জাতীয় লিগে স্পিনারদের দাপট

মুশফিকের ব্যাটে রান

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
জাতীয় ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার বিভিন্ন ভেনু্যতে ঝলমলে পারফরমেন্স এসেছে ব্যাটসম্যান ও বোলারদের থেকে। ফতুলস্নায় রাজশাহী বিভাগের হয়ে মুশফিকুর রহিম ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন -বিসিবি
আগেরদিন চট্টগ্রামের তিন উইকেটই নিয়েছিলেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। দ্বিতীয় দিনে তিনি আর খুব বেশি বল করলেন না। সকালে দুই পেসার শহিদুল ইসলাম-মেহরাব জোশি দেখালেন ঝাঁজ। কিন্তু বেলা বাড়ায় সঙ্গে সঙ্গে উইকেট সব নিয়েছেন আরাফাত সানিই। বাঁহাতি স্পিনে চট্টগ্রামকে কাবু করেছেন তিনি। তবে এক প্রান্তে উইকেট পতনের মাঝে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তাসামুল হক। জাতীয় লিগে স্পিনারদের দাপট ফুটে উঠেছে। অন্যদিকে ফতুলস্নায় প্রথম স্তরের ম্যাচে লড়াই চলছে সমান তালে। ঢাকার করা ২৪০ রানের জবাবে ৪ উইকেটে ১৫৫ রান তুলে দিন শেষ করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী। জাতীয় দলের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে এসেছে রান। রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে প্রথম দিন খেলা হয়নি, দ্বিতীয় দিনেও খেলা হয়েছে মাত্র ৩১ ওভার। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে সিলেট। উইকেটের সুবিধা নিয়ে দাপট দেখিয়েছেন পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। সাজঘরে ফেরান সিলেটের দুই ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেন (৬) ও তৌফিক খানকে (১৬)। তিন নম্বরে ব্যাট করতে আসা রাহাতুল ফেরদৌসকে ৪ রানে ফেরান তৌহিদুল ইসলাম। দ্বিতীয় দিন শেষে অপরাজিত আছেন ৩২ রানে জাকির হোসেন ও ৮ রানে অলোক কাপালি। খুলনায় শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বৃষ্টিতে ভেস্তে যায় প্রথম দিনের খেলা। দ্বিতীয় দিনেও খেলা হয়েছে মাত্র ৭২ ওভার। শুক্রবার সকালে টস জিতে রংপুরকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় স্বাগতিকরা। ব্যাটিংয়ে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি রংপুর। দিনশেষে ৫ উইকেটে ১৬৯ রান তুলতে পেরেছে সফরকারীরা। রংপুরের হয়ে নাঈম ইসলাম করেন ৪৮ রান। অপরাজিত আছেন তানভির হায়দার ৪০* ও সোহরাওয়ার্দী শুভ ৩১* রানে। খুলনার হয়ে সমান ২টি করে উইকেট নেন আল-আমিন হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাক। বাকি ১টি উইকেট নেন মইনুল ইসলাম। