ভারতের সঙ্গে সমানে পালস্না দিতে চান জামালরা

ফুটবল বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বর্তমান এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন ও ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক কাতারের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর দারুণ উজ্জীবিত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। তাদের পরবর্তী চ্যালেঞ্জের নাম ভারত। কাতারের বিপক্ষে লড়াইয়ের পর আত্মবিশ্বাসের পালে জোর হাওয়া লাগায় প্রতিবেশী দেশটির মাঠ থেকে পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে আশাবাদী বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা। 'ই' গ্রম্নপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আগামী মঙ্গলবার ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়। বাছাইপর্বে এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেলে দুটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের কাছে অ্যাওয়ে ম্যাচে ১-০ গোলে হারের পর হোম ম্যাচে কাতারের কাছে ২-০ গোলে হেরেছে জেমি ডের শিষ্যরা। তবে শক্তিশালী কাতারের বিপক্ষে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে সবার। সামর্থ্য আর যোগ্যতায় বিস্তর ব্যবধানে এগিয়ে থাকা দলটির সঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই করেছে বাংলাদেশ। তাতে খেলোয়াড়দের মনোবল হয়েছে চাঙা, বেড়েছে আত্মবিশ্বাস। তাই ভারতের বিপক্ষে ইতিবাচক ফলের প্রত্যাশায় রয়েছে বাংলাদেশ। নতুন মিশনে মাটিতে পা রেখেই লাল-সবুজ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে তার দলের খেলা হবে সমানে সমান। ভারতকে মোকাবিলা করতে এরইমধ্যে কলকাতায় পা রেখেছে বাংলাদেশ। হোটেলে সাঁতার, হাল্কা অনুশীলন সেরে দিনটি কাটিয়েছেন জামাল-সুফিলরা। শনিবার চলেছে পুরোদমে অনুশীলন। কলকাতায় পৌঁছেই কোচ জেমি ডে ও অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ভারতকে হুশিয়ার করে দিয়েছেন। বাংলাদেশকে যেন দুর্বল প্রতিপক্ষ না ভাবে তারা। কাতারের মতো বড় দলের বিপক্ষে লড়াইয়ের ধকল কাটিয়ে উঠার সুযোগ হচ্ছে না বাংলাদেশের। মাত্র চারদিনের মাথায় আরেকটি বড় ম্যাচের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ দল। স্বল্প এ সময়ে ভারতের কন্ডিশনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ম্যাচ ফিটনেস নিয়ে কাজ করবেন জেমি ডে। কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে নিজেদের সমর্থকদের দিয়ে বাংলাদেশকে স্নায়ু চাপে ফেলার পরিকল্পনা করেছে ভারত। সেটি আগেই জানা গেছে। কাতারের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল যে পারফরম্যান্স করে গেছে তাতে কিছুটা হলেও এই দল সম্পর্কে সতর্ক স্বাগতিকরা। তবে বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি ডের পূর্ণ আস্থা আছে শিষ্যদের উপর। যে কারণে ভারতকে ছোট করে না দেখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি, 'ভারত কিন্তু আমাদের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে। আমাদের দুর্বল ভাবলে ওরা ভুল করবে। ভুটানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। ফিটনেসে আমরাও সমানে সমানে পালস্না দেব।' বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া মনে করেন ঘরের মাঠে ভারতের চাপটাই বেশি। এ প্রসঙ্গে এই দেশসেরা মিডফিল্ডার বলেছেন, 'ঘরের মাঠে চাপটা বেশি সুনীল ছেত্রীদের। কারণ ম্যাচটা ওদের জিততে হবে। প্রতিবেশী দেশের বিপক্ষে আবেগের এই ফুটবল ম্যাচটা হারতে চাই না। কড়া ট্যাকল, ধাক্কাধাক্কি হবেই। আমাদের দলে অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলারের সংখ্যা বেশি। ভারতকে হারানোর জন্য মরিয়া তাগিদ ও তারুণ্যই আমাদের অস্ত্র।' সনি নর্দের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্লাব শেখ জামাল ধানমন্ডির হয়ে অতীতে কলকাতায় আইএফএ শিল্ডে খেলার অভিজ্ঞতা আছে জামালের। যে কারণে কলকাতার দর্শকদের সম্পর্কে ভালোই ধারণা আছে তার। জামালের কথায়, 'কলকাতার দর্শকদের সম্পর্কে আমার ধারণা রয়েছে। মঙ্গলবার মাঠে সুনীলদের বিপক্ষে ফুটবল-দ্বৈরথের পাশাপাশি গ্যালারির বিরুদ্ধ সমর্থনও সামলাতে হবে।' ভারতের অন্যতম তিন ফুটবলারকে বড় বিপদ মানছেন জামাল ভূঁইয়া। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, 'এর আগে দু'বার ভারতের বিপক্ষে খেলেছি। দু'বারই ড্র করেছি। প্রথমবার ১-১ ও দ্বিতীয়বার ২-২ গোলের ড্র হয়েছিল। ওই দুই ম্যাচেই গোল করেছিলেন সুনীল। সে আমাদের কাছে একটা বড়সড় বিপদ। ভারতের পুরো দলটার রিমোট কন্ট্রোলই সুনীলের হাতে। সঙ্গে উদান্তর গতি। গোলে গুরপ্রিত সিংহ সাধু! এই তিন জনের জন্যই ভারত ফেভারিট আমাদের বিপক্ষে।' শনিবার সকালে দলের সঙ্গে অনুশীলনে অংশ নিয়েছেন অভিজ্ঞ মামুনুল। সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, 'লক্ষ্য আমাদের একটাই। ভারতের বিপক্ষে জয় ছাড়া আপাতত কিছুই ভাবছি না। যদি সুযোগ পাই দলের সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে যতটুকু সামর্থ্য করার চেষ্টা করব।' ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর জাতীয় দলের হয়ে ৫৭ ম্যাচে অংশ নিয়েছেন ৩০ বছর বয়সি এই মিডফিল্ডার। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের এই ম্যাচে কলকাতায় খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবেন মামুনুল। যদিও কাতার বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের গেল দুই ম্যাচে বেঞ্চ গরম করতেই দেখা গেছে সাবেক অধিনায়ককে। তবে ভারতের বিপক্ষে ঢাকা আবাহনীর তারকার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতেই পারেন দলের প্রধান কোচ জেমি ডে।