রাব্বি ঝড়ে বিধ্বস্ত সিলেট

মাহমুদউলস্নাহকে ছাপিয়ে নায়ক জাবিদ-শহিদুল

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে এনসিএলের তৃতীয় দিন শনিবার সিলেটের বিপক্ষে আগুনে বোলিং করেন বরিশালের কামরুল ইসলাম রাব্বী। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ার সেরা ২৪ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন বর্তমানে জাতীয় দলের বাইরে থাকা এ পেসার -বিসিবি
জাতীয় ক্রিকেট লিগের তৃতীয় দিনে এসে জ্বলে উঠেছেন বরিশাল দলের কামরুল ইসলাম রাব্বি। তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগারে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৮৬ রানে অলআউট হয়েছে সিলেট। ইনিংস শেষে রাব্বির বোলিং ফিগার ছিল ১৬ ওভারে পাঁচ মেডেনসহ ২৪ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট। রাব্বি দুর্দান্ত বোলিং করলেও ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হয়েছেন মোহাম্মদ আশরাফুল ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। চোটের কারণে আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান মার্শাল আইয়ুব ব্যাট করতেই নামেননি। মিরপুরে শনিবার সকালে শামসুর রহমানের সঙ্গে নেমে রান পাচ্ছিলেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ (৬৩ রান)। ফিফটি পেরিয়ে তিনি দিচ্ছিলেন সেঞ্চুরির ইঙ্গিত। তবে মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদির স্পিনে লিড নেওয়ার সম্ভাবনা ছিল চট্টগ্রামের। কিন্তু অষ্টম উইকেটে দারুণ ব্যাট করে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন ঢাকা মেট্রোর তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান জাবিদ হোসেন আর টেল এন্ডার শহিদুল ইসলাম। সকালে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট নিয়ে প্রথম ইনিংসে ঢাকা বিভাগকে লিড এনে দেন সুমন খান। প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলা তাইবুর রহমান দাঁড়িয়ে গেলেন এবারও। দারুণ সঙ্গ পেলেন রকিবুল হাসানের। তাদের দৃঢ়তায় রাজশাহীকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দেওয়ার পথে রয়েছে ঢাকা বিভাগ। রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে ৩ উইকেটে ৬৮ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল সিলেট। এদিন তারা মাত্র ১৮ রানেই হারায় শেষ ৭ উইকেট! দারুণ বোলিং করে রাব্বি দ্রম্নতই তুলে নেন আরও চার উইকেট। এর মাধ্যমে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন তিনি। একইসঙ্গে সেরা বোলিং ফিগারও এটিই। রাব্বির পাশাপাশি বল হাতে ঝলক দেখিয়েছেন নুরুজ্জামানও। মাত্র তিন ওভার হাত ঘুরিয়ে তিন উইকেট তুলে নেন তিনি। বিপরীতে রান দেননি একটিও। দুজনের বোলিং তোপে নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি সিলেটের ব্যাটসম্যানরা। যার ফলে ৮৬ রানেই থেমে যায় দলটির ইনিংস। সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন জাকির হাসান। এ ছাড়া অলক কাপালি ১৮ ও তৌহিদ খান ১৬ রান করেন। সিলেটকে ৮৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৮ উইকেটে ২৩১ রান সংগ্রহ করেছে বরিশাল। প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হয়েছেন মোহাম্মদ আশরাফুল (৬ রান) ও মোসাদ্দেক হোসেন (৫ রান)। দুজনের কেউই যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। দুজনই অলক কাপালির শিকার। ফিফটি পেরিয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি শাহরিয়ার নাফীস (৬৩) ও ফজলে মাহমুদ রাব্বী (৭০)। ১১৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে সিলেট ব্যাট করতে নেমে ১১ ওভার ব্যাট করে ২৭ রানে ২ উইকেট হারিয়েছে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে চট্টগ্রামের বিপক্ষে লিড নিয়েছে ঢাকা মেট্রো। চট্টগ্রামের ২৯০ রানের জবাবে ৭ উইকেটে ৩৪৯ রান তুলে তৃতীয়দিন শেষ করেছে মেট্রো। নিশ্চিত করেছে বোনাস পয়েন্টও। জাবিদ-শহিদুল অষ্টম উইকেটে ১৪৮ রানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিন্ন আছেন। জাবিদ ব্যাট করছেন ৮১ রানে, পেসার শহিদুল ব্যাট হাতেও নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়ে খেলছেন ৮২ রান নিয়ে। আগের দিনের ২ উইকেটে ৬৬ রান নিয়ে দিন শেষ করে ঢাকা মেট্রো। আগের দিন ব্যাট করার সময় পায়ে ব্যথা পেয়েছিলেন অধিনায়ক মার্শাল। তা আরও বেড়ে যাওয়ায় তিনি আর ব্যাট করতে নামেননি। শামসুরের সঙ্গে নেমে মাহমুদউলস্নাহ কাটিয়ে দেন সকালের প্রথম ঘণ্টা। শামসুর ফিফটি তুলে শিকার হন মাসুম খানের। এরপর পথ হারায় মেট্রোর ইনিংস। লেগ স্পিনার আফ্রিদি পর পর তুলে নেন আল-আমিন আর সৈকত আলিকে। ১৩৪ বলে ৬৩ রান করা মাহমুদউলস্নাহ থামেন অফ স্পিনার রনি চৌধুরীর বলে। ২০১ রানেই ৭ উইকেট খুইয়ে বসে ঢাকা মেট্রোর ইনিংস। এরপর আর কোনো বিপর্যয় নয়। শহিদুলের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন জাবিদ। দ্বিতীয় সেশনের মাঝ থেকে শুরু করে শেষ সেশনের পুরোটাই ব্যাট করেছেন তারা। দলকে এগিয়ে নিয়েছেন ৫৯ রানে। ফতুলস্নার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে এনসিএলের প্রথম স্তরের ম্যাচে তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ২০৬ রান করেছে ঢাকা বিভাগ। প্রথম ইনিংসে ১৯৭ রানে গুটিয়ে যাওয়া রাজশাহীর চেয়ে ২৪৯ রানে এগিয়ে আছে তারা। তাইবুর ৬৭ ও সুমন ১ রানে ব্যাট করছেন। ৬ উইকেটে ১৭৩ রান নিয়ে দিন শুরু করে রাজশাহী। ঢাকার দুই পেসার সালাউদ্দিন শাকিল ও সুমনের তোপে মাত্র ২৪ রান যোগ করেই বাকি চার উইকেট হারায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। রাজশাহী অধিনায়ক ফরহাদ রেজা করেন ৬৪ রান। ৫০ রানে ৫ উইকেট নেন সুমন। ৪৭ রান দিয়ে শাকিলের শিকার ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে সাবধানি শুরু করেন ঢাকার দুই ওপেনার। ২০ রান করে ফেরেন প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা রনি তালুকদার। ৬৫ রান করা রাকিবুলকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন রেজা। পরে ঢাকা অধিনায়ক শুভাগত হোম চৌধুরীকেও ফেরান ডানহাতি এই পেসার। ৮২ রানে ৩ উইকেট নেন তাইজুল।