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টি ছিল না। ফুরফুরে আবহাওয়ায় অবশ্য রান উঠেনি খুব বেশি। আগেরদিনের ১৪৭ রানের সঙ্গে আরও ১৪৩ রান যোগ করে ২৯০ রানে অলআউট হয় চট্টগ্রাম। জবাবে ২ উইকেটে ৬৬ রান তুলে দিন শেষ করেছে ঢাকা মেট্রো। অর্থাৎ সারাদিনে দু'দল মিলে রান উঠেছে কেবল ২০৯। ৩ উইকেটে ১৪৭ রান নিয়ে নেমে দিনের শুরুতেই শহিদুলের বলে পিনাক ঘোষকে হারায় চট্টগ্রাম। এরপর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে নিয়ে সকালের সেশন পার করেন তাসামুল। তাদের চেপে রেখে শহিদুল দেখান পেসার ঝাঁজ। অভিষিক্ত মেহরাব হোসেন জোশিও করেন রান আটকানোর কাজ। ৬৭ রানের জুটির পর ৩০ করা অঙ্কনকে আউট করে উইকেট নেয়া শুরু করেন সানি। অভিষিক্ত মাসুম খানকে নিয়ে এরপর ৫৭ রানের আরেক জুটি পান তাসামুল। ২৭ করা তাসামুলকেও ক্যাচ বানান সানি। এরপর টপাটপ উইকেট পড়তে থাকে। সবগুলোই নেন সানি। সেঞ্চুরির কাছে চলে যাওয়া তাসামুল ছিলেন একমাত্র ভরসা, কিন্তু নব্বুইর ঘরে গিয়েই শেষ হয় তার ইনিংস। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আরাফাত সানির বলে বোল্ড হয়ে যান চট্টগ্রামের এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ব্যাট করতে নেমে ঢাকা মেট্রোর শুরুটাও ভালো হয়নি। অভিষিক্ত নোমান চৌধুরীর বলে সাদমান ইসলাম ক্যাচ দেন গালিতে। অদ্ভুতুড়ে রান আউটে ফেরেন রাকিন আহমেদ। দুই অভিজ্ঞ মার্শাল আইয়ুব আর শামসুর রহমান মিলে অবশ্য দিনের বাকিটা সময় আর কোনো বিপর্যয় বাড়াতে দেননি। ফতুলস্নায় তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে আগের দিনই ঢাকা বিভাগের ৭ উইকেট তুলে নিয়েছিল রাজশাহী। একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে অপরাজিত থাকা তাইবুর পারভেজ টেল এন্ডারদের নিয়ে এদিন যোগ করেন আরও ৯৭ রান। এরপর সুমন খানের পেসে রাজশাহীকে কাঁপিয়ে দেয় ঢাকা। সেই বিপর্যয় সামাল দেন জহুরুল ইসলাম আর মুশফিকুর রহিম। ফতুলস্নায় প্রথম স্তরের ম্যাচে লড়াই চলছে সমান তালে। ঢাকার করা ২৪০ রানের জবাবে ৪ উইকেটে ১৫৫ রান তুলে দিন শেষ করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী। আগের দিনের ৭ উইকেটে ১৪৩ রান নিয়ে নেমে আর ১ রান যোগ করেই নাজমুল ইসলামকে হারায় ঢাকা। কিন্তু তাইবুর ছিলেন অবিচল। সুমন খানকে নিয়ে নবম উইকেটে যোগ করেন আরও ৪৮ রান। জুটিতে সুমনের অবদান ছিল মাত্র ১০। শেষ উইকেটে সালাউদ্দিন শাকিলকে নিয়েও যোগ করেন আরও ৪৮ রান। যাতে সালাউদ্দিন করেন ৫ রান। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি। ১২৩ বলে ৯ চার, ১ ছক্কায় তাইবুর অপরাজিত থেকে যান ৮৮ রানে। ঢাকাকে কম রানে মুড়িয়ে স্বস্তিতে থাকতে পারেনি রাজশাহী। পেসার সুমন খান কাঁপিয়ে দেন রাজশাহীর টপ অর্ডার। ৭ ওভারের প্রথম স্পেলে মাত্র ২ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন ৩ উইকেট। ১৪ রানে ৩ উইকেট খুইয়ে দিশেহারা রাজশাহী পথ পায় জহুরুল-মুশফিকের ব্যাটে। ১২১ রানের জুটিতে দুজনে সামাল দেন পরিস্থিতি। মুশফিক অবশ্য এগুচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকেই। কিন্তু শুভাগত হোমের স্পিনে ৭৫ রানেই শেষ হয় তার ইনিংস। দিনশেষে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকা জহুরুলের সঙ্গী ১১ রানে ব্যাট করা সাব্বির রহমান।