পড়েছে বিপর্যয়ে। ১৪৩ রান তুলতে ৭ উইকেট হারিয়েছে তারা। রনি তালুকদার করেছেন সর্বোচ্চ ৬৩ রান। রাজশাহীর তাইজুল ইসলাম চারটি ও শফিউল ইসলাম নেন তিনটি করে উইকেট। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে প্রথম ইনিংসে চট্টগ্রাম ৫১ ওভারে ৩ উইকেটে ১৪৭ তোলার পর নামে বৃষ্টি। এরপর আর দিনের খেলা চালানো সম্ভব হয়নি। আগেভাগেই দিন শেষ করেন আম্পায়াররা। ঢাকা মেট্রোর হয়ে সবকটি উইকেটই নিয়েছেন মাহমুদউলস্নাহ। সকালে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রাম বিভাগের অধিনায়ক মুমিনুল হক। মেঘলা আকাশে তরুণ সাদিকুর রহমানকে নিয়ে ব্যাট করতে নামেন তামিম। পরিবেশ ছিল পেসবান্ধব। পেসার শহিদুল ইসলাম বাউন্স আদায় করছিলেন, দুই দিকেই পাচ্ছিলেন মুভমেন্ট। তাকে খেলতে শুরু থেকেই বেশ ধুঁকতে দেখা গেল তামিমকে। তবে আরেক প্রান্তে অভিষিক্ত পেসার মেহরাব হোসেন জোশি ছিলেন সাদামাটা। আলগা বল করেছেন প্রচুর। তবে তার ফায়দাও তুলতে পারেননি তামিমরা। থিতু হতে বেশ কিছুটা সময় নেন তামিম। সঙ্গী সাদিকুর অবশ্য তার আগেই নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছিলেন, পাচ্ছিলেন স্বচ্ছন্দ। ৬৯ বলে ফিফটি করেই অবশ্য দৌড় থামান তিনি। মাহমুদউলস্নাহকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়ে ফেরত যান ৫১ রান করে। ৮৩ বলে ২৩ রান নিয়ে লাঞ্চ থেকে ফিরে তামিমও টেকেননি বেশিক্ষণ। তার সংগ্রামও শেষ হয় মাহমুদউলস্নাহর বলে। মাহমুদউলস্নাহর শট বলে পুল করতে গিয়েছিলেন। টাইমিং গড়বড় করে বল তুলে দেন আকাশে। মাহমুদউলস্নাহ নিজেই নিয়েছেন সহজ ক্যাচ। চারে নেমে মুমিনুল দুই চারে শুরুটা পেয়েছিলেন ভালো। কিন্তু ভালো শুরু শেষ হয়েছে বাজে শটে। টপ এজ হয়ে তার ক্যাচ যায় গালিতে। এরপর আর কোনো উইকেট পড়েনি। তবে খেলাও হয়নি খুব একটা। তিনে নামা পিনাক ঘোষ তাসামুল হককে নিয়ে জুটি জমিয়ে তুলেছিলেন। তাদের থামায় বৃষ্টি। চতুর্থ উইকেটে ৩৪ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিন্ন আছেন তারা। ৭৮ বলে পাঁচ চারে ৩০ রানে অপরাজিত আছেন পিনাক। ৪২ বলে ১৭ রানে ব্যাট করছেন তাসামুল। সবচেয়ে বেশি ১৮ ওভার বল করে ৪০ রানে ৩ উইকেট নেন মাহমুদউলস্নাহ। সংক্ষিপ্ত স্কোর চট্টগ্রাম বিভাগ প্রথম ইনিংস: ৫১ ওভারে ১৪৭/৩ (তামিম ৩০ সাদিকুর ৫১, পিনাক ৩০*, মুমিনুল ১১, তাসামুল ১৭*; শহিদুল, মাহমুদউলস্নাহ ৩/৪০, আরাফাত ০/২৫)।